আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
143 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (24 points)
আসসালামু আলাইকুম।

১) একজন ব্যাক্তি একটা কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য বলেছে যে , "হে আল্লাহ তোমার ইজ্জতের কসম। আমি এই কাজ আর কখনো করব না। " কিন্তু  সে একসময় ওই কাজটি করে ফেলে।  তখন কাফফারা হিসেবে ৩ টা রোজার নিয়াত করে। নতুন করে আর কসম খায়নি।
কিছুদিন পর সে ঐ কাজটি আবার করে ফেলে । কিন্তু এবারে কসম করে নি। ওই ১ বারই কসম করেছিল। এখন কি তাকে এই কাজ করার জন্য কাফফারা দিতে হবে? এটি কি তার পূর্বের করা কসমের অন্তর্ভুক্ত হবে?

২) আতর ব্যাবহার করা সুন্নাহ। ভালো মানের আতরের দাম একটু চওড়া। তাই অনেক ব্যাবসায়ী ভাই দাম কমিয়ে দিয়ে আতরের সাথে পানি মিক্স করে বিক্রয় করে থাকেন। ধরা যাক একটি ৬ মি.লি. আতরের মূল্য ১০০০ টাকা । এখন একজন ভাই এই ৬ মিলিকে ৩ মিলি ৩ মিলি করে ভাগ করে প্রত্যেকটায় ৩ মিলি ৩ মিলি করে পানি মিক্স করে দুইটি নতুন তৈরি পানি মিশ্রিত ৬ মিলি এর আতর তৈরি করল। আর প্রতিটির দাম ৫০০ টাকা করে রাখলো। এভাবে বিক্রয় করা কি জায়েয হবে?

৩) এক ভাইয়ের পক্ষ হতেঃ
ফিকহে হানাফী এর ক্ষেত্রে অভিভাবক না থাকলেও ২ জন স্বাক্ষীর সামনে বিয়ের প্রস্তাব দিলে আর মেয়ে সেটা গ্রহণ করলে বিবাহ হয়ে যায়। এখন কেউ যদি একটি মেসেঞ্জারের চ্যাট গ্রুপে কাউকে দুষ্টুমি বা সিরিয়াসলি কোন মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় আর মেয়েটা যদি দুষ্টুমি বা সিরিয়াসলি সেটা মেসেজের মাধ্যমে গ্রহণ করে নেয়, তবে কি বিয়ে হয়ে যাবে? যেহেতু মেসেঞ্জার গ্রুপে আরো অনেক (প্রায় ১০/১৫ জন) মানুষ এই কনভারসেশন এর স্বাক্ষী হয়েছে। বর্তমানে মেসেঞ্জারে ফ্রী মিক্সিং স্কুল/কলেজ গ্রুপে অনেকে এভাবে দুষ্টুমি করে বিয়ের প্রস্তাব দেয় আর গ্রহন করে। এভাবে বিয়ে হতে পারে?

1 Answer

0 votes
by (589,740 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/3101 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
কসম বা শপথ তিন প্রকার যথাঃ-
(اليمين بالله ثلاثة أنواع) غموس، وهو الحلف على إثبات شيء، أو نفيه في الماضي، أو الحال يتعمد الكذب فيه فهذه اليمين يأثم فيها صاحبها، وعليه فيها الاستغفار، والتوبة دون الكفارة.
(১)গুমুস- অতীত বা বর্তমান কালে কোনো জিনিষকে প্রমাণিত করা বা না করার জন্য ইচ্ছা করে মিথ্যা কসম করা।এমন শপথকারী নিজে গোনাহগার হবে।তার উপর তাওবাহ ইস্তেগফার করা অত্যাবশ্যকীয়। তবে তার উপর কাফফারা আসবে না।
ولغو، وهو أن يحلف على أمر في الماضي، أو في الحال، وهو يظن أنه كما قال:، والأمر بخلافه بأن يقول: والله قد فعلت كذا، وهو ما فعل، وهو يظن أنه فعل، أو: ما فعلت كذا، وقد فعل، وهو يظن أنه ما فعل، أو رأى شخصا من بعيد فقال: والله إنه لزيد، وظنه زيدا، وهو عمرو، أو طائرا فقال: والله إنه لغراب، وظنه غرابا، وهو حدأة فهذه اليمين نرجو أن لا يؤاخذ بها صاحبها، واليمين في الماضي إذا كان لا عن قصد لا حكم له في الدنيا، والآخرة عندنا.
(২)লগু-অতীত বা বর্তমান কালে কোনো জিনিষ প্রমাণিত করা বা না করার জন্য শপথ করা।সে ধারণা করছে যে,সে যা বলছে তাই সত্য,অথচ বাস্তবতা হল,মিথ্যা।যেমন কেউ বলল,আল্লাহর কসম,আমি এমনটা করেছি।অথচ বাস্তবতা হল, সে করেনি।কিন্তু সে মনে করে করেছে যে,সে করোছে।এবং তার উল্টো বিষয়ও এমনই।
এবং কেউ দূর থেকে কোনো ব্যক্তিকে দেখে বলল,এতো যায়েদ।অথচ সে আমর।কিন্তু সে ধারণা করেছিল যে,উনি যায়েদ,ইত্যাদি ইত্যাদি।এমন শপথের ব্যাপারে বলা যায় যে,এই শপথের শপথকারীর কোনো প্রকার গোনাহ হবে না।অতীতকালের শপথ যদি কেউ মিথ্যার ইচ্ছায় না করে,তাহলে হানাফি ফিকহ অনুযায়ী দুনিয়া ও আখেরাতে এর কোনো শাস্তির বিধান আরোপিত হবে না।
ومنعقدة، وهو أن يحلف على أمر في المستقبل أن يفعله، أو لا يفعله، وحكمها لزوم الكفارة عند الحنث كذا في الكافي.
(৩)মুনআকিদাহ- ভবিষ্যৎকালে কোনো জিনিষ করা বা না করার শপথ করা।শপথ পূর্ণ না করলে এর কাফফারা অবশ্যই দিতে হবে।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-২/৫২)

আপনার বক্তব্য থেকে বুঝা যাচ্ছে যে,আপনি ভবিষ্যতে কিছু করা বা না করার শপথ নিয়েছিলেন।সুতরাং এখন শপথকে রক্ষা না করলে অবশ্যই আপনাকে কাফফারা দিতে হবে।এ সম্পর্কে  বিস্তারিত জানুন-https://www.ifatwa.info/1808

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১)
একবারই কাফফারা আসবে।দ্বিতীয়বার আর কাফফারা আসবে না।

(২)
না, এভাবে বিক্রি করা জায়েয হবে না।

(৩)
মেসেঞ্জার গ্রুপে বা গ্রুপকলে বিবাহ করলে বিবাহ শুদ্ধ হবে না।কেননা বিবাহ শুদ্ধ হওয়ার জন্য শর্ত হল, বিবাহের মজলিস এক হওয়া।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...