জবাবঃ-
(১)
আশ'আরী এবং মাতুরিদি আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের অন্তর্ভুক্ত।আছারী সম্পর্কে অনেক উলামায়ে কেরাম আহলে হক তথা আহলে সুন্নাতের অন্তর্ভুক্ত মনে করেন।
(২)
আশ'আরি ও মাতুরিদি ফিরকাদ্বয়ের মধ্যে মূলত আক্ষরিক বা শাখা-প্রশাখাগত কিছু মতবেদ রয়েছে।বড় বা মৌলিক কোনো মতবেদ নেই।যেভাবে চার মাযহাবের মধ্যে শাখা-প্রশাখাগত মতপার্থক্য বিদ্যমান রয়েছে।
[ইসলামী বিশ্বকোষ, ইফাবা, ইলমুল কালাম-৫৭]
পার্থক্যর দুয়েকটি দৃষ্টান্ত
মাতুরিদিয়্যা ফিরকা মনে করেন,
আল্লাহ তা'আলা যে সমস্ত ওয়াদা করেছেন, জান্নাত জাহান্নাম সম্পর্কে।এগুলোর বিরোধী কোনো ফয়সালা আল্লাহ কখনো করবেন না।অন্যদিকে আশায়েরা ফিরকা মনে করেন,আল্লাহর জন্য জায়েয রয়েছে,নিজ ওয়াদার খেলাফ কিছু করা।
নজমুল ফারাঈদ-২৯
আল্লাহ কখনো ফে'লে কাবীহ সংগঠিত করবেন না।তথা কামিল ঈমানদারকে আযাব প্রদান,আম্ববিয়ায়ে কেরাম কে আযাব প্রদান,কাফিরকে জান্নাতে প্রবশ করানো, এ সব আল্লাহ কখনো করবেন না।তবে আশায়েরা ফিরকা মনে করে,এ গুলো আল্লাহ জন্য জায়েয রয়েছে।তিনি চাইলে এগুলো করতে পারবেন।(নজমুল ফারাঈদ-৩০)
ইত্যাদি শাখা প্রশাখাগত আরো অনেক অনেক মাস'আলায় তাদের মতপার্থক্য বিদ্যমান রয়েছে।
(৩)যেভাবে কোনো পৃথিবীর কোনো বস্তুকে বিদ্যমান ধরে নেওয়া হয়,তথা শরীরের উপস্থিতির সাথে কোনো কিছুর উপস্থিতিকে গণ্য করা হয়ে থাকে,সে হিসেবে আল্লাহ তা'আলাকে সর্বত্র বিরাজমান মানা ও বিশ্বাস রাখা কখনো কখনো উচিৎ হবে না, জায়েয হবে না।তবে যদি 'আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান' এ কথা অর্থ হয় যে,আল্লাহ বেষ্টনকারী, তথা আল্লাহ ইলম ও কদরত হিসেবে সর্বত্র বিরাজমান তাহলে এমন আকিদা বিশ্বাস রাখা নিন্দনীয় হবে না।
কেননা আল্লাহ তা'আলা বলেন,
هُوَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ يَعْلَمُ مَا يَلِجُ فِي الْأَرْضِ وَمَا يَخْرُجُ مِنْهَا وَمَا يَنزِلُ مِنَ السَّمَاء وَمَا يَعْرُجُ فِيهَا وَهُوَ مَعَكُمْ أَيْنَ مَا كُنتُمْ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ
তিনি নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডল সৃষ্টি করেছেন ছয়দিনে, অতঃপর আরশের উপর সমাসীন হয়েছেন। তিনি জানেন যা ভূমিতে প্রবেশ করে ও যা ভূমি থেকে নির্গত হয় এবং যা আকাশ থেকে বর্ষিত হয় ও যা আকাশে উত্থিত হয়। তিনি তোমাদের সাথে আছেন তোমরা যেখানেই থাক। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা দেখেন।(সূরা হাদীদ-৪)
وَلَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنسَانَ وَنَعْلَمُ مَا تُوَسْوِسُ بِهِ نَفْسُهُ وَنَحْنُ أَقْرَبُ إِلَيْهِ مِنْ حَبْلِ الْوَرِيدِ
আমি মানুষ সৃষ্টি করেছি এবং তার মন নিভৃতে যে কুচিন্তা করে, সে সম্বন্ধেও আমি অবগত আছি। আমি তার গ্রীবাস্থিত ধমনী থেকেও অধিক নিকটবর্তী।(সূরা কাফ-১৬)
إِنَّ اللّهَ لاَ يَخْفَىَ عَلَيْهِ شَيْءٌ فِي الأَرْضِ وَلاَ فِي السَّمَاء
আল্লাহর নিকট আসমান ও যমীনের কোন বিষয়ই গোপন নেই।(আলে ইমরান-৫)
رَبَّنَا إِنَّكَ تَعْلَمُ مَا نُخْفِي وَمَا نُعْلِنُ وَمَا يَخْفَى عَلَى اللّهِ مِن شَيْءٍ فَي الأَرْضِ وَلاَ فِي السَّمَاء
হে আমাদের পালনকর্তা, আপনি তো জানেন আমরা যা কিছু গোপনে করি এবং যা কিছু প্রকাশ্য করি। আল্লাহর কাছে পৃথিবীতে ও আকাশে কোন কিছুই গোপন নয়।(সূরা ইবরাহিম-৩৮)
انما المراد احاطة عظمة ووسعة و علم و قدرة
আল্লাহ বেষ্টনকারী বলতে,আল্লাহ নিজ ইলম, কুদরত,প্রশস্ততা,এবং বড়ত্ব দ্বারা সব কিছুকে বেষ্টনকারী।(আকাঈদে নাসাফি-তাহাবী-২৮১)
আরো বর্ণিত রয়েছে
কিতাবুন-নাওয়াযিল-১/২৫৩