بسم الله
الرحمن الرحمن
জবাব,
ভিডিও গেম অনর্থক খেলার মাঝে শামিল।
যেহেতু এর দ্বারা শারিরিক কোন উপকার নেই। অহেতুক সময় নষ্ট করা, তাই এটি অপছন্দনীয়। কিন্তু বর্তমানের ভিডিও গেমগুলোতে নানা ধরণের
হারাম মিউজিক থাকে।যা সম্পূর্ণই নাজায়েজ। আর এসব মারামারি দৃশ্যগুলো বাচ্চাদের মন মগজে
খুবই খারাপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে থাকে। বাচ্চাদের
প্রতিহিংসা পরায়ন, প্রতিশোধী মনোভাবাপন্ন
বানিয়ে দেয়।
আমাদের ধারণা এসব ভিডিও গেম এবং সিনেমাগুলোর
এ্যাকশন দৃশ্যগুলোর কুপ্রভাবে কম বয়সী বাচ্চাদের দ্বারাও বড় বড় অপরাধমূলক কাজ বৃদ্ধি
পাচ্ছে।তাই এসব অহেতুক ভিডিও গেম থেকে বিরত রাখাই জরুরী।
ইসলাম দুই ধরণের খেলাধুলাকে বৈধ রেখেছে শর্ত সাপেক্ষে। যে দুই ধরণের খেলা জায়েজ-
১-শারিরীক উপকার নিহিত।যেমন দৌড়, ফুটবল ও ক্রিকেট ও হতে পারে।
২-দ্বীনের শত্রুর বিরুদ্ধে প্রশিক্ষণমূলক
খেলা। যেমন তীরন্দাজী, ঘোড় দৌড় ইত্যাদি।
এসব খেলা জায়েজ থাকার জন্য শর্ত দু’টি।
যথা-
১- ফরজ ও ওয়াজিব কোন ইবাদতে বিঘ্ন না
হতে হবে।
২-এর সাথে আর কোন গোনাহের বিষয় মিলিত
না হতে হবে। যেমন জুয়া, বেপর্দা ইত্যাদি।
কম্পিউটার ও মোবাইলে বেশিরভাগ গেমসে
অনেক মন্দ ও গোনাহর বিষয় যুক্ত থাকে। যেমন, ১. প্রাণীর ছবি। ২. মিউজিক, গান, বাজনা ও বাদ্যযন্ত্র। ৩. বেপর্দা নারীদের নগ্ন ও অশ্লীল ছবি। ৪. কাফেরদেরকে সম্মান করা, তাদের নষ্ট সংস্কৃতিকে প্রচার করে মুসলিম শিশু-কিশোর ও যুবসমাজকে
ধ্বংস করা। ৫. কাফেরদের ধর্মীয় শিরকি-কুফুরী বিশ্বাস ও কাফেরদের চিহ্নকে কৌশলে মুসলিমদের
মাঝে প্রচার করা। এছাড়াও আরো বহু মন্দ-বিষয় এসব গেমসে থাকে। সুতরাং এজাতীয় গেম খেলা
জায়েয হবে না। কেননা আল্লাহ তাআলা বলেন,
إِنَّ ٱلَّذِينَ
يُحِبُّونَ أَن تَشِيعَ ٱلۡفَٰحِشَةُ فِي ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَهُمۡ عَذَابٌ
أَلِيمٞ فِي ٱلدُّنۡيَا وَٱلۡأٓخِرَةِۚ وَٱللَّهُ يَعۡلَمُ وَأَنتُمۡ لَا
تَعۡلَمُونَ
‘যারা চায় যে, মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রচার ঘটুক তাদের জন্য দুনিয়া ও আখিরাতে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক
শাস্তি। আর আল্লাহ জানেন, তোমরা জান না।’’ (সূরা
নূর: ১৯)
তবে যে সব গেমসে কোনো জীবজন্তুর ছবি
এবং উল্লেখিত গোনাহর বিষয়গুলো থাকে না। যেমন, বিমান, হুণ্ডা, হেলিকপ্টার, রকেট,
নৌযান, সাবমেরিন, গাড়ী, জাহাজ, চন্দ্র, গ্রহ, নক্ষত্র ইত্যাদি। অথবা জীবজন্তু হলেও খুব ছোট কিংবা অস্পষ্ট
হওয়ার কারণে নাক, কান, চোখ, মুখ ইত্যাদি বুঝা যায়
যায় না,
বরং এগুলোকে কেবল নকশার মতো মনে হয়। সেসব গেমস কিছু শর্ত সাপেক্ষে
বিনোদন লাভের উদ্দেশ্যে খেলা জায়েয আছে। শর্তগুলো হলো-১. তাতে জুয়া থাকতে পারবে না।
২. নামাজ নষ্ট হতে পারবে না। ৩. বান্দার হক নষ্ট হতে পারবে না। ৪. লেখাপড়া ও জরুরি
কাজে কোনো ধরনের বিরূপ প্রভাব পড়তে পারবে না। ৫. খেলায় একেবারে বিভোর হওয়া যাবে না।
এসব শর্তের কোনো একটি শর্ত অনুপস্থিত
থাকলে এজাতীয় গেমসও খেলা জায়েয হবে না। (মাহমুদিয়া : ১৭/৩১৮)
সর্বোপরি যেকোনো গেমস খেলা মানে নিজের
অমূল্য সম্পদ সময়কে অপচয় করা এবং অল্প থেকে ধীরে ধীরে এটা নেশায় পরিণত হওয়া। সুতরাং একজন মুসলিম হিসাবে এ থেকে বিরত থাকা উচিত।
আবু হুরাইরা রাযি. বলেন, রাসূল্লাহ ﷺ বলেছেন, من حُسنِ
إسلام المرءِ تركُهُ ما لا يعنيهএকজন ব্যক্তির ইসলামের
পরিপূর্ণতার একটি লক্ষণ হল যে, তার জন্য জরুরী নয়
এমন কাজ সে ত্যাগ করে। (জামে তিরমিযী : ২২৩৯)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/ বোন!
১.উপরোক্ত শর্তগুলি যদি পাওয়া না যায়
তাহলে ভিডিও গেম খেলা জায়েয হবে না। আর যখন শর্ত পাওয়া যাবে তখন তা জায়েয হলেও উক্ত
কাজকে মাকরূহ বা অহেতুক কাজ বলা হয়েছে,যা পরিহার করা প্রতিটি মুসলমানের জন্য উচিৎ।
২.আপনি যেহেতু আপনার উক্ত কাজের উপর
অনুতপ্ত বিধায় আপনার ঈমান ঠিক আছে । তবে উক্ত কাজের জন্য আল্লাহর কাছে বেশী বেশী তওবা
করতে হবে এবং ইসলাম যেই কাজকে সমর্থন করে না এমন কাজকে কখনই প্রমোট করা যাবে না। এজাতীয়
কাজ থেকে দূরে থাকার অোপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে।