আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
373 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (65 points)
আসসালামু  আলাইকুম, মুহতারাম।

বর্তমান সমাজে যারা ইসলামের ব‍্যাপারে শিথিলতা দেখায় এমনকি প্রকাশ‍্যে হারাম কাজ করে অথবা ফরজ সালাত আদায় করে না তাদের একটা কমন ডাইলোগ - "ইসলাম এত কঠোর না" "আল্লাহ এতটা কঠোর নন"

যারা সর্বক্ষেত্রে ইসলাম মেনে চলার জন‍্য তাদের উপদেশ দেই তাদেরকে 'গোড়া' বলে। এই দুটি কথা যেন মহামারির মত ছড়িয়ে গেছে সমাজে। এই উক্তিগুলোর অসাড়তা যদি কোরআন এবং সুন্নাহর আলোকে খন্ডন করেন তবে পুরো উম্মাহ উপকৃত হয়।

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله 
بسم الله الرحمن الرحيم 
,
বর্তমান সমাজে কিছু মুসলমান এমন রয়েছে,যারা ইসলামের ব্যাপারে সর্বোচ্চ শিথিলতা দেখায়।
 ফরজ সালাত আদায় করে না, এমনকি প্রকাশ্যে হারাম কাজ করে। তাদের একটা কমন ডাইলগ - "ইসলাম এত কঠোর না" "আল্লাহ এতটা কঠোর নন"
,
যে সমস্ত দ্বীনি ভাইয়েরা তাদেরকে সর্বক্ষেত্রে ইসলাম মেনে চলার জন্য উপদেশ দেয়,দাওয়াত দেয়, তাদেরকে তারা 
'গোড়া' বলে আখ্যায়িত করে । 
আসলে তাদের মাঝে ধর্মীয় জ্ঞান অনুপস্থিত থাকার কারনে  তারা এহেন কথা বলছে,অথবা শয়তানী ওয়াসওয়াসার কারনেই তারা এহেন কথা বলছে, তারা এমন কথা বলে বছর বছর ধরে নামাজ রোযা তথা আল্লাহ তায়ালার বিধান মানতেছেননা।
এটা আল্লাহ তায়ালার বিধানের চরম বিরোধিতার শামিল।  

★আল্লাহ তায়ালার আযাব সংক্রান্ত নিম্নে  কিছু আয়াত উল্লেখ করছিঃ 
,
واتقوا الله  واعلموا أن الله شديد العقاب 
‘’আলাহকে ভয় কর। আর জেনে রাখ, নিশ্চয়ই আল্লাহ শাস্তিদানে কঠোর’’ (সুরা বাকারাহ ১৯৬) 

فإن الله شديد العقاب 
‘’নিশ্চয়ই আল্লাহ শাস্তিদানে কঠোর’’ (সুরা বাকারাহ ২১১) 

والله شديد العقاب 
‘’আল্লাহ শাস্তিদানে অত্যন্ত কঠোর’’ (সুরা আলে ইমরান ১১) 

ومن يشاقق الرسول من بعد  ما تبين له الهدي ويتبع غير سبيل المؤمنين نوله ما تولي ونصله  جهنم وسأءت مصيرا
‘’যে ব্যাক্তি সত্য পথ প্রকাশিত হওয়ার পরও রাসুলের বিরোধিতা করে এবং মুমিনদের পথ বাদ দিয়ে ভিন্ন পথ অনুসরন করে, আমি তাকে সে পথেই ফিরাব যে পথে সে ফিরে যায়, আর তাকে জাহান্নামে দগ্ধ করব, কতই না মন্দ সে আবাস’’! (সুরা নিসা ১১৫) 

بشر المنافقين بأن لهم عذابا اليما
‘’মুনাফিকদেরকে সুসংবাদ শুনিয়ে দাও যে, তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে’’ (সুরা নিসা ১৩৮) 

واتقوا الله ان الله شديد العقاب
‘’আলাহকে ভয় কর, আল্লাহ শাস্তিদানে অত্যন্ত কঠোর’’ (সুরা মায়িদাহ ২) 

ومن يشاقق الله  ورسوله فإن الله شديد العقاب
‘’যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের বিরোধিতা করবে (তাদের জেনে রাখা দরকার) আল্লাহ শাস্তি দানে বড়ই কঠোর’’ (সুরা আনফাল ১৩) 

واتقوا فتنة لا تصيبن الذين ظلموا منكم خاصة واعلموا أن الله شديد العقاب 
‘’সতর্ক থাকো সেই ফিতনা হতে, যা বিশেষভাবে তোমাদের যালিম লোকেদের মাঝেই সীমাবদ্ধ হয়ে থাকবে না; আর জেনে রাখ! আল্লাহ শাস্তিদানে খুবই কঠোর’’ (সুরা আনফাল ২৫) 

ومن يهد الله  فما له من مضل أليس الله بعزيز ذي انتقام
‘’আল্লাহ যাকে পথ দেখান, তাকে গুমরাহ করার কেউ নেই; আল্লাহ কি মহাশক্তিধর প্রতিশোধ গ্রহনকারী নন?’’( সুরা যুমার ৩৭) 

ان  بطش ربك لشديد
‘’তোমার প্রতিপালকের পাকড়াও অবশ্যই বড় কঠিন’’ (সুরা বুরুজ ১২) 

ولا تحسبن الله غافلا عما عما يعمل الظالمون إنما يؤخرهم ليوم تشخص فيه الابصار.. مهطعين مقنعي رؤوسهم لايرتد إليهم طرفهم وافئدتهم هواء
‘’যালিমরা যা করছে সে ব্যাপারে তোমরা আল্লাহকে কক্ষনো উদাসীন মনে কর না। তিনি তাদেরকে সেই দিন পর্যন্ত ঢিল দিচ্ছেন, যেদিন ভয়ে আতঙ্কে চক্ষু স্থির হয়ে যাবে। আতঙ্কিত হয়ে মাথা তুলে পালাতে থাকবে, দৃষ্টি তাদের নিজেদের পানে ফিরে আসবে না, আর তাদের অন্তর উড়ে যাবে’’ 
(সুরা ইবরাহিম ৪২-৪৩)
.
উপরের আয়াল গুলি থেকে একথা স্পষ্ট হয় যে আল্লাহ তায়ালা কাফের,মুনাফিক,জালেম সহ অনেকের জন্যই কঠোর  হবেন।
তাদের জন্য রয়েছে আল্লাহ তায়ালার শক্ত এবং কঠিন আযাব। 
,
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত কথা বলা সর্বক্ষেত্রে সঠিক নয়।

তারা যে  দাওয়াত দাতাতের গোড়া বলে আখ্যায়িত করেছেন,এটা  কোনো  ভাবেই ঠিক হয়নি,বরং এটা নির্বুদ্ধিতা আর ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞতার পরিচয় বহন করে।

★তাদেরকে কে বিশ্বাস জোগায়ছে যে তাদের মৃত্যুর আগে তওবা নসীব হবেই,তাদের সব গুনাহ আল্লাহ মাফ করবেই,আল্লাহ কোনো ভাবেই তাদেরকে শাস্তি দিবেননা?    
এটার তো কোনো গ্যারান্টি নেই।
তাদেরকে কে বলেছে যে এই আয়াত গুলির আওতায় তারা কোনোভাবেই পড়বেনা?
কারন আল্লাহর কাছে কে মুনাফিক কে জালিম সেটা তিনিই জানেন,হয়তোবা তারাও সেই লোকদের অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন। 
,
দ্বীনের দাওয়াত দাতাদের সম্পর্কে এহেন কথা (গোড়া) বলার কারনে তাদেরকে আল্লাহর কাছে খালিস দিলে তওবা করতে হবে।
এহেন কথা বললে মহান আল্লাহ তায়ালা অসন্তুষ্ট হোন।
,
★উল্লেখ্য যে আল্লাহ তায়ালা কিছু আয়াতে মুমিনদেরকে শান্তনা দিয়েছেন,নৈরাশ হতে নিষেধ করেছেন।
ان الله لا يغفر  ان يشرك  به ويغفر ما دون ذلك لمن يشاء 
যার সারমর্ম হলো আল্লাহ তায়ালা শিরক ব্যাতিত সব গুনাহ মাফ করে দেন। (সুরা নিসা ১১৬)

لا تقنطوا من رحمة الله ان الله يغفر الذنوب جميعا انه هو الغفور الرحيم 
তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হইয়োনা,নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা সমস্ত গুনাহ মাফ করে দিবেন,,,    (সুরা যুমার ৫৩)
,
এগুলো আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ঐ সমস্ত মুমিনদেরকে আশা দিয়েছেন যারা গুনাহ ছেড়ে খালেছ দিলে তওবা করে দ্বীনের পথে ফিরতে চান।
আল্লাহ তায়ালা যদি তাদের তওবা কবুল করেন,তাহলে তাদের গুনাহ মাফ হবে।
,
তাদের যে তওবা নসিব হবেই,বা সেই তওবা কবুল হবেই,এবং আল্লাহ তায়ালা যে তাদের সমস্ত গুনাহ মাফ করবেই, এমন তো কোনো গ্যারান্টি নেই।   
 
জ্ঞাতব্য বিষয়ঃ  বালেগ হওয়ার পর থেকে নিয়ে যতগুলো নামাজ আদায় করা হয়নি,সবগুলো নামাজ এর  কাজা আদায় করা ওয়াজিব,অন্যথায় আল্লাহ তায়ালার সামনে কঠিন জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হবে,কঠিণ আযাবে গ্রেফতার করা হবে।
তাই এক ওয়াক্ত নামাজও ছেড়ে দেওয়া যাবেনা।   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...