بسم الله الرحمن الرحيم
জবাবঃ-
ইসলাম এসেছে মানুষকে পরিবর্তন করে প্রকৃত সৎকর্মশীল, জ্ঞানবান মানুষ হিসেবে রুপান্তরিত
করতে। সিরাতুল মুস্তাকিমের যে সঠিক পথ সে পথের একদম শেষ প্রান্তে পৌছে দিয়ে আপনাকে
আমাকে সফলকাম করতে। ইসলাম নিজে পরিবর্তন হতে আসেনি দুনিয়াতে, আমাদের পরিবর্তন করতে এসেছে।আল্লাহর দেয়া বিধি-বিধান, নিয়ম-আহকাম নিয়ে হাসি-ঠাট্টা যুগে যুগে ছিলো। সে সময়ের মুনাফিকদের বৈশিষ্ট্য
আল কুরআনের পাতায় পাতায় আল্লাহ যুগের পরে যুগের জন্য সংরক্ষন করে রেখেছেন নিজের
ইসলামের বিধি-বিধান নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করা মুনাফিক, কাফেরদের কাজ। মহান আল্লাহ তা’আলা
ইরশাদ করেন,
وَلَئِن سَأَلْتَهُمْ لَيَقُولُنَّ إِنَّمَا كُنَّا نَخُوضُ
وَنَلْعَبُ ۚ قُلْ أَبِاللَّهِ وَآيَاتِهِ وَرَسُولِهِ كُنتُمْ تَسْتَهْزِئُونَ
“আর যদি তুমি তাদের কাছে
জিজ্ঞেস কর, তবে তারা
বলবে, আমরা তো কথার কথা বলছিলাম এবং কৌতুক করছিলাম। আপনি বলুন,
তোমরা কি আল্লাহর সাথে, তাঁর হুকুম আহকামের সাথে
এবং তাঁর রসূলের সাথে ঠাট্টা করছিলে?” (সূরাহ আত-তাওবাহ,
আয়াত : ৬৫)
এ আয়াতে আল্লাহ তা’আলা, তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ও সাল্লাম, তাঁর দীন ও শরী’আতের বিধি-বিধান নিয়ে ঠাট্টা, বিদ্রূপ
ও উপহাস করাকে ঈমানের পর কাফির হয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছে । এমনকি এ সবের যে কোন একটিকে
নিয়ে হাসি তামাশার ছলে হোক, কথার ছলে হোক কিংবা সিরিয়াস অবস্থায়
হোক যে কোন অবস্থায় এগুলো বা এগুলোর যে কোন একটিকে উপহাস ও বিদ্রূপ করা কুফরী।
এই অধুনিক যুগের ঠাট্টা-বিদ্রুপ ছাড়াও আমাদের প্রিয় নবীজীকে
নিয়েও মুনাফিক, কাফেররা
ঠাট্টা-বিদ্রুপ করতো। মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন,
وَإِذَا رَأَوْكَ إِن يَتَّخِذُونَكَ إِلَّا هُزُوًا أَهَـٰذَا
الَّذِي بَعَثَ اللَّهُ رَسُولًا(৪১)
إِن كَادَ لَيُضِلُّنَا عَنْ آلِهَتِنَا لَوْلَا أَن صَبَرْنَا
عَلَيْهَا ۚ وَسَوْفَ يَعْلَمُونَ حِينَ يَرَوْنَ الْعَذَابَ مَنْ أَضَلُّ
سَبِيلًا(৪২)
“তারা যখন আপনাকে দেখে, তারা আপনাকে ঠাট্টা-বিদ্রূপের
পাত্র ছাড়া অন্য কিছু গণ্য করে না (আর বলেঃ) এ ব্যক্তি কি সেই লোক আল্লাহ যাকে রাসূল
করে পাঠিয়েছেন? সে তো আমাদেরকে আমাদের মা’বুদদের থেকে দূরে সরিয়ে
দিতো, যদি আমরা তাদের প্রতি দৃঢ়চিত্ত না থাকতাম। যখন তারা শাস্তি
দেখবে তখন জানবে যে, পথের ক্ষেত্রে কারা অধিক ভ্রষ্ট ছিল।” (সূরাহ
আল ফুরকান, আয়াত : ৪১-৪২)
আল্লাহ অন্যত্র আমাদের জানান,
“নিশ্চয়ই অপরাধীরা মুমিনদেরকে
নিয়ে হাসাহাসি করতো এবং তাদের পাশ দিয়ে অতিক্রম করার সময় চোখের ইশারায় তাদেরকে উপহাস
ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতো।” (সূরাহ মুতাফফিফীন, আয়াত : ২৯-৩০)
শায়খুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়াহ (রহ.) মহান আল্লাহর বাণী: ‘‘তোমরা
তোমাদের ঈমানের পর কুফরী করে বসেছো’’ — এ প্রসঙ্গে বলেন যে, এ আয়াতাংশ থেকে বুঝা যায় যে,
ঠাট্টা-বিদ্রূপকারী মুনাফিকগণ নিজদের থেকে কোন কুফরী কর্ম করে নাই। বরং
তারা মনে করেছে যে, এরূপ উপহাস করা, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য
করা ও ঠাট্টা-বিদ্রূপ করা কুফরী কাজ নয়। তাই আল্লাহ তা’আলা এ আয়াতের মাধ্যমে সুস্পষ্টভাবে
জানিয়ে দিলেন যে, আল্লাহ তা’আলা এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ও সাল্লামকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করার কারণে ব্যক্তি কাফির হয়ে যায়। সুতরাং
তারা দুর্বল ঈমানের ধারক ছিল। এ ধরনের ঠাট্টা-বিদ্রূপ করা হারাম এটা জানা সত্ত্বেও
তারা তা চর্চা করেছে। কিন্তু বিষয়টি যে কুফরী পর্যন্ত গড়াবে তা তাদের ধারণা ছিল না।
অথচ বিষয়টি কুফরী কর্ম ছিল বলে তাদেরকে কাফির হিসেবে আখ্যায়িত হতে হয়েছে।” (আল ফাতাওয়া,
ইবনু তাইমিয়াহ, ৭/২৭৩)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!
প্রশ্নেল্লিখিত বর্ণনানুপাতে আপনি যেহেতু স্বেচ্ছায় ঠাট্টা করার
উদ্দেশ্যে উক্ত কথাটি বলেননি বিধায় আপনার ঈমানে বড় কোন ক্ষতি হবে না বলে আশা করা যায়
। তথাপি নিজের উক্ত কাজের জন্য আল্লাহর কাছে বেশী বেশী ক্ষমা চাইতে হবে এবং এমন কাজ
পরবর্তিতে যেন না হয় সে বিষয়ে খুব সতর্ক থাকতে হবে। আপনার নামাজ হয়ে গেছে, পুনরায় আদায় করার প্রয়োজন নেই।