আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
2,437 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম শায়েখ, পরশু দিন ইউটিউবে শায়েখ আবু বকর জাকারিয়ার প্রায় দের ঘন্টা আকিদা নিয়ে আলোচনা দেখলাম,,আমি অল্প কিছুক্ষন শুনেছি,তিনি বললেন যে,আশআরি -মাতুরিদি আকিদা হচ্ছে ভ্রান্ত আকিদা,আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত এর অন্তর্ভুক্ত নয়।
এক্ষেত্রে নাকি বিশুদ্ধ আকিদা গ্রহন করতে হবে,নাহলে নাকি শেষ।
আর আরো ও বললেন যে,হানাফি মাযহাব মানে অথচ ইমাম আবু হানিফার আকিদা মানবে না এরা,,ইমাম আবু হানিফার আল ফিকহুল আকবার নাকি সারা পৃথিবী তে আকিদার জন্য প্রসিদ্ধ,, আর অনেক প্রাচীন,, কিনতু আশয়ারি-মাতুরিদি আকিদা নাকি ৭০০ হিজরির দিকের,,তারা বললেন যে,কেনো পুরানো আকিদা,,সালাফ দের আকিদা বাদ দিয়ে অনেক পরে আসা আকিদা গ্রহন করলো,আর আকিদার ক্ষেত্রে কেন আবু হানিফার আকিদা গ্রহন করলো না,,আমাদের দেশের আলেমরা।
আরো বললেন যে,আল্লাহর হাত,পা,চোখ এসব  অস্বীকার করে আল্লাহর কুদরতি হাত,বলে কেনো।?আর আল্লাহ আরশে সমাসীন কিন্তু হানাফি মাযহাব যারা মানে তারা নাকি বলে যে আল্লাহ পৃথিবী তেও বিরাজমান, এই এই ধরনের বিশ্বাস নাকি ভ্রান্ত,আল্লাহর সিফাত কে অস্বীকার করার সামিল। আরো কয়েকজন শায়েখ এর বক্তব্যও তুলে ধরেছি উপরে,,নাম খেয়াল নাই।
আর আকিদাতুত তহাবি বইটির নাকি আসল অর্থ বিকৃত করে আমাদের দেশে পড়ানো হয়। সঠিক অনুবাদ যেটা সেটা নাকি পড়ানো হয়না,,বললো ভিতরে নাকি মাতুরিদি আকিদা ঢুকিয়ে দেয়া হইছে।আরো অনেক কিছু,,তাহলে আমাদের আকিদা কোনটা সঠিক,,,কোনটা বিশ্বাস করবো, ,,বললে উপকার হতো,,আমি বিচলিত হয়ে পড়েছি।
১,আল্লাহ আরশে আছেন,এটা আমারো মনে হয়,,যে আল্লাহ আকাশে আছেন,এখন শায়েখ আল্লাহ দুনিয়াতে বিরাজমান এই কথাটি কিভাবে সঠিক হয়,,এর পিছনে কি কি দলিল আছে বা কুরানের আয়াত আছে,,যদি আমাকে দয়া করে দিতেন সেগুলি
২,তারা বলে যে আল্লাহর দুটো হাত আছে,পা আছে, চোখ আছে,,এগুলি  বিশাস করতেই নাকি হবে,নাহলে ভ্রান্ত হয়ে যাবো,,তিনি আকিদার উপর phd করেছেন,এইজন্য ভয় লাগছে,,যে কোনটা সঠিক,,আর কি কি কারনে সঠিক বুঝবো।
৩,হায়াতুন্নাবী, এটাও নাকি ভ্রান্ত আকিদা,,এটার সম্পর্কে জানতে চাই,শায়েখ আমাকে ক্ষমা করবেন,আমার প্রশ্নে কোনো ভুল হয়ে থাকলে,

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


হাদীস শরীফে এসেছেঃ
 
حَدَّثَنَا أَبُو سَعِيدٍ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرُ، قَالَ سَمِعْتُ مُجَالِدًا، يَذْكُرُ عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ كُنَّا عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَخَطَّ خَطًّا وَخَطَّ خَطَّيْنِ عَنْ يَمِينِهِ وَخَطَّ خَطَّيْنِ عَنْ يَسَارِهِ ثُمَّ وَضَعَ يَدَهُ فِي الْخَطِّ الأَوْسَطِ فَقَالَ " هَذَا سَبِيلُ اللَّهِ " . ثُمَّ تَلاَ هَذِهِ الآيَةَ (وَأَنَّ هَذَا صِرَاطِي مُسْتَقِيمًا فَاتَّبِعُوهُ وَلاَ تَتَّبِعُوا السُّبُلَ فَتَفَرَّقَ بِكُمْ عَنْ سَبِيلِهِ) .

জাবির ইবনু আবদুল্লাহ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট উপস্থিত থাকা অবস্থায় তিনি একটি সরল রেখা টানলেন এবং তাঁর ডান দিকে দুটি সরল রেখা টানলেন এবং বাম দিকেও দুটি সরল রেখা টানলেন। অতঃপর তিনি মধ্যবর্তী রেখার উপর তাঁর হাত রেখে বলেনঃ এটা আল্লাহ্র রাস্তা। অতঃপর তিনি এ আয়াত তিলাওয়াত করেন (অনুবাদ) এবং এ পথই আমার সরল পথ। অতএব তোমরা এ পথেরই অনুসরণ করো এবং বিভিন্ন পথ অনুসরণ করো না, অন্যথায় তা তোমাদেরকে তাঁর পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে। (সূরাহ আনআম ৬: ১৫৩)
(ইবনে মাজাহ ১১)

(০১)
আশ'আরী এবং মাতুরিদি আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের অন্তর্ভুক্ত।আছারী সম্পর্কে অনেক উলামায়ে কেরাম আহলে হক তথা আহলে সুন্নাতের অন্তর্ভুক্ত মনে করেন।

আশায়েরা বলা হয়, যাদের নিসবত ইমাম আবুল হাসান আশআরী রহঃ এর দিকে। আর যাদের নিসবত ইমাম আবু মানসূর মাতুরিদী রহঃ এর দিকে, তাদের বলা হয় মাতুরিদী।
আশায়েরা মাতুরিদী উভয় দলের আকিদাই সঠিক।

মূলত তারা উভয়ে আল্লাহর নবী সাঃ এবং সাহাবায়ে কেরামের আকিদাসমূহ সংকলন করেছেন। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অনুসারীদের মাঝে এ দুইজনের সংকলন ব্যাপক প্রসিদ্ধি লাভ করে।

তাই আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অনুসারীগণ এ দুইজনের একজনের দিকে নিজেদের আকিদাগত বিষয়ে নিসবত করে থাকেন।

তাদের উভয়ের মাঝে কিছু সংখ্যক মতভেদ রয়েছে। তবে তা বলতে গেলে আক্ষরিক মতভেদ। মূল মতভেদ নয়। আর এসব মতভেদ হয়েছে এমন বিষয়ে, যে বিষয়ে সাহাবায়ে কেরাম থেকে সুষ্পষ্ট কোন বক্তব্য পাওয়া যায় না।

ভ্রান্ত মুতাযিলা ও মুজাসসিমা ও জাহমিয়া ফিরক্বার বিরুদ্ধে আবুল হাসান আশআরী রহঃ শক্ত হাতে কলম ধরেন। জাহমিয়া ও মু’তাযিলাদের বিরুদ্ধে তিনি “আলমুযিজ” নামক তিন খন্ডে গ্রন্থ রচনা করেন।
ইমাম আশআরী রহঃ মুহাদ্দিস, ফক্বীহ ও মুতাযিলাদের মতবিরোধপূর্ণ বিষয়ে মুহাদ্দিসদের মত পোষণ করতেন। তিনি সর্বদাই বিদআতপন্থীদের থেকে দূরে থাকতেন। তিনি আক্বীদা বিষয়ে প্রথমে নছ তথা কুরআন সুন্নাহ তারপর তার সমর্থনে আকল তথা যুক্তিকেও ব্যবহার করতেন। [ইসলামী বিশ্বকোষ, ইফাবা, ইলমুল কালাম-৫৭] 

আরো জানুনঃ  

আমরা বিশ্বাস রাখবো যে আল্লাহ বেষ্টনকারী, তথা আল্লাহ ইলম ও কুদরত হিসেবে সর্বত্র তিনি আমাদের মাঝে বিরাজমান আছেন। তাহলে এমন আকিদা বিশ্বাস রাখা যাবে।
আরো জানুনঃ 
https://ifatwa.info/17901/

(০২)
আল্লাহ তায়ালার আকার সংক্রান্ত জানুনঃ

(০৩)
হায়াতুন নাবী সাঃ এটি সঠিক আকীদা।
হযরত আনাস বিন মালিক রাঃ থেকে বর্ণিত হাদীসঃ

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” أَتَيْتُ – وَفِي رِوَايَةِ هَدَّابٍ: مَرَرْتُ – عَلَى مُوسَى لَيْلَةَ أُسْرِيَ بِي عِنْدَ الْكَثِيبِ الْأَحْمَرِ، وَهُوَ قَائِمٌ يُصَلِّي فِي قَبْرِهِ “

হযরত আনাস বিন মালিক রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, আমি মেরাজের রাতে কাসীবে আহমার স্থান অতিক্রমকালে দেখতে পাই হযরত মুসা আঃ তার কবরে নামায পড়ছেন। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৩৭৫}

হযরত আনাস রা. বর্ণনা করেন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
الأَنْبِيَاءُ أَحْيَاءٌ فِي قُبُورِهِمْ يُصَلُّون.
‘নবীগণ কবরে জীবিত, নামায আদায় করেন’।
মুসনাদে আবু ইয়ালা, হাদীস ৩৪২৫; হায়াতুল আম্বিয়া লিল বাইহাকী, হাদীস ১-৪

বিস্তারিত জানুনঃ  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
আকিদায় ইখতেলাফ করা যায় না এটা তো আইওমের আকিদা বইয়্রি পড়েছি।তাহলে এইখানে কেন দুইদল হলো? আকিদা বিভক্তি কেন???
by (559,140 points)
তাদের উভয়ের মাঝে কিছু সংখ্যক বিষয় নিয়ে মতভেদ রয়েছে। তবে তা বলতে গেলে আক্ষরিক মতভেদ। মূল মতভেদ নয়। 

সুতরাং এটিকে আকিদাগত বিভক্তি বলা যাবেনা।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...