আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
264 views
in পবিত্রতা (Purity) by (17 points)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ 

উস্তাদ,মোজা মাসেহের মেয়াদ কখন থেকে হিসাব করবো বুঝতে পারছি না।আমার এই দুইটা চিন্তা মাথায় আসছে, কোনটা সঠিক জানাবেন।

১)আমি উযু করে মোজা পড়ে সফরে বের হয়েছি।আমার উযু এখনও আছে। পথিমধ্যে আমার উযু ভেঙ্গে গেল,পুনরায় উযু করেছি পা না ধুয়ে মোজার উপর মাসেহ করছি।এখন থেকে আমি সময় হিসেব করবো।

২)দ্বিতীয়ত,আমি উযু করে,মোজা পড়ে সফরের জন্য বের হয়েছি।এখন থেকে আমি সময় হিসেব করবো।

বি.দ্রঃ ফিকহুল মুয়াসসার কিতাবে আছে ,উযু নষ্ট হওয়ার পর থেকে মাসেহের মেয়াদ হিসাব করা হয়,মোজা পরিধান করার সময় থেকে নয়।এই কথাটা বুঝতে পারিনি।

জাযাকাল্লাহু খায়রান

1 Answer

0 votes
by (57,570 points)

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাবঃ-

মুজা মাসেহের বিধান হল, মুজার উপর মাসেহ করা জায়েয।এবং এটা আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের গুরুত্বপূর্ণ আকিদা।বাতিল ফিরকা সমূহের মধ্যে শিয়া এবং খাওয়ারিজ ফিরকাদ্বয় মনে করে যে,মুজার উপর মাসেহ দ্বারা পবিত্রতা অর্জিত হবে না।

হযরত মুগিরা ইবনে শু'বা রাযি থেকে বর্ণিত,

عن المغيرة بن شعبة، أن رسول الله صلى الله عليه وسلم مسح على الخفين، فقلت: يا رسول الله أنسيت؟، قال: «بل أنت نسيت، بهذا أمرني ربي عز وجل»

তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুজার উপর মাসেহ করলেন।আমি তখন বললাম,ইয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাল্লাম! আপনি কি পা'কে ধৌত করতে ভূলে গিয়েছেন।তখন তিনি বললেন,না বরং তুমিই আল্লাহ বিধানকে ভূলে গেছো।(সুনানু আবু-দাউদ-১৫৬)

মুজার উপর মাসেহ বৈধ হওয়ার জন্য সাতটি শর্ত রয়েছে-

ويشترط لجواز المسح على الخفين سبعة شروط الأول لبسهما بعد غسل الرجلين ولو قبل كمال الوضوء إذا أتمه قبل حصول ناقض للوضوء والثاني سترهما للكعبين والثالث إمكان متابعة المشي فيهما فلا يجوزعلى خف من زجاج أو خشب أو حديد والرابع خلو كل منهما عن خرق قدر ثلاث أصابع من أصغر أصابع القدموالخامس استمساكهما على الرجلين من غير شد والسادس منعهما وصول الماء الى الجسد والسابع أن يبقى من مقدم القدم قدر ثلاث أصابع من أصغر أصابع اليد فلو كان فاقدا مقدم قدمه لا يمسح على خفه ولو كان عقب القدم موجودا ويمسح المقيم يوما وليلة والمسافر ثلاثة أيام بلياليها وابتداء المدة من وقت الحدث بعد لبس الخفين

(১)অজুর সময়ে পা ধৌত করার পর পড়তে হবে।যদিও অজুকে পূর্ণ করা না হউক তবে মুজা পরার পর অজুকে পূর্ণ করার পূর্বে কোনো হদস বা অজু ভঙ্গকারী জিনিষ সামনে আসতে পারবে না।(২)মুজা দ্বারা টাখনু পর্যন্ত পা-কে ঢেকে রাখা সম্ভব হতে হবে।(৩)মুজা দ্বারা একাধারে তিন মাইল(শরয়ী) বা সাড়েপাঁচ কিলোঃ হাটা সম্ভব হতে হবে।সুতরাং লোহা, শিষা, লাকড়ি ইত্যাদির মুজা দ্বারা মাসেহ করার কখনো জায়েয হবে না।(৪)মুজা তিন আঙ্গুল পরিমাণ ছিড়া থাকতে পারবে না।(৫)কোনো কিছু দ্বারা বাঁধা ব্যতীত মুজা পায়ের উপর এটে থাকতে হবে।(৬) শরীরে পানি প্রবেশ হতে বাধা প্রদানকারী হতে হবে।(৭)পা কর্তিত থাকাবস্থায়,পায়ের উপরি ভাগের সামনের অংশে তিন আঙ্গুল পরিমাণ অবশিষ্ট থাকতে হবে।যদি পায়ের উপরিভাগের সামনের অংশে তিন আঙ্গুল পরিমাণ পায়ের পাতা অবশিষ্ট না থাকে,তাহলে তখন মুজার উপর মাসেহ করা কখনো জায়েয হবে না।যদিও এক্ষেত্রে পায়ের পিছনে অংশ বাকী থাকুক না কেন?

(মাসেহের সময়সীমা)

মুক্বিম ব্যক্তি একদিন একরাত পর্যন্ত মুজার উপর মাসেহ করতে পারবে।তবে মুসাফির ব্যক্তি তিনদিন তিনরাত পর্যন্ত মুজার উপর মাসেহ করতে পারবে।মুজা পরিধান করার পর যখন অজু চলে যাবে,মূলত তখন থেকেই মাসেহের সময়ের সূচনা হবে।(মারাকিল ফালাহ-১/৫৬-৫৭)

এই সাতটি শর্তের সম্পূরক হিসেবে কোনো কোনো কিতাবে আরো কিছু শর্তের উল্লেখ পাওয়া যায়-

(৮)মুজা পরিধানকারী জুনুবী হতে পারবে না।

(৯)মুজা পরিধান অজুর মাধ্যমে হতে হবে।তায়াম্মুম করে মুজা পরিধান করা যাবে না।

(১০)পায়ের সাথে মিলিত হয়ে থাকতে হবে।

(কিতাবুন-নাওয়াযিল-৩/১৩১)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!

জ্বী আপনার প্রথম মতটিই সঠিক অর্থাৎ পবিত্র অবস্থায় মোজা পরিধান করার পর প্রথমবার অজু ভঙ্গ হওয়া থেকে মুকীম ব্যক্তি এক দিন এক রাত এবং মুসাফির ব্যক্তি তিনদিন তিন রাত হিসাব করবে। মোজা পরিধানের সময় থেকে উক্ত সময় হিসাব করবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 87 views
...