بسم
الله الرحمن الرحيم
জবাব,
ফরয রোযার কাযা আদায় করা অবস্থায় উক্ত
রোযাকে ভঙ্গ করলে শুধুমাত্র কাযা আদায় হবে, এতে
কোনো কাফফারা আসবে না। কেননা কাফফারা শুধুমাত্র রমজান মাসে রোযা সাথে সম্পর্কিত।
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বর্ণিত রয়েছে,
وَلَا
كَفَّارَةَ بِإِفْسَادِ صَوْمِ غَيْرِ رَمَضَانَ كَذَا فِي الْكَنْزِ.
রমজান ব্যতীত অন্য কোনো সময় রোযাকে ভঙ্গ
করলে শুধুমাত্র কাযা ওয়াজিব হবে,এক্ষেত্রে কাফফারা
ওয়াজিব হবে না।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/২১৫)
নিয়ত মানে হল মনস্থির করা। কোন কাজটি
করছি? কেন করছি? কার জন্য করছি?
কি করছি? এসব বিষয় নির্ধারণ করার নাম হল নিয়ত।মুখে
নিয়ত করার প্রয়োজন নেই। মনে মনে নিয়ত করলেই যথেষ্ট।প্রতিটি কাজের সওয়াব পাবার জন্য
নিয়ত থাকা আবশ্যক।নিয়ত হচ্ছে, অন্তরের বিষয়।অন্তর দিয়ে নিয়ত করতে
হয়।নিয়ত বাংলায় বা আরবীতে বলা জরুরী নয়। আরবীতে যেসব নিয়ত আমাদের দেশে প্রচলিত এসব
শব্দে কোন নিয়ত কুরআন ও হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ
عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ «إِنَّمَا الْأَعْمَالُ
بِالنِّيَّاتِ وَإِنَّمَا لِامْرِئٍ مَا نَوٰى فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهٗ إِلَى
اللهِ وَرَسُوْلِه فَهِجْرَتُهٗ إِلَى اللهِ وَرَسُولِه وَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهٗ
اِلٰى دُنْيَا يُصِيبُهَا أَوِ امْرَأَةٍ يَتَزَوَّجُهَا فَهِجْرَتُهٗ إِلٰى مَا
هَاجَرَ إِلَيْهِ»
উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্ণিত।
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিয়্যাতের উপরই কাজের ফলাফল নির্ভরশীল। মানুষ তার নিয়্যাত অনুযায়ী
ফল পাবে। অতএব যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সন্তুষ্টির জন্য হিজরত করবে,
তার হিজরত আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সন্তুষ্টির জন্যই গণ্য হবে। আর যে ব্যক্তি
দুনিয়ার স্বার্থপ্রাপ্তির জন্য অথবা কোন মহিলাকে বিবাহের জন্য হিজরত করবে সে হিজরত
তার নিয়্যাত অনুসারেই হবে যে নিয়্যাতে সে হিজরত করেছে।(বুখারী ১, মুসলিম ১৯০৭, তিরমিযী ১৬৩৭, নাসায়ী
৭৫, আবূ দাঊদ ২২০১, ইবনু মাজাহ্ ৪২২৭,
আহমাদ ১৬৯, ৩০২।)
অনেকে বলেন, সমাজে যে আরবি নিয়ত প্রচলিত আছে তা বলতে হয়, নইলে কমপক্ষে মুখে এতটুকু বলতে হয় যে, আমি আগামীকাল
রোজা রাখার নিয়ত করছি।এমন ধারণা সঠিক নয়। কারণ রোজার জন্য মৌখিক নিয়ত জরুরি নয়;
বরং অন্তরে রোজার সংকল্প করাই যথেষ্ট। এমনকি রোজার উদ্দেশ্যে সাহরি খেলেই
রোজার নিয়ত হয়ে যায়।
সুতরাং এ কথা ভাবার কোনো সুযোগ নেই যে, মুখে রোজার নিয়ত না করলে রোজা হবে না।তবে কেউ যদি নিয়ত করে রোজা
রাখতে চায়, তা হলে এভাবে নিয়ত করতে হবে-
সুবহে সাদিকের পূর্বে মনে মনে এই নিয়ত
করবে যে, ‘আমি আজ রোজা রাখবো’ অথবা দিনে আনুমানিক ১১টার
পূর্বে মনে মনে নিয়ত করবে যে, আমি আজ রোযা রাখলাম। মুখে নিয়ত
করা জরুরি নয়, বরং মুস্তাহাব। (রদ্দুল মুহতার: ২/৩৭৭)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১.কাজা রোজার নিয়ত করে তা ভেঙ্গে ফেললে
শুধু কাজা আদায় করতে হবে। কাফ্ফারা ওয়াজিব হবে না ।
২.রোজার নিয়ত মুখে বলা জরুরী নয়,মনে মনে রোজা রাখার নিয়ত করে নিলেই যথেষ্ট।