بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
শরীয়তের বিধান হলো অন্যায় কাজ,গুনাহের কাজ যেমন নিজে করা জায়েজ
নেই।জেনে শুনে এমন কাজে অন্যকে সহযোগিতা করাও জায়েজ নেই।মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
وَتَعَاوَنُوا عَلَى
الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ
وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ [٥:٢]
সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ
ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা
কঠোর শাস্তিদাতা। {সূরা মায়িদা-২}
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ
ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস
নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০,
শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
১.যদি আপনি প্রবলভাবে বা নিশ্চতভাবে জেনে শুনে
কাউকে এমন ক্ষেত্রে সাহায্য করেন যে, তা সে গুনাহের কাজে ব্যবহর করবে,তাহলে সে
তো গুনাহগার হবেই।সাথে সাথে আপনিও উক্ত গুনাহের অংশিদার হবেন তাকে সাহায্য করার কারণে।বিধায়
সতর্কতা অবলম্বন করতঃ উক্ত ব্যক্তিকে এমন সন্দেহ জনক কাজে সহযোগিতা করা থেকে বিরত থাকায়
উত্তম এবং এতে যদি সে মন খারাপও করে তথাপি আপনার কোন গুনাহ হবে না।
২.ত্বলবে ইলমকে খানা খাওয়ানো সওবের কাজ তবে প্রশ্নেল্লিখিত
ফজিলতের কথা কোন হাদিসে পাওয়া যায় না।
৩. উচ্চস্বরে বলা জরুরী নয়। কিন্তু অনেক মানুষই
দোয়া না পড়েই খাওয়া শুরু করে দেন। তাই তাদের জন্য ফুক্বাহায়ে কেরাম বলেছেন, মুখে উচ্চারণ করে দোয়া পড়ার অভ্যাস
করতে।কারণ,এতে মুখে বলার পাবন্দ হলে, সুন্নাতও
আদায় হলো এবং এভাবে উক্ত আমলের উপর অভ্যস্থতাও গড়ে উঠলো।
৪. নামাজে মনোযোগী হবার কার্যকরী ৭টি উপায়-
১) অর্থের প্রতি খেয়াল রেখে সবকিছু করা। অর্থের
প্রতি খেয়াল না থাকলে আমি কার সামনে দাঁড়িয়ে কী বলছি এবং কেন বলছি তা কখনই বোঝা যাবেনা।
অন্তত সালাতে যে সূরাগুলো পড়া হয় এবং রুকু,সিজদাহ ও বসা অবস্থায় তাসবীহ ও দুয়াগুলোর অর্থ শব্দের প্রতি খেয়াল
রেখে পড়া।
২) তাকবীরে তাহরিমা তথা আল্লাহু আকবার বলে হাত
বাঁধার আগে চিন্তা করা আমি কার সামনে দাঁড়াচ্ছি। যার সামনে দাঁড়াচ্ছি তিনি কতো বড়, কতো মহান। দুনিয়ার একজন সামান্য
প্রেসিডেন্টের সামনে যদি আমি দাঁড়াই তবে যেরকম মনোযোগ সহকারে স্থির হয়ে দাঁড়াতাম,
তাহলে সমগ্র সৃষ্টিজগতের মালিকের সামনে দাঁড়ালে আমার আচরণ কীরকম হওয়া
দরকার?
৩) তাজওয়ীদ সহকারে ধীরে ধীরে কুরআন তিলাওয়াত করা
ও রুকু সিজদাহর তাসবীহ ভক্তিসহকারে আদায় করা।
৪) হাদিসে এসেছে, বান্দা যখন সিজদাহ অবস্থায় থাকে
তখন সে মহান আল্লাহর খুব নিকটবর্তী হয়ে যায়। তাই সিজদাহ অবস্থায় আমাদের মনে এই ধ্যান
আসা উচিত যে আমার দেহের সবচেয়ে সম্মানের অঙ্গ মাথাকে আমার মালিকের সামনে লুটিয়ে দিলাম
শুধুমাত্র তারই অনুগ্রহ পাওয়ার আশায়।
৫) এই ধ্যান করা যে আমার মনের অবস্থা একমাত্র
আল্লাহই জানেন। রিয়া তথা লোকদেখানোর চিন্তা মাথায় আসার সাথে সাথেই ঝেড়ে ফেলা, শুধুমাত্র আল্লাহর জন্যই সালাতকে
সুন্দর করার চেষ্টা করা। আর কাল হাশরের ময়দানে এই সালাতের প্রতিদানের আশা করা,
সাথে সাথে নিজের গুনাহ ও দুর্বলতার কারণে সালাত অগ্রাহ্য হওয়ার আশঙ্কাও
রাখা।
৬) নড়াচড়া করা, দাড়িতে হাত বুলানো, গা
চুলকানো, মশা তাড়ানো, টুপি ঠিক করা,
জামা টেনে টুনে ঠিক করা ইত্যাদি অযথা কাজ পরিহার করার চেষ্টা করা।
৭) মনে মনে চিন্তা করা যে আমি পুলসিরাতের উপর
দাঁড়িয়ে আছি, আমার ডানে
জান্নাত, বামে জাহান্নাম, মাথার উপর গুনাহের
বোঝা, পেছনে মালাকুল মাউত জান কবজের জন্য দাঁড়িয়ে আছেন। মনে করা
যে এটিই আমার জীবনের শেষ সালাত, এরপর হইত আমার আর সালাত আদায়ের
সুযোগ হবে না।
মহান আল্লাহ আমাদেরকে খুশু-খুযুর সহিত সালাত আদায়
করার তাওফিক দান করুন। আমিন।