আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+2 votes
284 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (39 points)
বাসায় আমার বাবড়ি চুল, পাগড়ি, জুব্বা এসবের পক্ষে না। তারা রাজি না যে এগুলো পরিধান করুক তার সন্তান। তবুও কি তাদের উপেক্ষা করে সন্তান সুন্নতি লেবাস নিতে পারবে?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
 হাদীস শরীফে  এসেছেঃ 

وَعَنِ النَّوَّاسِ بْنِ سِمْعَانَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «لَا طَاعَةَ لِمَخْلُوقٍ فِىْ مَعْصِيَةِ الْخَالِقِ». رَوَاهُ فِىْ شَرْحِ السُّنَّةِ

নাও্ওয়াস ইবনু সিম্‘আন (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রতিপালকের অবাধ্যতার মাঝে কোনো সৃষ্টির আনুগত্য নেই। ( মিশকাত শরীফ ৩৬৯৬
শারহুস্ সুন্নাহ্ ২৪৫৫)
,
★তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে পিতা মাতার কথা   উপেক্ষা করে অবশ্যই   সন্তানকে সুন্নতি লেবাস পরিধান করতে হবে,এক্ষেত্রে পিতামাতার কোনো কথাই শোনা যাবেনা।
কারন রাসুলের তরিকাই আগে মানতে হবে,পরে পিতা মাতা।
পিতা মাতার হুকুম যদি কুরআন সুন্নাহ বিরোধী না হয়,তাহলে তা মানা ওয়াজিব, আর যদি তাদের হুকুম কুরআন সুন্নাহর খেলাফ হয়, তাহলে তা মানা যাবেনা।
বরং তাহা প্রত্যাখ্যান করতে হবে।         
,
তবে এক্ষেত্রে পিতা মাতাকে হিকমতের সহিত আস্তে আস্তে বুঝাইতে হবে,তাদের সাথে কোনো ভাবেই রুক্ষ আচরণ করা যাবেনা। 
,

যেহেতু পিতা-মাতা জন্মদাতা। তাদের স্নেহ-ভালোবাসায় সন্তান বড় হয়ে থাকে। সেজন্য তাদের সাথে সর্বাবস্থায় সদাচরণ করতে হবে। তারা আল্লাহ্ ও রাসূল বিরোধী কোন আদেশ না করলে তাদের সাথে সদ্ব্যবহার করতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَإِنْ جَاهَدَاكَ عَلَى أَنْ تُشْرِكَ بِي مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ فَلَا تُطِعْهُمَا وَصَاحِبْهُمَا فِي الدُّنْيَا مَعْرُوفًا وَاتَّبِعْ سَبِيلَ مَنْ أَنَابَ إِلَيَّ ثُمَّ إِلَيَّ مَرْجِعُكُمْ فَأُنَبِّئُكُمْ بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُونَ-

‘আর যদি পিতা-মাতা তোমাকে চাপ দেয় আমার সাথে কাউকে শরীক করার জন্য, যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তাহ’লে তুমি তাদের কথা মানবে না। তবে পার্থিব জীবনে তাদের সাথে সদ্ভাব রেখে বসবাস করবে। আর যে ব্যক্তি আমার অভিমুখী হয়েছে, তুমি তার রাস্তা অবলম্বন কর। অতঃপর তোমাদের প্রত্যাবর্তন আমারই নিকটে। অতঃপর আমি তোমাদেরকে তোমাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে অবহিত করব’ (লোকমান ৩১/১৫) ।

عن سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ قَالَ: نَزَلَتْ فِيَّ أَرْبَعُ آيَاتٍ مِنْ كِتَابِ اللهِ تَعَالَى: كَانَتْ أُمِّي حَلَفَتْ أَنْ لَا تَأْكُلَ وَلَا تَشْرَبَ حَتَّى أُفَارِقَ مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ: وَإِنْ جَاهَدَاكَ عَلَى أَنْ تُشْرِكَ بِي مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ فَلَا تُطُعْهُمَا وَصَاحِبْهُمَا فِي الدُّنْيَا مَعْرُوفًا-

সা‘দ ইবনে আবু ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, আমার সম্পর্কে আল্লাহর কিতাবের চারটি আয়াত নাযিল হয়। (১) আমার মা শপথ করেন যে, আমি যতক্ষণ মুহাম্মাদ (ছাঃ)-কে ত্যাগ না করবো ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি পানাহার করবেন না। এই প্রসঙ্গে মহামহিম আল্লাহ নাযিল করেন, ‘পিতা-মাতা যদি তোমাকে আমার সাথে এমন কিছু শরীক করতে চাপ দেয় যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তবে তুমি তাদের আনুগত্য করবে না এবং দুনিয়াতে তাদের সাথে সদ্ভাবে বসবাস করবে’ (লোকমান ৩১/১৫)

عَنْ أَسْمَاءَ بِنْتِ أَبِى بَكْرٍ قَالَتْ قَدِمَتْ عَلَىَّ أُمِّى وَهِىَ مُشْرِكَةٌ فِى عَهْدِ قُرَيْشٍ إِذْ عَاهَدَهُمْ فَاسْتَفْتَيْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ قَدِمَتْ عَلَىَّ أُمِّى وَهْىَ رَاغِبَةٌ أَفَأَصِلُ أُمِّى قَالَ: نَعَمْ صِلِى أُمَّكِ-

আসমা বিনতে আবুবকর (রাঃ) বলেন, আমার মুশরিকা মা কুরাইশদের আয়ত্বে থাকাকালীন সময়ে আমার নিকট এসেছিল। তখন আমি রাসূল (ছাঃ)-কে ফৎওয়া জিজ্ঞেস করে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমার মুশরিকা মা আমার কাছে এসেছে। আর তিনি ইসলাম গ্রহণে অনাগ্রহী। আমি কি তার সাথে সদ্ব্যবহার করব? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তোমার মায়ের সাথে সদ্ব্যবহার কর’। (বুখারী শরীফ ৩১৮৩ মুসলিম ১০০৩)


হাফেয ইবনু হাজার (রহঃ) বলেন, ঘটনাটি ছিল হোদায়বিয়া সন্ধি থেকে মক্কা বিজয়ের পূর্ব পর্যন্ত সময়কার। যখন তিনি তার মুশরিক স্বামী হারেছ বিন মুদরিক আল-মাখযূমীর সাথে ছিলেন (ফাৎহুল বারী)

عَنْ أَسْمَاءَ ابْنَةِ أَبِى بَكْرٍ رضى الله عنهما قَالَتْ: أَتَتْنِى أُمِّى رَاغِبَةً فِى عَهْدِ النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلْتُ النَّبِىَّ صلى الله عليه وسلم  آصِلُهَا قَالَ: نَعَمْ . قَالَ ابْنُ عُيَيْنَةَ فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى فِيهَا لاَ يَنْهَاكُمُ اللَّهُ عَنِ الَّذِينَ لَمْ يُقَاتِلُوكُمْ فِى الدِّينِ-

আবুবকর কন্যা আসমা হতে বর্ণিত তিনি বলেন, নবী (ছাঃ)-এর যুগে আমার অমুসলিম মা আমার কাছে এলেন। আমি নবী (ছাঃ)-এর নিকট জিজ্ঞেস করলাম, তার সঙ্গে ভাল ব্যবহার করবো কি না? তিনি বললেন, হ্যাঁ। ইবনু উয়াইনাহ (রহঃ) বলেন, এ ঘটনা প্রসঙ্গেই আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ করেন, ‘দ্বীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করেনি, আর তোমাদেরকে তোমাদের ঘর-বাড়ী থেকে বের করে দেয়নি তাদের সঙ্গে সদয় ব্যবহার করতে আর ন্যায়নিষ্ঠ আচরণ করতে আল্লাহ নিষেধ করেননি।

(বুখারী ৫৯৭৮ আল আদাবুল মুফরাদ ২৫)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...