আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
208 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (47 points)
আমার কাজিনদের মধ্যে কেউ কেউ আছে হিজাব পড়লেও সম্পুর্ন পর্দা করে।সেজে বের হয়,বা থ্রি-পিস পড়ে বের হয়।আমরা একসাথে আমাদের দেশের বাড়ি কুমিল্লা যাওয়া ও ঘুরার পরিকল্পনা করছি।ওরা যদি পরিপূর্ণ পর্দা  না করে আমার সাথে ঘুরতে বের হয় তাহলে কি আমার গুনাহ হবে?এর দায়ভার আমাকে নিতে হবে।যদিও আমি তাদেরকে পর্দার ব্যপারে দাওয়াত দিয়েছি।

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}

উক্ত আয়াতে পরিস্কার ভাষায় মেয়েদের অন্যের সামনে নিজেকে প্রকাশ করতে, অপ্রয়োজনে কথা বলতে, আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে।

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}

বিখ্যাত তাফসীরবিদ ইমাম কুরতুবী রাহ. উক্ত আয়াতের আলোচনায় বলেন, উক্ত আয়াতে আল্লাহ তাআলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীদের কাছে কোনো প্রয়োজনে পর্দার আড়াল থেকে কিছু চাওয়া বা কোনো মাসআলা জিজ্ঞাসা করার অনুমতি দিয়েছেন। সাধারণ নারীরাও উপরোক্ত হুকুমের অন্তর্ভুক্ত। (তাফসীরে কুরতুবী ১৪/১৪৬)

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীগণ হলেন সকল মুমিনের মা। অথচ তাঁদের সাথেই লেনদেন বা কথা-বার্তা বলতে হলে পর্দার আড়াল থেকে করতে বলা হয়েছে। তাহলে অন্যান্য সাধারণ বেগানা নারীদের ক্ষেত্রে হুকুমটি কত গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত তা তো সহজেই অনুমেয়।

ইসলাম নারীকে সুরক্ষিত রাখার জন্য সফরে নারীর সাথে মাহরাম থাকা ওয়াজিব করে দিয়েছে; যাতে করে মাহরাম পুরুষ নারীকে দুশ্চরিত্র ও হীন-উদ্দেশ্য চরিতার্থকারী লোকদের থেকে নিরাপদ রাখতে পারে এবং সফরে নারীর দুর্বলতায় তাকে সহযোগিতা করতে পারে। যেহেতু সফর হচ্ছে- এক টুকরো কষ্ট। তাই মাহরাম ছাড়া কোন নারীর সফর করা জায়েয নয়। দলিল হচ্ছে ইবনে আব্বাস (রাঃ) এর হাদিস তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন:

অবশ্যই অবশ্যই কোন নারী মাহরাম ছাড়া সফর করবে না। তখন এক লোক দাঁড়িয়ে বলেন: ইয়া রাসূলুল্লাহ্! আমি তো অমুক যুদ্ধে যাওয়ার জন্য নাম লিখিয়েছি। আমার স্ত্রী হজ্জ করার জন্য বেরিয়েছে। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: তুমি গিয়ে তোমার স্ত্রীর সাথে হজ্জ কর।”[সহিহ বুখারী (ফাতহুল বারী ৩০০৬)]

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

আপনি যদি ৭৭ কি:মি: বা ততোধিক দূরত্বে ঘুরতে বের হন এবং আপনার সাথে কোন মাহরাম পুরুষ না থাকেন তাহলে আপনার জন্য তা জায়েয নেই। কেননা এতে ফিতনার আশংকা আছে। যারা পূর্ণ পর্দা করেন না তাদের সাথে চলাফেরা করলে ফিতনার সম্মুখিন হওয়ার প্রবল সম্ভবনা থাকায় তাদের সাথে বাহিরে যাওয়া কোন দ্বীনদার বোনের জন্য উচিৎ  নয়,বরং তাদেরকেও পর্দা পালনের জন্য দাওয়াত দিতে থাকবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...