আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
325 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (5 points)
আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ শায়েখ। আমার বাবা মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে প্রায় ২০১০ সালে যখন আমি পঞ্চম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষা দিচ্ছি। এরপর থেকে আমি আমার বাবার সাথে আমার সৎ মায়ের সংসারে বড় হয়েছি। কিন্তু আমার মায়ের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ হতো। তিনি নিয়মিত আমার খোঁজ খবর নিতেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা ওনাকে জাজায়ে খাইর দান করুক। গত ৩১ তারিখ আমার চাকরির বয়স তিন মাস পূর্ণ হয়েছে। বাবা আমাকে বেতনের নির্দিষ্ট টাকা ওনার হাতে বুঝিয়ে দেওয়ায় জন্য চাকরিরি আগেই বলেছিলেন। দ্বিতীয় মাসের বেতন পাওয়ার পর আমি নির্দিষ্ট টাকা না দিয়ে তার থেকে কম টাকা দিই। তিনি এর কারণ জিজ্ঞেস করলে আমি মাকেও কিছু টাকা দেওয়ার কথা ওনাকে জানায়। এতে তিনি আমার উপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং আমাকে ঐ টাকা ফেরত দিয়ে পরবর্তী মাসের ১ তারিখ থেকে বাসা চলে যেতে বলেন।সাথে সাথে এও বুঝিয়ে দেন তিনি এগুলো হিসাব আল্লাহর কাছ থেকে নিবেন। পরদিন সকালে আমি চাকরিতে যাওয়ার আগে ওনি যে পরিমাণ টাকা নির্ধারণ করছেন তা বোনের মাধ্যমে ওনাকে বুঝিয়ে দি‌ই।
এখন প্রশ্ন হলো, আমার অর্জিত বেতনের মধ্যে মা এবং বাবার মধ্যে কার হক বেশি , এবং তা কিভাবে নির্ধারণ করতে হবে। উল্লেখ্য তাদের উভয়ের চলার মত তাওফিক রয়েছে এবং এক্ষেত্রে বাবার এগিয়ে রয়েছে। মায়ের দ্বিতীয় স্বামী আছে এবং কিছুটা অস্বচ্ছল।

1 Answer

0 votes
by (566,550 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


পরিবারের জন্য খরচ করা,মা বাবার ভরনপোণের জন্য খরচ করা উত্তম কাজ।
মা বাবা নিজেদের ভরনপোষণের ক্ষেত্রে অসমর্থ হলে সন্তানদের জন্য তাদের ভরনপোষণের খরচ দেওয়া শুধু শরীয়তেই নয়  এটা মানবতার দিক লক্ষ্য করেও জরুরি।

মা-বাবা  ভরণ-পোষণের অধিকারী হওয়ার জন্য শর্ত হলো দুটি।
★এক. তাঁরা এমন দরিদ্র হতে হবে যে তাঁরা নিজের মালিকানার সম্পদে চলতে অক্ষম। 

★দুই. সন্তান-সন্ততি সামর্থ্যবান ও উপার্জনে সক্ষম হতে হবে। তাদের সামর্থ্যবান হওয়ার পরিমাণ হলো, তাদের মালিকানার সম্পত্তি বা উপার্জনকৃত আয়ের দ্বারা নিজের ও নিজের স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততির স্বাভাবিক ভরণ-পোষণের পর অতিরিক্ত সম্পদ থাকতে হবে। অন্যথায় তাদের উপার্জনকৃত আয়ের মধ্য থেকে যদি তার নিজের ও স্ত্রী বা সন্তান-সন্ততির ভরণ-পোষণের অতিরিক্ত সম্পদ না থাকে, তাহলে মা-বাবা ও ঊর্ধ্বতন আত্মীয়ের ভরণ-পোষণ দেওয়া ওয়াজিব নয়। যদিও এ ক্ষেত্রে উত্তম হলো, কষ্ট হলেও যথাসাধ্য মা-বাবারও ভরণ-পোষণের খরচ চালিয়ে যাবে। (তাবঈনুল হাকায়েক : ৩/৬৪, রদ্দুল মুহতার : ২/৬৭৮)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

أَخْبَرَنَا قُتَيْبَةُ قَالَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ عَنْ جَابِرٍ قَالَ أَعْتَقَ رَجُلٌ مِنْ بَنِي عُذْرَةَ عَبْدًا لَهُ عَنْ دُبُرٍ فَبَلَغَ ذَلِكَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ أَلَكَ مَالٌ غَيْرُهُ قَالَ لَا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ يَشْتَرِيهِ مِنِّي فَاشْتَرَاهُ نُعَيْمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْعَدَوِيُّ بِثَمَانِ مِائَةِ دِرْهَمٍ فَجَاءَ بِهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَدَفَعَهَا إِلَيْهِ ثُمَّ قَالَ ابْدَأْ بِنَفْسِكَ فَتَصَدَّقْ عَلَيْهَا فَإِنْ فَضَلَ شَيْءٌ فَلِأَهْلِكَ فَإِنْ فَضَلَ شَيْءٌ عَنْ أَهْلِكَ فَلِذِي قَرَابَتِكَ فَإِنْ فَضَلَ عَنْ ذِي قَرَابَتِكَ شَيْءٌ فَهَكَذَا وَهَكَذَا يَقُولُ بَيْنَ يَدَيْكَ وَعَنْ يَمِينِكَ وَعَنْ شِمَالِكَ 

কুতায়বা (রহঃ) ... জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, উযরা গোত্রের এক ব্যাক্তি নিজের এক গােলামকে বলল যে, সে তার মৃত্যুর পর মুক্ত হয়ে যাবে। এ সংবাদ রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে পৌছলে তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তােমার কি এ গােলাম ছাড়া অন্য কোন সম্পত্তি আছে? সে বললঃ না। তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এ গােলামকে আমার কাছ থেকে কে খরিদ করবে? তাকে নুআয়ম ইব্ন আব্দুল্লাহ আদাবী (রাঃ) আটশত দিরহাম দিয়ে খরিদ করে নিলেন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উক্ত দিরহাম নিয়ে এসে ঐ লােকটিকে দিয়ে দিলেন এবং বললেন, তুমি নিজের থেকে শুরু কর (অর্থাৎ) নিজের জন্য খরচ কর। কিছু উদ্বৃত্ত থাকলে তা নিজ পরিবার-পরিজনের জন্য খরচ কর। তারপর কিছু উদ্বৃত্ত থাকলে তা নিজ আত্মীয়-স্বজনের জন্য খরচ কর। তারপরও কিছু উদ্বৃত্ত থাকলে তা এরকম এরকমভাবে খরচ করবে এবং স্বীয় ডান হস্ত এবং বাম হস্ত দ্বারা ইশারা করলেন।
নাসায়ী ২৫৪৮.সহীহ। ইরওয়া ৮৩৩, সহীহ জামে' আস-সগীর ২৮।
,

আরো জানুনঃ 
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,    
প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছে ""উল্লেখ্য তাদের উভয়ের চলার মত তাওফিক রয়েছে""
,
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে কেহই আপনার টাকার হকদার নয়।
তাদেরকে কাউকে টাকা দেওয়া আপনার উপর শরীয়ত কর্তৃক ওয়াজিব নয়।
আপনি সম্পূর্ণ টাকা নিজের নামে রাখতে পারবেন।     


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...