আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
171 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
আমাদের সমাজে এমন বিয়ের প্রচলন কম (অবশ্য, এরকম ক্ষেত্রে বয়সের পার্থক্যের কারনে সুযোগও কম)। আবার আমরা জানি, আমাদের সামাজিকতাও (যেসব রীতি শরীয়ত বিরোধী নয়) মেনে চলা উচিৎ।

কিন্তু,

i. এমন বিয়ে না হওয়াটাই আমাদের সমাজের সামাজিকতা (অথচ শরীয়তকে রহিত করার কারনে এটি বৈধ সামাজিকতা নয়)

ii. তাকে বিয়ে করা আমার জন্য আবশ্যক কাজ না

আবার,

i. নিজেরা পরস্পরকে পছন্দ করা (দ্বীন)

ii. অভিভাবকদের কাছে উভয়ই সাধারণভাবে পছন্দনীয়

iii. উভয়ের পরিবার তাদের নিজেদের সন্তানদের জন্য দ্বীনদার সঙ্গী খুঁজছে

এক্ষেত্রে, 'তথাকথিত সামজিকতা'র কারনে, অভিভাবক/সমাজ ভুল বুঝবে কিনা/মেনে নিবে কিনা, এমন কারনে পরিবারের কাছে এই চাওয়া প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকা উচিৎ? নাকি দ্বীন ইসলামের বিধানের অকাট্যতা-স্বাতন্ত্র্য-শ্রেষ্ঠত্ব (এতে যে কোন ভুল নেই, হীনমন্যতার সুযোগ নেই) বুঝিয়ে 'তথাকথিত সামাজিকতার' ভুল ভাঙানোর চেষ্টা করে নিজেদের ইচ্ছা প্রকাশ করা উচিৎ?

1 Answer

+1 vote
by (58,830 points)

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

ইসলামের বিধান ওই ব্যক্তির জন্য, যে আল্লাহকে রব হিসেবে মেনে নিয়েছে। মুহাম্মদ (সা.)-কে নবী ও রাসুল হিসেবে মেনে নিয়েছে। আমৃত্যু আল্লাহর ইবাদত করার অঙ্গীকার করেছে। শয়নে-স্বপনে, গোপনে-প্রকাশ্যে, আলোকে-আঁধারে, ছোট থেকে বৃহত্সব কাজে যে আল্লাহকে স্মরণ করে, ইসলাম তার জন্য। যে নিজেকে আল্লাহর কাছে সঁপে দিয়েছে, ইসলাম তার জন্য। যে দুনিয়ার জীবন থেকে পরকালের জীবনকে প্রাধান্য দেয়, ইসলাম তার জন্য।

ইসলাম ওই ব্যক্তির জন্য, যে দ্ব্যর্থহীনভাবে এই ঘোষণা দেয়,

قُلْ إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ

 ‘বলে দাও, আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন ও মরণ বিশ্বজাহানের রব আল্লাহর জন্য। ’ (সুরা: আনআম, আয়াত: ১৬২)

তাই প্রত্যেক মুসলমানের করণীয় হলো, যে কাজই সে করুক না কেন, তা কোরআন-সুন্নাহর সঙ্গে মিলিয়ে দেখা। সব কিছুতে ইসলামএ কথার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো ইসলামে ‘সব কিছু’ আছে। কোরআন বলছে,

وَنَزَّلْنَا عَلَيْكَ الْكِتَابَ تِبْيَانًا لِّكُلِّ شَيْءٍ وَهُدًى وَرَحْمَةً وَبُشْرَىٰ لِلْمُسْلِمِينَ

 ‘...আমি মুসলমানদের জন্য সব বিষয়ে ব্যাখ্যাদানকারী, পথনির্দেশক, অনুগ্রহ ও সুসংবাদস্বরূপ তোমার প্রতি কিতাব অবতীর্ণ করেছি। ’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ৮৯)

ইসলাম একমাত্র ও সর্বোত্তম জীবনব্যবস্থা। একজন মুসলমান ঘুম থেকে উঠা নিয়ে আবার ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিকসব কিছুর ওপর ইসলামের বিধান আরোপিত। ইসলামের আংশিক ধারণ করে, বিশেষ ক্ষেত্রে ইসলাম বর্জন করার সুযোগ ইসলামে নেই। ইরশাদ হয়েছে,

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا ادْخُلُوا فِي السِّلْمِ كَافَّةً وَلَا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ ۚ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِينٌ

 ‘হে ঈমানদাররা! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ করো এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ কোরো না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। ’ (সুরা: বাকারা, আয়াত: ২০৮)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

আমরা এই লিংকের https://ifatwa.info/26129/ ফতওয়া বলেছিলাম যে,নিজ ভাইয়ের মেয়ে, নিজ বোনের মেয়ে মাহরাম।তাদেরকে বিবাহ করা জায়েজ নেই।তবে চাচাতো ভাই/বোনের মেয়ে,খালাতো ভাই/বোনের মেয়ে,ফুফাতো ভাই/বোনের মেয়ে,মামাতো ভাই/বোনের মেয়ে মাহরাম নয়।তাদের সাথে পর্দা করতে হবে।তাদেরকে বিবাহ করা জায়েজ আছে।

আমাদের সমাজে পরিপূর্ণ রুপে ইসলাম পালন করা হয় না।যার ফলে  কিছু কিছু ক্ষেত্রে ইসলাম আমাদেরকে অধিকারে দিলেও সামাজ আমাদের সামনে প্রতিবন্ধক হয়ে দাড়ায়।প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে আপনার জন্য উক্ত মেয়েকে বিয়ে করার জায়েয আছে, তবে করতেই হবে এমনটি আবশ্যক নয়।সাথে সাথে মা বাবাকে অসন্তুষ্ট করে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করাটা উচিৎ নয়।

বিধায় আপনার জন্য করণীয় হলো,আপনি আপনার মা বাবাকে পুরো বিষয়টি ভালোভাবে বুঝানোর চেষ্টা করবেন বা স্থানীয় কোন আলেমের মাধ্যমে বুঝানোরে চেষ্টা করবেন,যদি তারা সম্মতি দেন তাহলে উক্ত মেয়েকে বিয়ে করাতে কোন সমস্যা নেই। এবং এতে আল্লাহ বরকত দান করবেন ইনশাআল্লাহ। তবে মাতা পিতা কে অসন্তুষ্ট করে বিয়ে না করাই শ্রেয়।কেননা এর ফলে পরবর্তিতে সংসার জীবনে অনেক সমস্যা দেখা দেয়, যা অশান্তির কারণ হয়ে দাড়ায়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...