আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
578 views
in পবিত্রতা (Purity) by (25 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।

অনেকদিন আগে আমার স্বামীর সাথে সহবাসের  পূর্বেই এক তালাক  বায়েন  পতিত  হয়েছিল।
তালাকের বাক্য ছিলো  এমনঃ আমাকে আর ফোন - ম্যাসেজ দিবা না,দিলে তালাক।

কিন্তু এখন  যখন তার  সাথে  আমার  পুনরায়  বিয়ের কথা চলতেছে,তখন আমার মাথায়  একটা সন্দেহ  ঢুকে যায়, আমি এই জায়গা থেকে বের হতে পারতেছি  না,আমি খুব  অস্বস্তিতে আছি,আমার ফ্যানের নিচেও  শরীর  ঘেমে  যাচ্ছে,টেনশনে।

আমার সমস্যা  টা হলোঃ

আমার খালি বারবার মনে হয় সে  অতীতে আমাকে এভাবে  বলে নাই তো,যতবার ফোন- ম্যাসেজ দিবা,ততবার তালাক।তাহলে তো পুনরায় বিয়ের পর ফোন- ম্যাসেজ দিলে আমি আবার  তালাক  হয়ে  যাবো।
আমি চিন্তায় মরেই যাচ্ছি।

আমি আমার  পূর্বের স্বামীকে ৫/৬ বার জিজ্ঞেস  করেছি,ও প্রতিবারই আত্নবিশ্বাসের সাথে বলেছে সে কখনোই যতবার- ততবার  উল্লেখ  করে নাই।
স্বাভাবিক  বাক্যে বলেছেঃ "ফোন- ম্যাসেজ দিবা না,দিলে তালাক।"
আমিও  আমার স্মৃতি থেকে যতদূর  মনে  করতে পারি,  তাই মনে হয় যে ও কখনো  যতবার  ততবার উল্লেখ  করে  নাই।

কিন্তু  তাও কেন আমি মন থেকে  চিন্তা  দূর করতে পারতেছি  না???
আমি অসুস্থ  হয়ে  যাইতেছি।
আমি কোন কাজ করতে পারতেছি না,আমি কিভাবে  নতুন করে কিছু  করবো,আমার ভিতর  যদি  শান্তিই না থাকে???

আপনি  আমাকে  দ্বীনি ভাই হিসেবে  সাহায্য  করেন,আমি কি করবো এখন???
কিভাবে  স্বাভাবিক  জীবনে ফিরে  আসবো?

আমার  পূর্বের স্বামী  ৬/৭ বার বলছে সে কখোনোই যতবার- ততবার বলে নাই, তা ও কেন আমার  বারবার এই চিন্তাই আসে।

মনে হয়  আমি পুনরায়  বিয়ের পর আবার  ওকে ফোন- ম্যাসেজ দিলেই না জানি তালাক হয়ে  যাই।

আমি কিভাবে  মুক্তি  পাবো?যা আসলে  বাস্তবে অতীতে  ঘটে নাই,তা নিয়ে  ভাবতে ভাবতে আমি শেষ।

★★★মুহতারাম, পুনরায়  বিয়ের পর কি আমি আমার স্বামীকে নির্ভয়ে ফোন-ম্যাসেজ দিবো???
আমার  তো কোন  ভয়ের কারন নাই তাই না???
আমাদের  বৈবাহিক  সম্পর্ক  তো  বৈধ, শরীয়তসম্মত, হালালই থাকবে বিয়ের পর ফোন- ম্যাসেজ দিলে তাই না???

আমার  চিন্তা  কেন আসে বারবার, আমি তো পাগলই হয়ে যাবো চিন্তায়।

1 Answer

0 votes
by (564,300 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


তালাক এটি খুবই মারাত্মক একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

এ শব্দটি নিয়ত থাকুক বা না থাকুক রাগে বলুক আর এমনিতেই বলুক স্ত্রীকে উদ্দেশ্য নিয়ে মুখ দিয়ে এ শব্দ বের হলেই তালাক পতিত হয়ে যায়। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: الطَّلَاقُ، وَالنِّكَاحُ، وَالرَّجْعَةُ “

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তিনি বিষয় এমন যে, ইচ্ছেকৃত করলে ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল, তালাক, বিবাহ এবং তালাকে রেজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২০৩৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৯৪}

তালাক পতিত হওয়ার ক্ষেত্রে স্ত্রীকে শুনিয়ে দেওয়া জরুরি নয়।
মুখ থেকে উচ্চারণ হয়ে গেলেই তালাক পতিত হয়ে৷ যায়।
(এক্ষেত্রে ভুলে/ঠাট্রা মূলক মুখ দিয়ে উচ্চারন হলেও তালাক হবে।)
(ফাতাওয়ায়ে রশিদিয়্যাহ ৪৭৭
ফাতাওয়ায়ে দারুল উলুম ৯/৪২
আযিযুল ফাতওয়া ১/২৫২)
,   
أما رکن الطلاق فہو ہذہ اللفظۃ الصادرۃ من الزوج۔ (الفتاویٰ التاتارخانیۃ ۴؍۳۷۷ رقم: ۶۴۷۱ زکریا)
সারমর্মঃ
তালাকের রুকন হলো এই শব্দ গুলো স্বামী থেকে বের হওয়া।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,   
তালাককে শর্তের সাথে সংযুক্ত করলে শর্ত পাওয়া গেলেই বক্তব্য অনুপাতে তালাক পতিত হয়ে যাবে।
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার উপর এক তালাক পতিত হবে। 
আপনি এরপর উক্ত স্বামীর কাছে শরীয়তের বিধান মেনে ফিরিয়ে যাওয়ার পর উক্ত শর্ত আবার পাওয়া গেলেও আর তালাক পতিত হবেনা।
তাই আপনি নির্ভয়ে স্বামীকে ফোন মেসেজ দিতে পারবেন। 
ভয়ের কোনো কারন নেই।

ألفاظ الشرط إن … ومتی ومتی ما ففي ہٰذہٖ الألفاظ إذا وجد الشرط انحلت الیمین وانتہت؛ لأنہا لا تقتضي العموم والتکرار، فبوجود الفعل مرۃ تم الشرط وانحلت الیمین فلا یتحقق الحنث بعدہ۔ (الفتاویٰ الہندیۃ ۱؍۴۱۵) 
সারমর্মঃ
শর্তের কিছু বাক্য আছে,যখন শর্ত পাওয়া যাবে,কসম ভেঙ্গে যাবে এবং শেষ হয়ে যাবে।
সেই শর্ত অনুপাতে হুকুম ফিরে আসবেনা।
কেননা এটি বারংবার কে চায়না।  

وشرط الحنث في قولہ إن خرجت مثلاً فأنت طالق أو إن ضربت عبدک فعبدي حر لمرید الخروج والضرب فعلیہ فورًا؛ لأن قصدہ المنع عن ذٰلک الفعل عرفًا ومدار الأیمان علیہ، وہٰذہ تسمی یمین الفور۔ (درمختار، الأیمان / باب الیمین في الدخول والخروج والسکنیٰ، مطلب في یمین الفور ۵؍۵۵۳-۵۵۴ زکریا، ۳؍۷۶۱-۷۶۲ دار الفکر بیروت، وکذا في البحر الرائق / باب الیمین في الدخول ۴؍۳۱۵ کوئٹہ)
সারমর্মঃ
কেহ যদি বলে তুমি যদি বের হও,,তাহলে তুমি তালাক, অথবা তুমি যদি তোমার গোলামকে প্রহার করো,তাহলে আমার গোলাম আযাদ,তাহলে এটির বিধান তাৎক্ষনিক হবে।
কেননা তার উদ্দেশ্য ছিলো ঐ কাজ থেকে সেই সময়েই বিরত রাখা,( সারাজীবন এর জন্য নয়)।

إذا وجد الشرط انحلت الیمین۔ (الفتاویٰ الہندیۃ ۱؍۴۱۵، کذا في الہدایۃ / باب الأیمان في الطلاق ۲؍۳۵۸، البحر الرائق / باب التعلیق ۴؍۸ کوئٹہ)
সারমর্মঃ
যখন শর্ত পাওয়া যাবে,কসম ভেঙ্গে যাবে। 

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,   
আপনি এরপর উক্ত স্বামীর কাছে শরীয়তের বিধান মেনে ফিরিয়ে যাওয়ার পর উক্ত শর্ত আবার পাওয়া গেলেও আর তালাক পতিত হবেনা।
তাই আপনি নির্ভয়ে স্বামীকে ফোন মেসেজ দিতে পারবেন। 
ভয়ের কোনো কারন নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...