আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
321 views
in খাদ্য ও পানীয় (Food & Drink) by (1 point)
আসসালামুয়ালাইকুম।

আমরা বাজার থেকে যে মুরগি/হাঁস কিনে খাই,তা আল্লাহর নাম ছাড়া জবাই করে এবং একজন এক হাতে জবাই করে থাকে অধিকাংশ ক্ষেত্রে -এরকমটা আমি দেখেছি। এটা খাওয়া কি হারাম হয়ে যায়? দাওয়াহ  এর জন্য এ সম্পর্কিত হাদিস /কুরআনের রেফারেন্স/ ফতোয়া দিলে মুনাসিব হয়।
জাযাকাল্লাহ।।

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

وَلِكُلِّ أُمَّةٍ جَعَلْنَا مَنسَكًا لِّيَذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ عَلَىٰ مَا رَزَقَهُم مِّن بَهِيمَةِ الْأَنْعَامِ ۗ فَإِلَـٰهُكُمْ إِلَـٰهٌ وَاحِدٌ فَلَهُ أَسْلِمُوا ۗ وَبَشِّرِ الْمُخْبِتِينَ

আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্যে কোরবানী নির্ধারণ করেছি, যাতে তারা আল্লাহর দেয়া চতুস্পদ জন্তু যবেহ কারার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে। (সূরা হজ্জ-৩৪)

মুরগী হাস বা অন্যান্য পশু-পাখির জবাই সহীহ হওয়ার জন্য শর্ত হচ্ছে, জবাইকারী মুসলমান কিংবা আহলে কিতাব তথা কোনো আসমানী কিতাবের অনুসারী এবং সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন বুঝমান ব্যক্তি হওয়া।

 জবাইয়ের শুরুতে আল্লাহ তাআলার নাম উচ্চারণ করা এবং কোনো ধারালো বস্তু দ্বারা গলার দিক থেকে জবাই করা এবং  শ্বাসনালি , খাদ্যনালি ও দুইি শাহরগের অন্তত একটি কেটে রক্ত প্রবাহিত করত জবাই সম্পন্ন করা।

 এসব শর্তের কোনোটি না পাওয়া গেলে জবাই সহীহ হবে না এবং সে প্রাণী খাওয়াও জায়েয হবে না। অবশ্য উপরোক্ত শর্ত পাওয়া যায়, এমন কেউ যদি জবাইয়ের সময় আল্লাহ নাম উচ্চারণ করতে ভুলে যায় তাহলে জবাই সহীহ হবে। তবে কেউ যদি ইচ্ছাকৃত আল্লাহ্ নাম ছেড়ে দেয় তাহলে উক্ত জবাই সহীহ হবে না।

(সূরা মায়েদা (৫) : ৩-৫; সূরা আনআম (৬) : ১২১; সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৫০৩; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৫৮৮৮; মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, বর্ণনা ৮৫৭৮, ৮৫৪১ ও ৮৫৫৬; তাফসীরে তাবারী ৪/৪৪০; আহকামুল কুরআন, জাসসাস ৩/৭)

আমাদের দেশে প্রচলিত দোকান মালিক ও কর্মচারী উভয়েই সাধারণত মুসলিম হয়ে থাকে। তাই জবাইয়ের ক্ষেত্রে তাদের সম্পর্কে বিসমিল্লাহ না বলার ধারণা পোষণ করা অর্থহীন।

শরিয়তের দৃষ্টিতে সন্দেহের ভিত্তিতে কোনো কিছু হারাম করা বা নাজায়েজ বলার কোনো সুযোগ নেই।

সুতরাং সচরাচর মুসলিম দোকানগুলো থেকে গুরু, খাসি বা মুরগির মাংস কিনে খেতে কোনো সমস্যা নেই। তবে যদি কোনো দোকানের ব্যাপারে নিশ্চিতভাবে জানা যায় যে, সেখানে বিসমিল্লাহ ব্যতীত জন্তু জবাই করা হয়, তাহলে সেখানকার মাংস খাওয়া কোনোক্রমেই বৈধ হবে না। (রাদ্দুল মুহতার: ৬/২৯৯); ফাতাওয়া তাতার খানিয়া: ১৭/৪০১; আহসানুল ফাতাওয়া: ৮/১০৬)

হাদিস শরিফে এসেছে, আয়েশা রাযি. বলেন, একদল লোক নবী রাসুলুল্লাহ -কে জিজ্ঞেসা করল, ‘এক নও মুসলিম সম্প্রদায় আমাদের নিকট গোশত নিয়ে আসে। আমরা জানি না যে, তার জবেহকালে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা হয়েছে কি না। তিনি বললেনسَمُّوا عَلَيهِ أَنتُم وَكُلُوهُতোমরা আল্লাহর নাম নিয়ে তা ভক্ষণ কর। (বুখারি ২০৫৭, ৫৫০৭ )

উক্ত হাদিসের ব্যাখ্যায় হাফেজ ইবন হাজার আসকালানী রহ. বলেন,

ويستفاد منه أن كل ما يوجد في أسواق المسلمين محمول على الصحة ، وكذا ما ذبحه أعراب المسلمين…  لأن المسلم لا يظن به في كل شيء إلا الخير ، حتى يتبين خلاف ذلك

এই হাদিস থেকে বুঝা যায়, মুসলমানদের বাজারে যে গোশত পাওয়া যায় তা হালাল হিসেবে গণ্য হবে। কেননা, মুসলমানের সব বিষয়ে ততক্ষণ পর্যন্ত ভালো ধারণা রাখতে হয় যতক্ষণ পর্যন্ত এর বিপরীত স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়। (ফাতহুল বারী ৯/৭৮৬)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

সুতরাং মুসলিম দেশের দোকান থেকে গোশত খাওয়া গোনাহের কাজ বলে বিবেচিত হবে না। এক্ষেত্রে সন্দেহ প্রবণতা পরিহার করা উচিত। মানুষকে, সমাজকে ও পরিবেশকে বিশ্বাস করাই স্বাভাবিকতা। তবে কোনো দোকানের ব্যাপারে বিসমিল্লাহ বলে জবাই না করার স্পষ্ট  প্রমাণ পাওয়া গেলে নিশ্চয়ই সেখান থেকে জবাইকৃত কোন প্রানীর গোস্ত খাওয়া জায়েয হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...