বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
পানিতে ফু দেওয়া কুরআন সুন্নাহ থেকে সরাসরি প্রমাণিত নয়।এবং কুরআন সুন্নাহ থেকে সরাসরি প্রমাণিত মনে করাও যাবে না।করলে তা অবশ্যই বিদ'আত হবে।
(২)
না, এমন কোনো বিবরণ বিশুদ্ধ সনদে প্রমাণিত নয়।হ্যা তারা রুকইয়াহ করেছেন
(৩)
সমস্ত কুরআনে কারীম-ই মু'মিনের জন্য হেদায়ত, শে'ফা ও রহমত স্বরূপ।
আল্লাহ তা'আলা বলেন-
ﻭَﻧُﻨَﺰِّﻝُ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻘُﺮْﺁﻥِ ﻣَﺎ ﻫُﻮَ ﺷِﻔَﺎﺀ ﻭَﺭَﺣْﻤَﺔٌ ﻟِّﻠْﻤُﺆْﻣِﻨِﻴﻦَ الخ
আমি কোরআনে এমন বিষয় নাযিল করি যা রোগের সুচিকিৎসা এবং মুমিনের জন্য রহমত।(সূরা বনী ইসরাঈল-৮২)
ﻗُﻞْ ﻫُﻮَ ﻟِﻠَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍ ﻫُﺪًﻯ ﻭَﺷِﻔَﺎﺀٌ
বলুন, এটা বিশ্বাসীদের জন্য হেদায়েত ও রোগের প্রতিকার।(সূরা হা-মীম সেজদা-৪৪)
কুরআনে কারীম অন্তর এবং শরীর উভয়ের জন্যই শে'ফা স্বরূপ।এ সম্পর্কে আল্লামা শাওকানী রাহ বলেন,
" ﺍﺧﺘﻠﻒ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﻌﻠﻢ ﻓﻲ ﻣﻌﻨﻰ ﻛﻮﻧﻪ ﺷﻔﺎﺀ ﻋﻠﻰ ﻗﻮﻟﻴﻦ : ﺍﻷﻭﻝ : ﺃﻧﻪ ﺷﻔﺎﺀ ﻟﻠﻘﻠﻮﺏ ﺑﺰﻭﺍﻝ ﺍﻟﺠﻬﻞ ﻋﻨﻬﺎ ﻭﺫﻫﺎﺏ ﺍﻟﺮﻳﺐ [ ﺃﻱ : ﺍﻟﺸﻚ ] ﻭﻛﺸﻒ ﺍﻟﻐﻄﺎﺀ ﻋﻦ ﺍﻷﻣﻮﺭ ﺍﻟﺪﺍﻟﺔ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﺳﺒﺤﺎﻧﻪ .
ﺍﻟﻘﻮﻝ ﺍﻟﺜﺎﻧﻲ : ﺃﻧﻪ ﺷﻔﺎﺀ ﻣﻦ ﺍﻷﻣﺮﺍﺽ ﺍﻟﻈﺎﻫﺮﺓ ﺑﺎﻟﺮﻗﻰ ﻭﺍﻟﺘﻌﻮﺫ ﻭﻧﺤﻮ ﺫﻟﻚ .
ﻭﻻ ﻣﺎﻧﻊ ﻣﻦ ﺣﻤﻞ ﺍﻟﺸﻔﺎﺀ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻤﻌﻨﻴﻴﻦ
কুরআন কি প্রকারের শে'ফা দানকারি? সে সম্পর্কে দু'টি মতামত পাওয়া যায়।যথাঃ-
(এক) কুরআন অন্তরের বক্রতা ও অজ্ঞতা এবং আল্লাহর মা'রেফত অর্জনের প্রতিবন্ধকতাকে দূর করে দেয়।
(দুই)কুরআন শরঈ ঝাড়-ফুক ও তাবিজের মাধ্যমে শরীরের বাহ্যিক রোগের শে'ফা।(ফাতহুল ক্বাদির-৩/৩৬২)
হযরত আবু-সাঈদ খুদরী রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,একদল সাহাবী কোন এক সফরে যাত্রা করেন। তারা এক আরব গোত্রে পৌঁছে তাদের মেহমান হতে চাইলেন। কিন্তু তারা তাদের মেহমানদারী করতে অস্বীকার করল। সে গোত্রের সরদার বিচ্ছু দ্বারা দংশিত হল। লোকেরা তার (আরোগ্যের) জন্য সব ধরনের চেষ্টা করল। কিন্তু কিছুতেই কোন উপকার হল না। তখন তাদের কেউ বলল, এ কাফেলা যারা এখানে অবতরণ করেছে তাদের কাছে তোমরা গেলে ভাল হত। সম্ভবত, তাদের কারো কাছে কিছু থাকতে পারে। ওরা তাদের নিকট গেল এবং বলল, হে যাত্রীদল! আমাদের সরদারকে বিচ্ছু দংশন করেছে, আমরা সব রকমের চেষ্টা করেছি, কিন্তু কিছুতেই উপকার হচ্ছে না। তোমাদের কারো কাছে কিছু আছে কি? তাদের (সাহাবীদের) একজন বললেন, হ্যাঁ, আল্লাহর কসম আমি ঝাড়-ফুঁক করতে পারি। আমরা তোমাদের মেহমানদারী কামনা করেছিলাম, কিন্তু তোমরা আমাদের জন্য মেহমানদারী করনি। কাজেই আমি তোমাদের ঝাড়-ফুঁক করব না, যে পর্যন্ত না তোমরা আমাদের জন্য পারিশ্রমিক নির্ধারণ কর। তখন তারা এক পাল বকরীর শর্তে তাদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হল। তারপর তিনি গিয়ে (الْحَمْدُ للهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ) ‘‘আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন’’ (সূরা ফাতিহা) পড়ে তার উপর ফুঁ দিতে লাগলেন। ফলে সে (এমনভাবে নিরাময় হল) যেন বন্ধন হতে মুক্ত হল এবং সে এমনভাবে চলতে ফিরতে লাগল যেন তার কোন কষ্টই ছিল না। (বর্ণনাকারী বলেন,) তারপর তারা তাদের স্বীকৃত পারিশ্রমিক পুরোপুরি দিয়ে দিল। সাহাবীদের কেউ কেউ বলেন, এগুলো বণ্টন কর। কিন্তু যিনি ঝাড়-ফুঁক করেছিলেন তিনি বললেন এটা করব না, যে পর্যন্ত না আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট গিয়ে তাঁকে এই ঘটনা জানাই এবং লক্ষ্য করি তিনি আমাদের কী নির্দেশ দেন। তারা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে এসে ঘটনা বর্ণনা করলেন। তিনি [নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ] বলেন, তুমি কিভাবে জানলে যে, সূরা ফাতিহা একটি দু‘আ? তারপর বলেন, তোমরা ঠিকই করেছ। বণ্টন কর এবং তোমাদের সাথে আমার জন্যও একটা অংশ রাখ। এ বলে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসলেন।(সহীহ বোখারী-২২৭৬,সহীহ মুসলিম-২২০১) ( শেষ)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
কুরআন পড়ে যেহেতু সাহাবাগণ থুথু নিক্ষেপণ করেছেন, সেই জন্য কিছু কিছু বুজুর্গ উলামাগণ এর উপর কিয়াস করে পানি বা তেলে ফুক দিয়ে চিকিৎসা করে থাকেন।
সুতরাং ঈমান আকিদা বিশুদ্ধ থাকলে, এভাবে পানি বা তেলে ফুক দেওয়া নাজায়েয হবে না।
(৪)
আপনি ঐ হাদীসের ক্রমিক নাম্বার সহ হাদীসের মূল ইবারত আমাদেরকে দিবেন।ইনশা আল্লাহ, তখন আমরা এর ইতিবৃত্ত বলে দেবো।
(৫)
ফজরের সুন্নতকে জোহরের পূর্বে আদায় করার কথা শরীয়তে বর্ণিত রয়েছে।তবে জোহরের ওয়াক্ত চলে যাওয়ার পর মাস কিংবা বৎসর চলে গেলে, তখন কিন্তু সেগুলো আদায় করা জরুরী নয়।হ্যা সুন্নত কাযা হলে সেই গুলিকে কাযা করা সুন্নত।তবে ফরয বা ওয়াজিব নয়।