আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
205 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (29 points)
১) শরীয়া আইনে হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। শরীয়া মোতাবেক হিজাব পরতে হয়। যে নারীরা হিজাব পরতে চায় না তাদেরও পরতে হয়৷ আলহামদুলিল্লাহ।
কিন্তু এই বিষয় টা অনেক মডারেট মুসলিম ভালো চোখে দেখছে না। তারা বলেঃ বল প্রয়োগ কেন করা হবে... হিজাব পরা না পরা যার যার ব্যাপার। কেউ হিজাব না পরলে সে জন্য সে গুনাহগার হবে কিন্তু অন্যরা হচ্ছে না তাহলে কেন তাকে বাধ্য করা হবে। এটা Extremism. নারীর কোনো স্বাধীনতা নেই।

তারা আরও বলেঃ ইসলাম কারোর উপর জোর করে কিছু চাপিয়ে দেয় নি তাই নারীদের বাধ্য করা যাবে না হিজাব পরতে।

তাদের এইসব কথার প্রতুত্ত্যরে কি উত্তর দিলে সবচেয়ে সুন্দরভাবে ব্যাপার টা বোঝানো যাবে শাইখ?

২) অনেক আগর বাতি হিন্দুরা বানিয়ে থাকে বলে তাদের দেব-দেবীর ছবি দেয়া থাকে। সেগুলো সুঘ্রাণের জন্য ব্যবহার করা যাবে কি?

1 Answer

0 votes
by (58,500 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করার ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা বলেন-

كُنتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَتَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنكَرِ وَتُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ ۗ وَلَوْ آمَنَ أَهْلُ الْكِتَابِ لَكَانَ خَيْرًا لَّهُم ۚ مِّنْهُمُ الْمُؤْمِنُونَ وَأَكْثَرُهُمُ الْفَاسِقُونَ

তোমরাই হলে সর্বোত্তম উম্মত, মানবজাতির কল্যানের জন্যেই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা সৎকাজের নির্দেশ দান করবে ও অন্যায় কাজে বাধা দেবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে। আর আহলে-কিতাবরা যদি ঈমান আনতো, তাহলে তা তাদের জন্য মঙ্গলকর হতো। তাদের মধ্যে কিছু তো রয়েছে ঈমানদার আর অধিকাংশই হলো পাপাচারী। ( সূরা আলে ইমরান, আয়াত ১১০ )

 

মহিলাদের জন্য পর্দা করা ফরয।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ   

 

قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠]

 

وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١]

 

মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

 

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}

 

يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

 

হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}

 

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ

 

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}

 

আগরবাতি একটি সুগন্ধি। এটার ব্যবহার জায়েজ আছে।

    

হযরত না'ফে রাহ বলেন,

 

ﻋَﻦْ ﻧَﺎﻓِﻊٍ ﻗَﺎﻝَ : ﻛَﺎﻥَ ﺍﺑْﻦُ ﻋُﻤَﺮَ ﺇِﺫَﺍ ﺍﺳْﺘَﺠْﻤَﺮَ ﺍﺳْﺘَﺠْﻤَﺮَ ﺑِﺎﻟْﺄَﻟُﻮَّﺓِ ﻏَﻴْﺮَ ﻣُﻄَﺮَّﺍﺓٍ ﻭَﺑِﻜَﺎﻓُﻮﺭٍ ﻳَﻄْﺮَﺣُﻪُ ﻣَﻊَ ﺍﻟْﺄَﻟُﻮَّﺓِ ﺛُﻢَّ ﻗَﺎﻝَ ﻫَﻜَﺬَﺍ ﻛَﺎﻥَ ﻳَﺴْﺘَﺠْﻤِﺮُ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ .

 

হযরত ইবনে উমর (রাযিঃ) অভ্যস্ত ছিলেন যে, যখন তিনি সুগন্ধির ধোয়া নিতেন, তখন সুগন্ধিযুক্ত কাঠের উদ (চন্দন কাঠ) ধোয়া নিতেন। তিনি এর সাথে কোন কিছু মিলাতেন না। আবার (কখনো) চন্দন কাঠের সঙ্গে কর্পূর ছিটিয়ে দিতেন। তারপর বলতেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ রকমভাবে সুগন্ধি জ্বালাতেন।

সহীহ মুসলিম-২২৫৪(শামেলা) (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৫৬৮৮, ইসলামিক সেন্টার ৫৭১৯)

মিশকাতুল মাসাবিহ-৪৪৩৬


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

 

১. পর্দা করা আল্লাহ তায়ালার বড় একটি বিধান। তাই অবশ্যই অন্যকে এই বিধানের আদেশ ও সামর্থ্য থাকলে বাধ্য করাও যাবে। হ্যাঁ, নারীদের স্বাধীনতা অবশ্যই আছে তা ইসলামের গন্ডির ভিতরে থেকে। আল্লাহ তায়ালার বিধান লঙ্ঘন করার অধিকার তাদের নেই।

 

২. হ্যাঁ, আগর বাতি সুঘ্রানের জন্য ব্যবহার করা যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...