দীর্ঘদিন ধরে উদবিগ্নতার সাথে লক্ষ্য করছি যে, আইওএম এ কোনো ফতোয়া জিজ্ঞেস করলে গুরুত্বের সাথে জবাব দেওয়া হয় না, প্রশ্নটির মৌলিকত্বের দিকে লক্ষ্য না করে আগের কোনো উত্তর হুবহু বা অধিকাংশ অংশ কপিপেস্ট করে ধরিয়ে দেওয়া হয় । এটা খুবই হতাশাজনক ও হয়রানিমূলক। আমি নিজে বেশ কয়েকবার এটার শিকার হয়েছি, এবং অন্যকেও হতে দেখেছি। যথাযথ সম্মান প্রদর্শনপুর্বক বিনয়ের সাথে বলছি যে, এই ধারা চলমান থাকলে কর্তৃপক্ষকে কমপ্লেন জানাতে বাধ্য হব।
যেমন আমার ইতঃপূর্বে প্রভিডেন্ট ফান্ড বিষয়ে একটা প্রশ্ন করেছি। যেটা একটা স্বতন্ত্র ইস্যু, স্বতত্র যুক্তি দেখানো হয়েছে, এক আলেমেরও রেফারেন্স দেওয়া হয়েছে। সেগুলোকে পাশ কাটিয়ে, কোনো ধরণের সন্তোষজনক ব্যাখ্যা না দিয়েই একটা আগের ফতোয়া কপি পেস্ট করে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফতোয়া লিখতে যেমন সময় লাগে, একটা প্রশ্ন করতেও তেমনি সময় লাগে, শ্রম লাগে, প্রশ্ন করার পর অপেক্ষার প্রহর গুণতে হয় উত্তরের জন্য। এতকিছুর পরে যখন একটা দায়সারা জবাব বা আগের কোন জবাবের কপি ধরিয়ে দেওয়া হয় তখন তা মনোকষ্টের কারণ হয়। আগের সেই ফতোয়া আমি দেখেছি, তার পরেও প্রশ্নটা করতে হয়েছে কারণ সেটার উত্তর আমার প্রশ্নে যথেষ্ট নয়। এবার আসি আপনার ফতোয়ায় ব্যবহৃত কিছু টার্মে। আপনি বলেছেন, বাধ্যতামূলক ইনকাম ট্যাক্স কেটে রাখা। এই ইনকাম ট্যাক্স কী জিনিস? আমি তো কোনো ইনকাম ট্যাক্সের কথা বলিনি, কোনো চাকরিতেই কোনো ইনকাম ট্যাক্সের প্রভিডেন্ট দেওয়াও হয় না। বেতন যদি ৫০০ টাকা হয় সেখান থেকে প্রতি মাসে বাধ্যতামূলক ৫০ টাকা কেটে রাখা হয়। অর্থাৎ , এটা তার ইনকাম থেকে কাটা হয় পরে সুদসহ দেওয়ার জন্য (যদি না সে সুদ না নেওয়ার কথা উল্লেখ করে), এটা কোনো ইনকাম ট্যাক্স নয়। যা বলছিলাম, এই টাকাটা চাকরি শেষে সুদ সহ পরিশোধ করা হয়। এখানে সুদ নিতে তাকে বাধ্য করা হয় না, তাকে অপশন দেওয়া হয় যে আপনি চাইলে শুধুমাত্র আপনার সঞ্চিত টাকাটাও নিতে পারবেন, আবার সুদ সহ যা বর্ধিত হয়েছে সেটাও নিতে পারবেন। সেখানে অনেক মানুষ সুদসহটাই নেয়, ্কারণ যেহেতু আলেমরা প্রভিডেন্ট ফাণ্ডকে (জিপিএফ) জায়েজ বলেছেন। এখন প্রশ্ন হলো, যদি বাধ্যতামূলক কর্তন করাটাই এটা জায়েজ হওয়ার আসল কারণ হয়ে থাকে তাহলে যতক্ষণ বাধ্য ছিল ততক্ষণ জায়েজ থাকত, যখন ঐচ্ছিক করে দেওয়া হলো তখন নাজায়েজ হওয়ার কথা ছিল (অর্থাৎ, চাকরির মধ্যেই তার এপ্লিকেশন দেওয়ার সুযোগ থাকে যে আমার প্রভিডেন্ট ফান্ডে যেন সুদ যোগ না করা হয়, এবং চাকরি শেষে সে শুধু সঞ্চিত টাকাটুকুই নিতে পারে) । কিন্তু তা না হয়ে কেন তখনও জায়েজ হচ্ছে (হচ্ছে তো, তাই না?)? তারমানে বোঝা যাচ্ছে, বাধ্যতামূলকটা বিষয় নয়, বিষয় হচ্ছে মালিকানা বুঝে পাওয়া-না পাওয়া। প্রতি মাসের পুরো বেতনটা যদি সরকার নিজে কর্তন না করে হাতে দেওয়ার পর বলত ৫০ টাকা বাধ্যতামূলকভাবে ব্যাংকে জমা দিতে হবে (অর্থাৎ, সরকার আমাকে মালিক বানিয়ে দেওয়ার পর জমা দিতে বলছে) , তাহলে কি চাকরি শেষে বর্ধিত টাকাটা নেওয়া আমার জন্য জায়েজ হত? আমার জানামতে হত না। তাহলে কী দাঁড়াল, মালিকানা বুঝে না পাওয়া্র শর্তে বাধ্যতামূলক কিংবা ঐচ্ছিক যেভাবেই টাকা কাটানো হোক না কেন তার বর্ধিত অংশ গ্রহণ করা জায়েজ? ফলত ঐচ্ছিকভাবে বেশি কাটালেও তার লাভ গ্রহণ করাটাও জায়েজ হওয়াটাই যৌক্তিক নয় কী? দুঃখজনক যে,এই কথাগুলো আগেও বলেছিলাম অনেক কষ্ট করে, কিন্তু আপনার এড়িয়ে যাওয়ার কারণে আবার রিপিট করতে হলো। আশা করি, এবার টু দ্য পয়েন্ট উত্তর পাব। দয়া করে ফোন করতে বলবেন না, আমার পক্ষে সেটা সঙ্গত কারণে সম্ভব না।
(বিঃদ্রঃ আগের ফাতওয়ায় সবশেষে বলেছেন, আমার বক্তব্য সঠিক। অথচ আমার বক্তব্য আপনার বক্তবের বিপরীত ছিল। আপনি বলেছেন, সরকার বাধ্যতামূলক কর্তন করলে তার লাভসহ মূলটুকু সুদ নয়, আর আমি বলছি টাকাটা আমার হাতে আসার আগেই কর্তন হওয়ার শর্তে ঐচ্ছিকভাবে বেশি কাটালেও তার লাভটুকুও সুদ নয়)