আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
284 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (23 points)

আসসালামু আলাইকুম
একটি মাসআলা বিস্তারিত জানার প্রয়োজন

jekabazer.com(জেকা বাজার) এটি হলো অনলাইন ভিত্তিক একটি বিজনেস প্লাটফর্ম।। এখানে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান।। এখানে কাজের ধরন হলো(আমি বিস্তারিত জানি না,তবে যা জানি সেটা এরকম) আইডির মাধ্যমে বিজনেস করা অর্থাৎ যে এখানে কাজ করতে ইচ্ছুক তাকে প্রথমে টাকার মাধ্যমে কিছু আইডি ক্রয় করতে হবে।। যেমন ধরুন ৬৫ হাজার টাকার মাধ্যমে ৫০ টি আইডি কিনতে হবে (আইডি কিনতে প্রয়োজন ১.ভোটার আইডির কফি ২.এক কফি ছবি ৩.জিমেইল আইডি ৪.পুর্ণ নাম ঠিকানা,মোবাইল নাম্বার)
৬৫ হাজার টাকা দিয়ে আইডি কিনার দ্বিতীয় দিন-ই আইডির মালিককে ১৭০০০ টাকা ফেরত দিয়ে দেওয়া হয়।আর বাকী টাকাগুলো তুলতে তাকে তাদের ঐ প্লাটফর্মে কাজ করতে হবে।। মুলধন তোলার পরে যা ইনকাম হবে সেগুলো পুরোটাই তার লাভ।।সেটা হলো এভাবে যে,প্রত্যেক দিন তাদের প্রত্যেকটি আইডিতে এ্যাড ভিউ করতে হবে।প্রতি এ্যাড ভিউ ১০ টাকা।।তো প্রত্যেকদিন ৫০ টি আইডিতে যদি আমি এই কাজ করি তাহলে ৫০×১০=৫০০ টাকা আমার ডেইলি ইনকাম। আর মাসে ১৫০০০ টাকা।
আর এই ফুল টাকাটা আমার  মাস শেষে তুলতে হবে তবে আমি ফুল ১৫০০০ টাকা তুলতে পারবো না কারন তারা এখান থেকে কিছু টাকা ভ্যাট হিসেবে আর কিছু টাকা তারা শপিং ক্যাশ(যেটা আমার আইডির মধ্যেই থাকবে।। সেটা দিয়ে শুধু আমি তাদের নির্দিষ্ট দোকান থেকে মার্কেট করতে পারবো) হিসেবে কেটে রাখবে।।সর্বশেষ আমি মোট ১৩০০০+ পাবো।।

এখন জানার বিষয় হলো এই ব্যবসা করা কি বৈধ হবে??
না হলে কারন কি।।

জাজাকাল্লাহ

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!   
এখানে মূল বিষয় হলো এ্যাড দেখে টাকা ইনকাম।
যদি এখানে নারীর ছবি,বাদ্য-বাজনার ব্যবহার থাকে,তাহলে কোনো ভাবেই উক্ত ইনকাম জায়েজ নেই।
,
আর যদি সেসব এ্যাড এর ভিতর নারীর ছবি,বাদ্য-বাজনার ব্যবহার না থাকে,অন্য কোনো শরীয়ত বিরোধী কাজ না থাকে, তাহলে উক্ত পদ্ধতিতে ইনকাম জায়েজ আছে।
,
https://ifatwa.info/4701/ ফতোয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,
অনলাইনে অনেক ধরনের ইনকাম সোর্স রয়েছে,যদি এতে নাজায়েজ এর কোনো কার্যক্রম না থাকে,তাহলে তা নাজায়েজ হবেনা।
,
★অনলাইনে এড দেখার মাধ্যমে টাকা ইনকাম করার বিধানঃ   
যদি হালাল উপায়ে তাদের কার্যক্রম পরিচালিত হয়, আর কোন নাজায়েজ বিষয় এতে সম্পৃক্ত না থাকে, তাহলে এভাবে অনলাইনে যেকোনো সাইট থেকে টাকা উপার্জন করতে শরয়ী কোন বিধিনিষেধ নেই। জায়েজ আছে। [জামিয়া বিন্নুরিয়া করাচি, পাকিস্তান, ফাতওয়া বিভাগ, ফাতওয়া নং-১০৫০৪]

★ফাতাওয়ায়ে আলমগীরীতে আছে  

وَأَمَّا شَرَائِطُ الصِّحَّةِ فَمِنْهَا رِضَا الْمُتَعَاقِدِينَ. وَمِنْهَا أَنْ يَكُونَ الْمَعْقُودُ عَلَيْهِ وَهُوَ الْمَنْفَعَةُ مَعْلُومًا عِلْمًا يَمْنَعُ الْمُنَازَعَةَ فَإِنْ كَانَ مَجْهُولًا جَهَالَةً مُفْضِيَةً إلَى الْمُنَازَعَةِ يَمْنَعُ صِحَّةَ الْعَقْدِ وَإِلَّا فَلَا. (الفتاوى الهندية، كِتَابُ الْإِجَارَةِ، الْبَابُ الْأَوَّلُ فِي تَفْسِيرِ الْإِجَارَةِ وَرُكْنِهَا الخ-4/411)
যার সারমর্ম হলো মুতায়াকিদাইন (ক্রেতা,বিক্রেতা) উভয়ের সন্তুষ্টি শর্ত।
এবং লাভের অংশ নির্দিষ্ট হতে হবে।   
,
★তবে কেহ কেহ এর বিপরিত মত প্রকাশ করেছেন।

তারা বলছেন যে এখানে যারা যারা বিজ্ঞাপন প্রচারের উদ্দেশ্য টাকা দিয়েছেন, তাদের উদ্দেশ্য হলো এর দ্বারা সম্ভাব্য ২০.০০০ কাস্টমার আপনার সাইটে আসবে, আপনার ব্যবসা সম্পর্কে জানবে,আপনার পন্য সেবা গ্রহন করবে । 
কিন্তু আপনার বিজ্ঞাপনে যারা যারা ক্লিক করলো, তাদের আপনার বিজনেস সম্পর্কে  কোনো ধারণা, আগ্রহ, বা প্রয়োজন কোনোটাই নাই।
আপনি এতে ক্ষতিগ্রস্থ হলেন।
  এই ক্ষতির জন্য কারা দায়ী?
যারা এডস ক্লিকের কাজ করছে,তারা।
সুতরাং সেই ব্যাক্তির ক্ষতির জন্য আপনিও দায়ী।  
সুতরাং এটা নাজায়েজ । 
,
★★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,বোন! 
সেসব এ্যাড এর ভিতর মহিলাদের ছবি/বাদ্য-বাজনা থাকলে তো এ ধরনের ইনকাম স্পষ্ট নাজায়েজ। 
,
আর ছবি/বাদ্য-বাজনা না থাকলে যেহেতু এক্ষেত্রে জায়েজ ও নাজায়েজ উভয় হুকুম রয়েছে।
উলামাদের মতবিরোধ রয়েছে,সুতরাং যদিও এটার হুকুম এখন হালকা হয়ে যাবে,তাই এই কাজ করে টাকা উপার্জনের সুযোগ থাকলেও সতর্কতামূলক এহেন কাজ করা থেকে বিরত থাকাই উচিত।        

হাদীস শরীফে এসেছে   

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، أَنْبَأَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ مُجَالِدٍ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهُ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " الْحَلاَلُ بَيِّنٌ وَالْحَرَامُ بَيِّنٌ وَبَيْنَ ذَلِكَ أُمُورٌ مُشْتَبِهَاتٌ لاَ يَدْرِي كَثِيرٌ مِنَ النَّاسِ أَمِنَ الْحَلاَلِ هِيَ أَمْ مِنَ الْحَرَامِ فَمَنْ تَرَكَهَا اسْتِبْرَاءً لِدِينِهِ وَعِرْضِهِ فَقَدْ سَلِمَ وَمَنْ وَاقَعَ شَيْئًا مِنْهَا يُوشِكُ أَنْ يُوَاقِعَ الْحَرَامَ كَمَا أَنَّهُ مَنْ يَرْعَى حَوْلَ الْحِمَى يُوشِكُ أَنْ يُوَاقِعَهُ أَلاَ وَإِنَّ لِكُلِّ مَلِكٍ حِمًى أَلاَ وَإِنَّ حِمَى اللَّهِ مَحَارِمُهُ " . حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ زَكَرِيَّا بْنِ أَبِي زَائِدَةَ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ بِمَعْنَاهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَقَدْ رَوَاهُ غَيْرُ وَاحِدٍ عَنِ الشَّعْبِيِّ عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ .
নুমান ইবনু বাশীর (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমি বলতে শুনেছিঃ হালালও সুস্পষ্ট, হারামও সুস্পষ্ট এবং এ দুটির মাঝে অনেক সন্দেহজনক বিষয় আছে। তা হালাল হবে না হারাম হবে সেটা অনেকেই জানে না। যে লোক এই সন্দেহজনক বিষয়গুলো নিজের দ্বীন এবং মান-ইজ্জাতের হিফাযাতের উদ্দেশ্যে ছেড়ে দেবে সে নিরাপদ হল। যে লোক এর কিছুতে লিপ্ত হল তার হারাম কাজে লিপ্ত হওয়ারও সংশয় থেকে গেল। (উদাহরণস্বরূপ) নিষিদ্ধ এলাকার আশেপাশে যে লোক পশু চড়ায়, তার এতে প্রবেশের ভয় আছে। জেনে রাখ! প্রতিটি সরকারেরই কিছু সংরক্ষিত এলাকা থাকে। সাবধান! আল্লাহ্ তা'আলার সংরক্ষিত এলাকা হল তার হারাম করা বিষয়গুলো'।
- সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩৯৮৪),বুখারী, মুসলিম
হান্নাদ ওয়াকী হতে, তিনি যাকারিয়্যা ইবনু আবী যাইদা হতে, তিনি শা'বী হতে, তিনি নুমান ইবনু বাশীর হতে, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে অনুরূপ অর্থে হাদীস বর্ণনা করেছেন। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। একাধিক বর্ণনাকারী নুমান (রাঃ)-এর সূত্রে একই বিষয়বস্তু সম্বলিত হাদীস বর্ণনা করেছেন।
(তিরমিজি ১২০৫) 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...