আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
211 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (101 points)
reopened by
আসসালামুআলাইকুম,

১)আমার হাতের পিঠে কেটে যায় এবং রক্ত প্রবাহিত হয়।প্রবাহিত রক্ত নাপাক এটা জানি ।ক্ষত স্থানের দৈর্ঘ্য সামান্য বেশি হলেও বেশ গভীর ক্ষত তাই সেখানে পানি আর রক্ত জমতেছে  আপনা আপনি।এমতাবস্থায় কি ওযু গোসলের সময় হাত পানি দ্বারা না ভেজালে হবে?

২)আর যেই রক্ত বা পানি জমতেছে তা তো আর নাপাক নয়, কারন তা প্রবাহিত নয়।কিন্তু যদি পানি দ্বারা হাত ধোয়ার কারনে ওই জমা রক্ত বা পানি ধুয়ে যায় তাহলে ওযু ভেঙ্গে যাবে কি ?আর হাত ধোয়ার ফলে যে পানি গড়ায় যাবে সেই পানি কি নাপাক?

৩) আর ক্ষতস্থানে জমে থাকা রক্ত বা পানি কাপড়ে লাগলে কাপড় নাপাক হবে কি?

৪)নাপাক কাপড় ধৌত করার সময় যদি সেই কাপড় টাইলস ফ্লোরের মেঝেতে রেখে পানি ঢালি এবং চিপে ফেলে,এরকম তিনবার করলে কি কাপড় পাক হবে? আর প্রথমবার পানি ঢেলে,চিপে নেয়ার পর দ্বিতীয়বার ফ্লোরে কাপড়টা রাখার আগে ফ্লোর ধোয়া কি আবশ্যক?কারন এতে তো প্রচুর পানি লাগবে।

৫)বাথরুমের টাইলসের মেঝেতে পেশাব পড়লে সেই মেঝে পানি দ্বারা কিভাবে ধুলে পাক হবে?

৬)আর নাপাক কাপড় একবার ধুয়ে চিপে নিলে কি হাত নাপাক ই থাকে?মানে একবার কাপড় ধুয়ে চিপলাম,আরো দুবার ধুয়ে চিপতে হবে কিন্তু একবার চিপার পর পানি নিতে মগ বা ট্যাপ ধরতে হবে।এমতাবস্থায় কি হাত ধুয়ে নিতে হবে মগ বা ট্যাপ ধরার আগে?

1 Answer

0 votes
by (680,160 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
শরীয়তের বিধান হলো যদি কাহারো শরীরের অধিকাংশ জায়গা ক্ষত হয়,তাহলে সে তায়াম্মুম করিবে।
ক্ষত জায়গায় মাসাহ করিবে।
সমস্যা হলে সেই জায়গা ছেড়ে দিবে।  

যদি অধিকাংশ জায়গা ভালো থাকে,তাহলে তায়াম্মুম করিবেনা,বরং ধৌত করিবে।
ক্ষতস্থানের জায়গা  যদি শরীরের অন্যান্য অঙ্গ মলে মলে ধোয়ার মতো এই জায়গা ধোয়া না যায়,তাহলে শুধু পানি প্রবাহিত করে দিবে। যদি পানি প্রবাবিত করে দেওয়া ক্ষতিকর হয়,তাহলে মাসাহ করে নিবে,অর্থাৎ সামান্য ভেজা আঙ্গুল হালকা ভাবে যখমের স্থানের উপর ফিরিয়ে নিবে।
,
যদি মাসেহ করাটাও ক্ষতিকর হয়,কঠিন হয়,তাহলে সেই অঙ্গ আপন অবস্থায়  ছেড়ে দিবে,বাকি অঙ্গ ধুয়ে ফেলবে।
সেই স্থান এমতাবস্থায়  শুকনো রাখা যাবে।
(কিতাবুন নাওয়াজেল ৫/৩০১)
     
হাদীস শরীফে এসেছেঃ   
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الأَنْطَاكِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنِ الزُّبَيْرِ بْنِ خُرَيْقٍ، عَنْ عَطَاءٍ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ خَرَجْنَا فِي سَفَرٍ فَأَصَابَ رَجُلاً مِنَّا حَجَرٌ فَشَجَّهُ فِي رَأْسِهِ ثُمَّ احْتَلَمَ فَسَأَلَ أَصْحَابَهُ فَقَالَ : هَلْ تَجِدُونَ لِي رُخْصَةً فِي التَّيَمُّمِ؟ فَقَالُوا مَا نَجِدُ لَكَ رُخْصَةً وَأَنْتَ تَقْدِرُ عَلَى الْمَاءِ فَاغْتَسَلَ فَمَاتَ، فَلَمَّا قَدِمْنَا عَلَى النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم أُخْبِرَ بِذَلِكَ فَقَالَ : " قَتَلُوهُ قَتَلَهُمُ اللهُ أَلَّا سَأَلُوا إِذْ لَمْ يَعْلَمُوا فَإِنَّمَا شِفَاءُ الْعِيِّ السُّؤَالُ إِنَّمَا كَانَ يَكْفِيهِ أَنْ يَتَيَمَّمَ وَيَعْصِرَ " . أَوْ " يَعْصِبَ " . شَكَّ مُوسَى " عَلَى جُرْحِهِ خِرْقَةً ثُمَّ يَمْسَحَ عَلَيْهَا وَيَغْسِلَ سَائِرَ جَسَدِهِ " . - حسن (سنن أبي داؤد، الطہارۃ / باب في المجروح یتیمم ۱؍۱۴۹ رقم ۳۳۶)

জাবির (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমরা কোন এক সফরে বের হলে আমাদের মধ্যকার একজনের মাথা পাথরের আঘাতে ফেটে যায়। ঐ অবস্থায় তার স্বপ্নদোষ হলে সে সাথীদের জিজ্ঞেস করল, তোমরা কি আমার জন্য তায়াম্মুমের সুযোগ গ্রহণের অনুমতি পাও? তারা বলল, যেহেতু তুমি পানি ব্যবহার করতে সক্ষম, তাই তোমাকে তায়াম্মুম করার সুযোগ দেয়া যায় না। অতএব সে গোসল করল। ফলে সে মৃত্যুবরণ করল। আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আসলে তাঁকে বিষয়টি জানানো হলো। তিনি বললেনঃ এরা অন্যায়ভাবে তাকে হত্যা করেছে। আল্লাহ এদের ধ্বংস করুন। তাদের যখন (সমাধান) জানা ছিল না, তারা কেন জিজ্ঞেস করে তা জেনে নিল না। কারণ অজ্ঞতার প্রতিষেধক হচ্ছে জিজ্ঞেস করা। ঐ লোকটির জন্য তায়াম্মুম করাই যথেষ্ট ছিল। আর যখমের স্থানে ব্যান্ডেজ করে তার উপর মাসাহ্ করে শরীরের অন্যান্য স্থান ধুয়ে ফেললেই যথেষ্ট হত।
(আবু দাউদ ৩৩৬.বায়হাক্বী (১/২২৮), দারাকুতনী (১/১৯০)।
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে অযু গোসলের সময় হাতের যখমের স্থান ব্যাতিত অন্য ভালো স্থানে পানি দিবেন,আর সামান্য ভেজা আঙ্গুল হালকা ভাবে যখমের স্থানের উপর (চামড়ার উপর,ক্ষতের ভিতরের দিকে নয়,) ফিরিয়ে নিবেন।

আরো জানুনঃ 
,
(০২)
সেই রক্ত নাপাক।
প্রবাহিত না হলেও গড়িয়ে যাওয়া পরিমান বের হলে অযু ভেঙ্গে যাবে।
রক্ত মিশ্রিত পানি হলে তাহা নাপাক।
যদি রক্ত শুকিয়ে যায়,তার পর হাত ধোয়ার পানি,বা রক্তের স্থান ব্যাতিত হাতের শুধু অন্য জায়গা ধোয়া হলে সেই পানি পাক।
নতুবা রক্ত শুকিয়ে না গেলে,আর সেই স্থান ধোয়া হলে পানি নাপাক হবে।
,
(০৩)
হ্যাঁ নাপাক হবে।
তনে রক্ত জমে শুখিয়ে গেলে সেই পানিতে রক্তের কোনো চিন্হ বা গন্ধ না পাওয়া গেলে সেই পানি নাপাক হবেনা।
,
(০৪)
না,ধোয়া আবশ্যক নয়। 
,
(০৫)
ভালোভাবে পানি প্রবাহিত করে দিতে হবে।
তাহলে একবার পানি প্রবাহিত করে দিলেও পাক হবে।
 
অল্প পানি হলে নাপাকি চলে যাওয়া সম্পর্কে মন থেকে নিশ্চিত হলে তাহা পাক হবে।
,
(০৬)
যদিও একবার ধোয়ার পর হাত নাপাক হবে,তবে এটি তিনবার কাপড় ধোয়ার সাথে সাথেই পাক হয়ে যাবে।
,
তিনবার কাপড় ধোয়ার আগে প্রত্যেকবার সেই হাত দিয়ে ট্যাপ,মগ ধরতে সমস্যা নেই।
তবে শেষে ট্যাপ ও মগের হাতল ধুয়ে নিবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...