আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
211 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (62 points)
১. মারিয়া কিবতিয়া (রা) কি আল্লাহর রাসূল(সা) এর দাসী ছিলেন? তাদের কি সন্তান হয়েছিলো? দাসী হলে আল্লাহর রাসূল(সা) এর সাথে তার শারীরিক সম্পর্ক কেন হয়েছিলো?  কেন তাকে স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করলেন না? ইসলামে দাসীদের সাথে শারীরিক সম্পর্কের বিধান কেন রাখা হয়েছে?

২. দাসপ্রথা কি এখানো ইসলামে আছে? যদি না থাকে তবে শুরুতেই কেন সেটা বন্ধ করে দেওয়া হয় নি, রাসূল(সা) এর যুগে কেন সেটার অস্তিত্ব ছিল?
৩. ইসলামে গ্রহনের পর আমরা দেখতে পাই যেসব সাহাবাগণের(রা) ৮-১০জন স্ত্রী ছিল, আল্লাহর রাসূল(সা) তাদেরকে বললেন যেকোনো চারজনকে বেছে নাও। তাহলে এতে কি বাকিদের সাথে অবিচার করা হলো না? আর স্বয়ং রাসূল(সা) এর এতজন স্ত্রী বিবাহের হিক্বমাহটা কি ছিলো?

৪. ইসলামে চার বিয়ে কেন? এর পেছনে হিক্বমাহ কি? পুরূষদের যৌনচাহিদা বেশি এই কারণটা ছাড়া আর কি কি মুখ্য কারণ রয়েছে?

একজন অমুসলিম বোন জানতে চাচ্ছেন। তাকে এই ব্যাপারগুলো নিয়ে কিভাবে বলা উচিত?

1 Answer

0 votes
by (581,910 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
যুদ্ধ বন্দী সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
ﻓَﺈِﺫﺍ ﻟَﻘِﻴﺘُﻢُ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻛَﻔَﺮُﻭﺍ ﻓَﻀَﺮْﺏَ ﺍﻟﺮِّﻗَﺎﺏِ ﺣَﺘَّﻰ ﺇِﺫَﺍ ﺃَﺛْﺨَﻨﺘُﻤُﻮﻫُﻢْ ﻓَﺸُﺪُّﻭﺍ ﺍﻟْﻮَﺛَﺎﻕَ ﻓَﺈِﻣَّﺎ ﻣَﻨًّﺎ ﺑَﻌْﺪُ ﻭَﺇِﻣَّﺎ ﻓِﺪَﺍﺀ ﺣَﺘَّﻰ ﺗَﻀَﻊَ ﺍﻟْﺤَﺮْﺏُ ﺃَﻭْﺯَﺍﺭَﻫَﺎ ﺫَﻟِﻚَ ﻭَﻟَﻮْ ﻳَﺸَﺎﺀ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻟَﺎﻧﺘَﺼَﺮَ ﻣِﻨْﻬُﻢْ ﻭَﻟَﻜِﻦ ﻟِّﻴَﺒْﻠُﻮَ ﺑَﻌْﻀَﻜُﻢ ﺑِﺒَﻌْﺾٍ ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻗُﺘِﻠُﻮﺍ ﻓِﻲ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻓَﻠَﻦ ﻳُﻀِﻞَّ ﺃَﻋْﻤَﺎﻟَﻬُﻢْ
তরজমাঃ-অতঃপর যখন তোমরা কাফেরদের সাথে যুদ্ধে অবতীর্ণ হও, তখন তাদের গর্দার মার, অবশেষে যখন তাদরকে পূর্ণরূপে পরাভূত কর তখন তাদেরকে শক্ত করে বেধে ফেল। অতঃপর হয় তাদের প্রতি অনুগ্রহ কর, না হয় তাদের নিকট হতে মুক্তিপণ লও। তোমরা যুদ্ধ চালিয়ে যাবে যে পর্যন্ত না শত্রুপক্ষ অস্ত্র সমর্পণ করবে! একথা শুনলে। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ নিতে পারতেন। কিন্তু তিনি তোমাদের কতককে কতকের দ্বারা পরীক্ষা করতে চান। যারা আল্লাহর পথে শহীদ হয়, আল্লাহ কখনই তাদের কর্ম বিনষ্ট করবেন না।(সূরা-মুহাম্মদ,০৪)

যুদ্ধবন্দী যদি মহিলা হয় তাহলে ঐ মহিলার সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করার অনুমতি ইসলাম তার মালিক কে প্রদাণ করেছে এ সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
ﻭَﺍﻟْﻤُﺤْﺼَﻨَﺎﺕُ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀ ﺇِﻻَّ ﻣَﺎ ﻣَﻠَﻜَﺖْ ﺃَﻳْﻤَﺎﻧُﻜُﻢْ ﻛِﺘَﺎﺏَ ﺍﻟﻠّﻪِ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﻭَﺃُﺣِﻞَّ ﻟَﻜُﻢ ﻣَّﺎ ﻭَﺭَﺍﺀ ﺫَﻟِﻜُﻢْ ﺃَﻥ ﺗَﺒْﺘَﻐُﻮﺍْ ﺑِﺄَﻣْﻮَﺍﻟِﻜُﻢ ﻣُّﺤْﺼِﻨِﻴﻦَ ﻏَﻴْﺮَ ﻣُﺴَﺎﻓِﺤِﻴﻦَ ﻓَﻤَﺎ ﺍﺳْﺘَﻤْﺘَﻌْﺘُﻢ ﺑِﻪِ ﻣِﻨْﻬُﻦَّ ﻓَﺂﺗُﻮﻫُﻦَّ ﺃُﺟُﻮﺭَﻫُﻦَّ ﻓَﺮِﻳﻀَﺔً ﻭَﻻَ ﺟُﻨَﺎﺡَ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﻓِﻴﻤَﺎ ﺗَﺮَﺍﺿَﻴْﺘُﻢ ﺑِﻪِ ﻣِﻦ ﺑَﻌْﺪِ ﺍﻟْﻔَﺮِﻳﻀَﺔِ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠّﻪَ ﻛَﺎﻥَ ﻋَﻠِﻴﻤًﺎ ﺣَﻜِﻴﻤًﺎ
এবং নারীদের মধ্যে তাদের ছাড়া সকল সধবা স্ত্রীলোক তোমাদের জন্যে নিষিদ্ধ; তোমাদের দক্ষিণ হস্ত যাদের মালিক হয়ে যায়-এটা তোমাদের জন্য আল্লাহর হুকুম। এদেরকে ছাড়া তোমাদের জন্যে সব নারী হালাল করা হয়েছে, শর্ত এই যে, তোমরা তাদেরকে স্বীয় অর্থের বিনিময়ে তলব করবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য-ব্যভিচারের জন্য নয়। অনন্তর তাদের মধ্যে যাকে তোমরা ভোগ করবে, তাকে তার নির্ধারিত হক দান কর। তোমাদের কোন গোনাহ হবে না যদি নির্ধারণের পর তোমরা পরস্পরে সম্মত হও। নিশ্চয় আল্লাহ সুবিজ্ঞ, রহস্যবিদ। ইসলাম ও দাসত্ব সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/5229 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যুদ্ধবন্দী যদি মহিলা হয় তাহলে ঐ মহিলার সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করার অনুমতি ইসলামে ভিন্ন হেকমতের আলোকে রয়েছে, তবে যুদ্ধবন্দী পুরুষ হলে ঐ পুরুষের সাথে কোনো মহিলা দাস হিসেবে শারিরিক সম্পর্কে জড়াতে পারবে না। কোনো যুদ্ধবন্ধি যদি ইসলাম গ্রহণ করে নেয়, তাহলে তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে কিন্তু তাকে দাস বানানো যাবে না। এবং পরবর্তিতে তাকে মুক্ত করে দেয়া হবে।

সুতরাং আমরা বলবো যে,
(১)
মারিয়া কিবতিয়া (রা) কি আল্লাহর রাসূল(সা) এর দাসী ছিল। মারিয়া কিবতিয়ার ঘর থেকে রাসূলুল্লাহ সাঃ একটি পুত্র সন্তান ছিলো।যেহেতু দাসীর সাথে সহবাস বৈধ,এই বৈধতা বুঝানোর জন্যই রাসূল(সা) বিয়ে না করেই দাসী হিসেবে তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন।তাছাড়া দাসী হলেও সে তো মানুষ।আর মানুষ হিসেবে তার যৌনঅধিকার রয়েছে। 
যেহেতু যুদ্ধবন্ধীকে হত্যা করা হচ্ছে না,বরং তাকে জীবন দানের পাশাপাশি তাকে অন্য বস্র বাসস্থান দেওয়া হচ্ছে, আর এই অন্য বস্র বাসস্থানের দাবী হল, তার কাছ থেকে সকল প্রকার ফায়দা গ্রহণ করা।

(২)
দাস প্রথা এখনও আছে।তার যৌক্তিক ব্যখ্যা রয়েছে।বিস্তারিত জানতে উপরের লিংকে কমেন্ট করুন।

(৩)
এটা আল্লাহর বিধান।এখানে অবিচারের প্রশ্ন আসবে না।অল্প বয়সে মৃত্যু প্রদানও আল্লাহর ফয়সালা, তাহলে এটাও কি অবিচারের অন্তর্ভুক্ত হবে?

রাসূল সাঃ দ্বীনের মজবুতির স্বার্থে এবং দ্বীন প্রচারের স্বার্থে একাধিক বিয়ে করেছিলেন।

(৪)
এটা আল্লাহর বিধান।এটা ওহী দ্বারা প্রমাণিত।সুতরাং এই বিষয়ে জ্ঞান বিজ্ঞান ও আকলকে প্রস্রয় দেয়া যাবে না।তাছাড়া হেকমত হল, সর্বদাই মহিলাদের সংখ্যা বেশী থাকবে।যুদ্ধ ইত্যাদির দরুণ পুরুষদের সংখ্যা সর্বদাই কম থাকবে। এবং অনেক মহিলা স্বামী হারা থাকবে, এদেরকে সাধারণত অবিবাহিত পুরুষরা বিয়ে করবে না। সুতরাং এই সমস্ত বিশেষ হেকমতের কারণে ইসলামে বহু বিবাহকে সমর্থন দেয়া হয়েছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...