ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
চুল মুন্ডানোর ষষ্ট প্রকার তথা বিনাপ্রয়োজনে এমনিতেই চুল মুন্ডানো সম্পর্কে শরীয়তের বিধান কি? এ সম্পর্কে উলামাদের মতবিরোধ বর্ণিত রয়েছে।এমনকি হানাফি মাযহাবের কিতাবাদিতেও মতবিরোধ পরিলক্ষিত হয়।
কিন্তু মুল্লা আলী ক্বারী রাহ খাওয়ারিজদের আ'লামত বর্ণনায় চুল মুন্ডানো সম্ভলিত যে হাদীস বর্ণিত রয়েছে,সে হাদীসের ব্যখ্যায় এর উল্টো লিখেন,
وَهُوَ لَا يَدُلُّ عَلَى أَنَّ الْحَلْقَ مَذْمُومٌ فَإِنَّ الشِّيَمَ وَالْحُلَى الْمَحْمُودَةَ قَدْ يَتَزَيَّا بِهَا الْخَبِيثُ تَرْوِيجًا لِخُبْثِهِ وَإِفْسَادِهِ عَلَى النَّاسِ وَهُوَ كَوَصْفِهِمْ بِالصَّلَاةِ وَالْقِيَامِ، وَثَانِيهِمَا أَنْ يُرَادَ بِهِ تَحْلِيقُ الْقَوْمِ وَإِجْلَاسُهُمْ حِلَقًا حِلَقًا
খাওয়ারিজদের আ'লামত হল চুল মুন্ডানো। তবে এ অা'লামত বর্ণনা দ্বারা চুল মুন্ডানো কখনো নিন্দনীয় হবে না।কেননা উত্তম স্বভাব এবং প্রশংসিত আচরণ দ্বারা কখনো কখনো মন্দ লোকও সু-সজ্জিত থাকে, যাতেকরে তাদের মন্দ আকিদা-বিশ্বাসকে সহজেই গ্রহণযোগ্য করে তুলা যায়।এটা এমন যেন তাদের বিশেষণ নামায,এবং গভীর রাত্রের নফল নামায পড়া।দ্বিতীয়ত উক্ত হাদীসে তাহলীক্ব দ্বারা তাদের গোল করে হালকাবন্দী হয়ে বসা উদ্দেশ্য। সে হিসেবে উক্ত হাদীস চুল মুন্ডানোকে নিন্দনীয় করবে না।(মিরকাত,৩৫৪৩ নং হাদীসের ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য)
এবং ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় উল্লেখ করা হয়-
وَفِي رَوْضِهِ الزندويستي أَنَّ السُّنَّةَ فِي شَعْرِ الرَّأْسِ إمَّا الْفَرْقُ وَإِمَّا الْحَلْقُ وَذَكَرَ الطَّحْطَاوِيُّ الْحَلْقُ سُنَّةٌ وَنُسِبَ ذَلِكَ إلَى الْعُلَمَاءِ الثَّلَاثَةِ كَذَا فِي التَّتَارْخَانِيَّة.
يُسْتَحَبُّ حَلْقُ الرَّأْسِ فِي كُلِّ جُمُعَةٍ كَذَا فِي الْغَرَائِبِ.
মাথার চুলে সুন্নাত ত্বরিকা হচ্ছে,চুল রেখে মধ্যখানে ফিতা বের করা অথবা চুল মুন্ডানো। ইমাম তাহতাবী রাহ বলেন,চুল মুন্ডানো সুন্নত।এমনটা আমাদের তিন ইমাম- ইমাম আবু-হানিফা,ইমাম আবু-ইউসুফ এবং ইমাম মুহাম্মাদ রাহ এর দিকে সম্বন্ধ করা হয়।প্রত্যেক জুমুআহ বারে চুল মুন্ডানো মুস্তাহাব।
ফাতওয়ায়ে রশিদিয়ায় উল্লেখ করা হয়,
বাবড়ি চুল রাখা সুন্নাত এবং চুল মুন্ডন করাও হানাফি মাযহাব মতে সুন্নাত,অর্থাৎ উভয়টিই সুন্নাত।
সুতরাং আমরা বলব যে,
চুলের বিধি-বিধান সম্ভলিত উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা বুঝতে পারলাম যে,বিনা প্রয়োজনে চুল মুন্ডানো উত্তম না চুলকে অবশিষ্ট রাখা উত্তম। তা নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে-
মুল্লা আলী কারী রাহ এর দুই বক্তব্যর একটি হল,বিনা প্রয়োজনে এমনিতেও চুল রাখার চেয়ে চুল মুন্ডানো উত্তম। আমাদের সালাফদেরকে সময়ে সময় চুল মুন্ডাতে দেখেছি। তারা প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে সর্বদাই চুল-কে মুন্ডাতেন। তাই আমাদের সিদ্ধান্ত হলো বাবড়ি চুল রাখার মত চুল মুন্ডানোও সুন্নত।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১) এরকম মাথা মুণ্ডানো নিয়ে আমার অন্য আরেক ফ্রেন্ড যে হাসা কিংবা মশকরা করলো, এতেকরে তার ঈমানে কোনো সমস্যা হবে না। কেননা চুল মুন্ডানোর বিধান অকাট্য কোনো দলীল প্রমাণ দ্বারা প্রমাণিত নয়।
(২) মুন্ডানো মাথা দেখলে হাসাহাসি করা কখনো উচিৎ নয়। বরং এটাও শরীয়তে অনুমোদিত এবং সুন্নত বিধানও বলা যাবে, তবে যেহেতু অকাট্য দলীল প্রমাণ দ্বারা প্রমাণিত নয়, তাই হাসাহাসি করার কারণে তার ঈমান চলে যাবে না।