আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
343 views
in সালাত(Prayer) by (45 points)
সম্মানীত শায়েখ আসসালামু আলাইকুম।  আমার প্রশ্ন হলো
প্রশ্ন ১: কোনো ব্যাক্তি জুম্মার নামাযে এমন সময় উপস্থিত হলো যখন ইমাম সাহেব ১ রাকাত নামায পড়া শেষ।  ২য় রাকাত এর কেরাত পড়তেছে। এমন অবস্থায় সে কি ইমাম সালাম ফিরানোর পরে  ১ রাকাত নিজে পড়ে নিবে।  মসআলা টা বিস্তারিত জানাবেন দয়া করে  
2য় প্রশ্ন :  একই ভাবে  আবার কোনো ব্যাক্তি যদি এমন সময় আসলো যে ইমাম সাহেব কে ২য় রাকাতের তাশাহুদ বৈঠক এ পেলো। তাহলে তার ক্ষেত্রে মাসআলা কি। ইমাম সাহেব সালাম ফিরানোর  দাড়িয়ে  ২ রাকাত পড়ে নিবে ।  এসকল বিষয় নিয়ে যদি ইখতেলাফ থাকে তাহলে একটু বিস্তারিত দিয়েন

প্রশ্ন ৩: আমরা জানি যে ফরজ সালাতে কিছু ওয়াক্ত জোরে ও আস্তে কেরাত পড়তে হয়।  এখন আমি জোরে কেরাত এর সালাত জামাতে পড়তে পারিনি। এখন আমি বাসায় কি এই সালাত জোরে কেরাত পড়ে আদায় করতে হবে নাকি আমি সুন্নত নামাযের মতো আস্তে আস্তে কেরাত পড়ে আদায় করতে পারবো।  আস্তে ও জোরে কেরাত এর নামায জামাতে না পেলে।  একাকি কিভাবে পড়তে হয় যদি বলতেন । যেহেতু আস্তে কেরাত এর গুলোও তো আল্লাহু আকবার এগুলো জোরে বলা লাগে

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
শরীয়তের বিধান হলো যদি নামাজি ইক্তেদা করে ইমামের সাথে নামাজের কোনো এক অংশে শরিক হয়ে যায়,যদিও সে শেষ বৈঠকে ইমামের সালাম ফিরানোর পূর্বে জামা'আতে শরিক হোক,সে জামা'আত পেয়েছে বলে গন্য হবে,জামা'আতের ছওয়াবও পাবে।
তবে তাকবিরে উলার সাথে নামাজ আদায় করার যত ছওয়াব,ততটুকু ছওয়াব মিলবেনা।

★★জুম'আর নামাজের মধ্যে কোনো ব্যাক্তি যদি শেষ বৈঠকে ইমামের সাথে যুক্ত হয়,তাহলে সে দুই রাকাত পড়বে।
চার রাকাত পড়ার প্রয়োজন নেই।
(নুরুল ইজাহ ১২৬,ফাতাওয়ায়ে রহিমিয়্যাহ ৬/৯৬)

قال في نور الإیضاح: ومن أدرکہا في التشہد أو في سجود السہو أتمّ جمعةً (نور الإیضاح: ۱۲۰)
সারমর্মঃ
 কোনো ব্যাক্তি যদি তাশাহুদ বা সেজদায়ে সাহুতে ইমামকে পায়,তাহলে সে জুম'আ পূর্ণ করবে।  

তবে ইমামের এক সালাম ফিরানোর পর কোনো ব্যাক্তি যদি শরিক হয়,তাহলে তার জুম'আর নামাজ ছহীহ হবেনা।
সে জোহর নামাজ আদায় করবে। 
(ফাতাওয়ায়ে দারুল উলুম দেওবন্দ ৫/৯৪)

وتنقطع التحریمۃ بتسلیمۃ واحدۃ برھان وقدمر (در مختار)ای فی الواجبات حیث قال وتنقضی قدوۃ بالا ول قبل علیکم علی المشہود عندنا خلافا للتکملۃ ا ھ فلا یصح الا قتداء بہ بعد ھا لا نقضاء حکم الصلاۃ ( ردالمحتار بابصفۃ لا صلاۃ بعد الفصل ج ۱ ص ۴۹۰۔ط۔س۔ج۲ص۵۲۵) ظفیر الصدیقی۔

সারমর্মঃ 
এক সালাম ফিরানোর সাথে সাথেই তাহরিমার হুকুম শেষ হয়ে যায়।
নামাজের হুকুম শেষ হয়ে যাওয়ার কারনে সেই সময়ের ইক্তেদা ছহীহ হবেনা।
,
কিতাবুল ফিকহি আলা মাযাহিবিল আরবা'আতি গ্রন্থের ৩৯৬ নং পৃষ্ঠায় এসেছেঃ

 الجماعة إذا شارك المأموم إمامه في جزء من صلاته، ولو آخر القعدة الأخيرة قبل السلام، فلو كبر قبل سلام إمامه فقد أدرك الجماعة، ولو لم يقعد معه، وهذا الحكم متفق عليه بين الحنفية، والحنابلة، والشافعية، إلا أن الشافعية استثنوا من ذلك صلاة الجمعة فقالوا: إنها لاتدرك إلا بإدراك ركعة كاملة مع الإمام

সারমর্মঃ
যদি নামাজি ইক্তেদা করে ইমামের সাথে নামাজের কোনো এক অংশে শরিক হয়ে যায়,যদিও সে শেষ বৈঠকে ইমামের সালাম ফিরানোর পূর্বে জামা'আতে শরিক হোক,সে জামা'আত পেয়েছে বলে গন্য হবে।

এই ব্যাপারে হানাফি,শাফেয়ী, হাম্বলি মাযহাব একমত।

তবে ইমাম শাফেয়ী রহঃ,ইমাম মালেক রহঃ এর মাযহাবে জুম'আর নামাজের জামা'আত পেতে হলে পূর্ণ এক রাকাত পেতে হবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

أَخْبَرَنِي مُوسَى بْنُ سُلَيْمَانَ بْنِ إِسْمَاعِيلَ بْنِ الْقَاسِمِ، قَالَ حَدَّثَنَا بَقِيَّةُ، عَنْ يُونُسَ، قَالَ حَدَّثَنِي الزُّهْرِيُّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ أَدْرَكَ رَكْعَةً مِنَ الْجُمُعَةِ أَوْ غَيْرِهَا فَقَدْ تَمَّتْ صَلاَتُهُ "

মূসা ইবনু সুলায়মান (রহঃ) ... সালিম (রহঃ) এর পিতা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, যে ব্যাক্তি জুমুআহ বা অন্য কোনো সালাতের এক রাক’আত পেল, তার সালাত পূর্ণ হয়ে গেলো (অর্থাৎ সে জামায়াতের সওয়াব পেল)।

সহিহ, ইবনু মাজাহ হাঃ ১২২৩,
নাসায়ী ৫৪৮ ইরউয়াউল গালীল ৬২২


حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ، وَسَعِيدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، وَغَيْرُ، وَاحِدٍ، قَالُوا حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ أَدْرَكَ مِنَ الصَّلاَةِ رَكْعَةً فَقَدْ أَدْرَكَ الصَّلاَةَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ قَالُوا مَنْ أَدْرَكَ رَكْعَةً مِنَ الْجُمُعَةِ صَلَّى إِلَيْهَا أُخْرَى وَمَنْ أَدْرَكَهُمْ جُلُوسًا صَلَّى أَرْبَعًا . وَبِهِ يَقُولُ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَابْنُ الْمُبَارَكِ وَالشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ .

আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, নাবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে ব্যক্তি (ইমামের সাথে) এক রাকাআত নামায পেল সে পূর্ণ নামায পেল। —সহীহ। ইবনু মাজাহ– (১১২২), বুখারী ও মুসলিম।

আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বেশিরভাগ সাহাবা ও অন্যান্যরা উল্লেখিত হাদীসের পক্ষে মত দিয়েছেন। তারা বলেছেন, যে ব্যক্তি ইমামের সাথে জুমুআর এক রাকাআত নামায পায় সে এর সাথে বাকী রাকাআত পূর্ণ করবে। যে ব্যক্তি দ্বিতীয় রাকাআতের বৈঠকে জামা'আতে উপস্থিত হয় সে চার রাকাআত (যুহর) আদায় করবে। সুফিয়ান সাওরী, ইবনুল মুবারাক, শাফিঈ, আহমাদ এবং ইসহাকও একই রকম মত দিয়েছেন।
(তিরমিজি ৫২৪)

★সুতরাং তাদের মতানুসারী গন সেই মত অনুযায়ী আমল করতে পারবেন। 

(০২)
হ্যাঁ সে ইমামের সালাম ফিরানোর পর তার ছুটে যাওয়া দুই রাকাত নামাজ আদায় করবে। 
 
যদি এটি দুই রাকাত বিশিষ্টই নামাজ হয়,সেক্ষেত্রে সে জামা'আত পাবে কিনা,এক্ষেত্রে শুধু জুম'আর নামাজের ক্ষেত্রে ফুকাহায়ে কেরামগন দের মতবিরোধ রয়েছে।
বিস্তারিত ১নং প্রশ্নের জবাব দ্রষ্টব্য।  

(০৩)
জোড়ে কিরাআত এর নামাজ একাকী আদায় করলে তার ইখতিয়ার রয়েছে, সে চাইলে জোড়ে কিরাআত পড়তে পারে,চাইলে আস্তে কিরাআত পড়তে পারে।
তবে আস্তে কিরাআত এর নামাজে প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তি আস্তেই কিরাআত পড়বে।     


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 161 views
0 votes
1 answer 122 views
0 votes
1 answer 145 views
...