আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
344 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
আস্সলামু আলাইকুম হুজুর,,
আমি গত কিছু দিন আগে ফোনে একটি মেয়ের সাথে কথা বলি, এবং এসএসএমএস করি।  এ বিষয় গুলো আমার ওয়াইফকে জানাই, এবং আমার স্ত্রী খুব রাগারাগি করে এবং ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে তার সাথে আমার মিট হয়, এবং আমি আমার সন্মান এর জন্য তাকে বলি এগুলো তোমার বাবার বাড়ির কাহুকে বলবে না। এবং বলি তুমি যদি ঐ মেয়ের সাথে আর কথা বলার চেষ্টা করো, কিংবা ওর কোন ছবি নিয়ে আসো,, বা ঐ  মেয়ের  সাথে দেওয়া এসএমএস এগুলো স্কিনসর্ট নিয়ে আসার চেষ্টা করো কিংবা তোমার বাবার বাড়ির কারো সাথে আলোচনা কর কিংবা অন্য কোন চল-চাতুরী কর তাহলে তোমাকে কসম দিলাম হারাম হয়ে যাবে। ও তখন বলে কী? আমি উত্তরে বললাম সম্পর্ক।  কিন্তু আমি জানতাম ও রাখবে না তাই আমি তখনি শুধু ওকে ভয় দেখানোর জন্যই বলেছিলাম। মনে মনে বলছি আমি এটা কসম দিলাম না।  কিন্তু ও আমাকে বলে আমি এটা মানি না, আমি তখন বললাম আমি তো কসম দিয়েই দিলাম। এখন আমার করার কিছু নাই। কিন্তু মনে মনে তখন আমি এই ধরনের কসম দিলাম না।
কিছুদিন পর ও মোবাইল দেখতেছিল, তখন আমার ছোট ভাই ওর মোবাইল দেখে এবং উক্ত মেয়ের আইডি দেখে বলে  এই মেয়েটাকে আমি ছিনি। ওকে জিগ্যেস করে ওর বাড়ি কোথায়, আমার ওয়াইফ বাড়ি কোথায় তা বলে দেয়। এবং আরো ২ তিনটে কথার উত্তর দেয়। হুজুর আমাকে দয়া করে উত্তর দিয়ে কৃতজ্ঞ করবেন। আমার দুটি সন্তান রয়েছে। এক্ষেত্রে আমার দেওয়া কসম কি ভাঙ্গা হয়েছে?  এবং কসম ভাঙ্গার কারনে বৈবাহিক সম্পর্কের কোন ক্ষতি হয়েছে কি? উল্লেখ্য আমি তালাক নামক কোন কিছু উচ্চারণ করি নাই। তাছাড়া এটা আমি কসম দিয়েছিলাম। তাহলে এটা কি কসম ভাঙ্গার কাফফারা দিতে হবে নাকি বৈবাহিক সম্পর্কে কোন সমস্যা হয়েছে? তাছাড়া আমার কোন উদ্দেশ্যও ছিল না। এবং আমি তখন মনে মনে এই নিয়ত করছিলাম আমি কসম দিই না। শুধুমাত্র তাকে ভয় দেখানোর জন্য বলেছিলাম।

1 Answer

0 votes
by (590,760 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
যদিও আপনি ভয় প্রদর্শনের জন্য বলেছেন, কিন্তু আপনি পরিস্কার এ কথা বলে দিয়েছেন, যখন আপনার স্ত্রী আপনাকে জিজ্ঞেস করেছিল যে, আপনি কি দিয়েছেন? বা কি হারাম করেছেন? তদুত্তরে আপনি বলেছিলেন যে, ”সম্পর্ক” সুতরাং পরবর্তীতে তার ভাইকে বলার জন্য আপনাদের মধ্যকার এক তালাক পতিত হয়ে গেছে। আপনাদের মধ্যকার আর দুই তালাক বাকী রয়েছে। 

https://www.ifatwa.info/1049 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, 
পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপট তিন প্রকারঃ যথাঃ- 
وَالْأَحْوَالُ ثَلَاثَةٌ (حَالَةُ) الرِّضَا (وَحَالَةُ) مُذَاكَرَةِ الطَّلَاقِ بِأَنْ تَسْأَلَ هِيَ طَلَاقَهَا أَوْ غَيْرُهَا يَسْأَلُ طَلَاقَهَا (وَحَالَةُ) الْغَضَبِ 
পরিবেশ ও পরিস্থিতি তিন প্রকার।(১) হালতে রেযা- খুশির হালত(২) তালাকের শব্দাবলী উচ্ছারণের হালত(৩) রাগান্বিত অবস্থা।

فَفِي حَالَةِ الرِّضَا لَا يَقَعُ الطَّلَاقُ فِي الْأَلْفَاظِ كُلِّهَا إلَّا بِالنِّيَّةِ وَالْقَوْلُ قَوْلُ الزَّوْجِ فِي تَرْكِ النِّيَّةِ مَعَ الْيَمِينِ
(১) খশির হালতে নিয়ত ব্যতীত কেনায়া শব্দাবলী দ্বারা তালাক পতিত হবে না।নিয়ত না থাকার বিষয়ে স্বামীর কথাই কসমের সাথে গ্রহণযোগ্য। 

وَفِي حَالَةِ مُذَاكَرَةِ الطَّلَاقِ يَقَعُ الطَّلَاقُ فِي سَائِرِ الْأَقْسَامِ قَضَاءً إلَّا فِيمَا يَصْلُحُ جَوَابًا وَرَدَّا فَإِنَّهُ لَا يُجْعَلُ طَلَاقًا كَذَا فِي الْكَافِي
(২)তালাকের আলোচনার পরিস্থিতিতে সকল প্রকার কেনায়া তালাকে তালাক পতিত হবে।তবে যে শব্দগুলো তালাকের আবেদনের জবাব এবং রদ উভয়টা বুঝাবে,সে শব্দুগুলো দ্বারা তালাক পতিত হবে না।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৭৫)

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,
وفي حالة الغضب يصدق في جميع ذلك لاحتمال الرد والسب إلا فيما يصلح للطلاق ولا يصلح للرد والشتم كقوله اعتدي واختاري وأمرك بيدك فإنه لا يصدق فيها كذا في الهداية...............  وفي الينابيع ألحق أبو يوسف - رحمه الله تعالى - بالخمسة ستة أخرى وهي الأربعة المتقدمة وزاد خالعتك والحقي بأهلك هكذا في غاية السروجي.
রাগের অবস্থাঃ-
রাগের অবস্থায় স্বামী তালাকের নিয়তকে অস্বীকার করলে স্বামীর উক্ত বক্তব্য-কে সত্যায়ন করা হবে।কেননা সেই শব্দ সমূহে গালিগালাজ ও স্ত্রীর তালাকের আবেদন-কে  ফিরিয়ে দেয়ার অর্থ বিদ্যমান রয়েছে।তবে যেই সমস্ত শব্দাবলীতে শুধুমাত্র তালাকের অর্থ বিদ্যমান রয়েছে।গালিগালাজ বা (স্ত্রীর তালাকের আবেদন) ফিরিয়ে দেয়ার অর্থ বিদ্যমান না থাকে,তাহলে সেই সমস্ত শব্দাবলীর বেলায় স্বামীর অস্বীকার-কে সত্যায়ন করা হবে না।বরং তালাক পতিত হবে।যেমন- তুমি ইদ্দত গণনা করো,তুমি পছন্দ করো,তোমার বিষয় তোমার হাতে, ইত্যাদি।সুতরাং এমন শব্দাবলীর বেলায় স্বামীর অস্বীকারকে সত্যায়ন করা যাবে না,বরং তালাক পতিত হবে।(হেদায়া) ইমাম আবু ইউসুফ রাহ পূর্ববর্তী পাঁচের সাথে আরো দুইটি শব্দ সংযোগ করেন,তখন সর্বমোট ছয়টি শব্দ হয়।সেই দুইটি হল,আমি তোমার সাথে খোলা করলাম,তুমি তোমার পরিবারবর্গের সাথে মিলিত হয়ে যাও।(গায়াতুস-সুরুজী) (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৭৫)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (1 point)
আস্সলামু আলাইকুম,, 
হুজুর উক্ত বিষয়টি আমি কোন ধরনের তালাক কিংবা তালাক জাতীয় মনস্হির করে করিনি এবং এ ধরনের কোন কিছুই নিয়ত করিনি। তালাকের সাথে যায় এরকম কোন কিছুই মনে মনে নিয়ত করি নাই। আমি তাকে কথার ছলে বললাম শুধু  তোমার বাবার বাড়ির কারো কাছে কিংবা ঐ মেয়ের থেকে ছবি এসএমএস আনার চেষ্টা কর,,  তাহলে কসম দিলাম হারাম হবে। মুলত আমি কসমের দিকে নেজবত করেছি। এবং আমি জানতাম ও এটা রাখবে না তাই শুধু মুখে মুখে ওকে বললাম কসমের কথা। এবং আমি মনে মনে এ জাতীয় কিছুই কসম দিই নাই।তালাকের ভয়াবহতা জানা রয়েছে বিধায় এ জাতীয় কোন কিছুই উল্লেখ এবং নিয়তের দারপ্রান্তে ও নিয়ে আসি নাই। মুলত আমার উদ্দেশ্য ছিল তাদের বাড়ির কাহুকে নিয়ে এই বিষয়ে যাতে আর বাড়াবাড়ি না করে এবং ঐ মেয়ের সাথে যোগাযোগ করে কোন ভাবে চল-চাতুরী মাধ্যমে জানার চেষ্টা করে এ জাতীয় বিষয় গুলো। এবং আমার নিয়তটাকে সে দিকেই নেজবত করে শুধু শুধু মুখে মুখে কসম বললাম।  তাছাড়া হুজুর ও ঐ মেয়েটির কোন এসএমএস কিংবা ওর ছবি নিয়ে কোন আলাচনা ওদের বাড়ির সাথে আলোচনা করে নাই। সে শুধুমাত্র আমার ছোট ভাইকে কোন কারনে ২ একটি কথা বলেছিল। এখানে তাদের বাড়ির কেউ নেই। মুলত হুজুর এই বিষয়টি পুনরায় যাতে বিভিন্ন  ভাবে তার পক্ষ হতে আলোচনা করে যাতে গেন্জাম না হয়  আমার নিয়তটাকে সেদিকেই নেজবত করে বললাম কসম এগুলো আর আলোচনা করবে না। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...