আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
60 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম।
ওস্তাদ, আমার সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে আমি আত্মতৃপ্তিতে ভুগি।আমার কেমন জানি মনে হয় আল্লাহ আমাকে মাফ করে দেবেন।অথচ আমি খুব ভালোভাবেই জানি আমি পুরোপুরি সিরাতুল মুস্তাকিম এর পথে নেই। আমি সামান্য কোনো ভালো কাজ করলেই মনে হয় যে অনেক বড় সওয়াবের কাজ করেছি অথচ যদি কোনো হারাম কাজও করি তাহলে ভালো কাজ করলে যেরকম আনন্দ পায় খারাপ কাজ করলে সেরকম কষ্ট পায়না।
আরেকটা সমস্যা, আমার জাহান্নামের ভয় খুবই কম।অথচ জান্নাত পাওয়ার আগ্রহ প্রবল।আমি হারাম কোনো কাজ করলে কষ্ট লাগে এইভেবে যে আমি আমার রবের আদেশ  কেন অমান্য করলাম?আমার এমনটা করা একদমই উচিত হয়নি। কিন্তু এই হারাম কাজ করার জন্যে যে, আমার রব আমার উপর রাগান্বিত হতে পারে। আমাকে জাহান্নামে দিতে পারে এটা ভেবে আমার মনে যেরকম খারাপ লাগার একটা অনুভূতি সৃষ্টি হওয়ার কথা ঠিক  সেরকম হয়না।  সাময়িক হলেও পরবর্তীতে সব ভুলে যায়।আর এরপরও মনে হয় আমার রব আমাকে ক্ষমা করে দিবেন। এই অবস্থার মধ্যে আমার নফস আর শয়তানি কুমন্ত্রণা যখন  কিছুদিন পর আবার  প্রবল হয় তখনই আবার হারাম কাজ করে ফেলি।তবে আমি হারাম কাজ করে ফেলার পর বিষয়গুলো বুঝতে পারি।
আর আমি এটাও জানি যে,  এটা আমার নফস আর শয়তানের ধোঁকার ফলেই হয়। কিন্তু এই রোগের চিকিৎসা কিভাবে করাবো..কি করলে আমার মনে স্থায়িভাবে আল্লাহর ভয় সৃষ্টি হবে আমার জানা নেই।আমি এগুলো নিয়ে ভাবতে ভাবতে এখন স্বাভাবিক জীবন-যাপনও করতে পারিনা।

1 Answer

0 votes
by (657,800 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 



গুনাহ ছাড়ার ঔষধ হিসেবে উলামায়ে কেরামগন কিছু কাজ করতে বলেছেন,সেগুলো করতে হবে।
,    
★আপনাকে সত্যিকার অর্থে তওবা করতে হবে। আল্লাহর দিকে ফিরে যেতে হবে। অতীতে যা করেছেন তার জন্য লজ্জিত হতে হবে। বেশি-বেশি দোয়া করতে হবে এবং কায়মনোবাক্যে আকুতি করতে হবে আল্লাহ যেন আপনাকে ক্ষমা করে দেন। তিনি যেন আপনাকে এই বিষয় থেকে নিষ্কৃতি পেতে সহায়তা করেন। কারণ, যদি সীমালংঘনকারী সত্যিকার অর্থে দৃঢ়চিত্তে তাওবা করে, তাহলে আল্লাহ তাআলা তার তাওবা কবুল করেন এবং তাকে ক্ষমা করে দেন।

 আল্লাহ তাআলা বলেন, 

إِلَّا مَن تَابَ وَآمَنَ وَعَمِلَ عَمَلًا صَالِحًا فَأُوْلَئِكَ يُبَدِّلُ اللَّهُ سَيِّئَاتِهِمْ حَسَنَاتٍ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًارَّحِيمًا 

তবে যে তাওবা করে ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে। পরিণামে আল্লাহ তাদের পাপগুলোকে পুণ্য দ্বারা পরিবর্তন করে দেবেন। আল্লাহ অতীব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা আল ফুরকান ৭০)

★গোনাহের দরজা যদি বন্ধ করতে পারেন, তাহলে গোনাহ থেকে বাঁচা সহজ হয়ে যাবে। আর যেসমস্ত পথে গোনাহ হয়ে যায় সেগুলো নিয়ে ভাবলে দেখবেন, তালিকার প্রথমেই আসবে অসৎ সঙ্গ বা খারাপ বন্ধু। সুতরাং যে কোনো মূল্যে আপনাকে অসৎ সঙ্গ থেকে বাঁচতে হবে। 

★আল্লাহওয়ালাদের সোহবত গ্রহন করুন। তাদের মজলিসে আসা যাওয়া করুন। এতে নফস নিয়ন্ত্রণ করা এবং তাওবার উপর অটল থাকা আপনার জন্য সহজ হবে।  আল্লাহ তাআলা বলেন,يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اتَّقُواْ اللّهَ وَكُونُواْ مَعَ الصَّادِقِينَ হে ঈমানদারগণ, আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক। (সূরা আত তাওবাহ ১১৯)

★গোনাহ যদি যৌবনতাড়িত হয় তাহলে বিবাহের ব্যাপারে সিরিয়াসলি চিন্তা করুন। প্রয়োজনে আপনার গার্জিয়ানকে এ ব্যাপারে খোলাখুলি বলে বিবাহের আগ্রহ ব্যক্ত করতেও কোনো সমস্যা নেই।  এ ব্যাপারে দারিদ্র্যকে ভয় পাবেন না; আল্লাহ তার করুণায় অভাবমুক্ত করে দেবেন। 

কেননা আল্লাহ বলেছেন–

وَأَنكِحُوا الْأَيَامَى مِنكُمْ وَالصَّالِحِينَ مِنْ عِبَادِكُمْ وَإِمَائِكُمْ إِن يَكُونُوا فُقَرَاء يُغْنِهِمُ اللَّهُ مِن فَضْلِهِ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ

 ‘আর তোমরা তোমাদের মধ্যকার অবিবাহিত নারী-পুরুষ ও সৎকর্মশীল দাস-দাসীদের বিবাহ দাও। তারা অভাবী হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যবান ও মহাজ্ঞানী।’ (সূরা আন-নূর, আয়াত: ৩২)

★কখনো একাকী নিভৃতে থাকবেন না। কেননা একাকীত্ব গোনাহ চিন্তা করার কারণ হতে পারে। আর আপনার সময়কে উপকারী বিষয়ে ব্যয় করতে সচেষ্ট হোন। যেমন- সৎকাজ, কুরআন তিলাওয়াত, যিকির, নামাজ ইত্যাদি।

★পরকালের মুরাকাবা করুন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...