গীবত ও নিয়ত বিষয়ক,কসম

Question

                       আসসালামুআলাইকুম,

গীবত:

১)গীবত হতে হলে কি তা নির্দিষ্ট ব্যক্তির নামেই হতে হয় নাকি সমষ্টিগতভাবে বললেও গীবত হয়? যেমন: আমি আমার মাকে কোনো নির্দিষ্ট পেশার একজন লোক সম্পর্কে এমন কিছু বলতে চাইলাম তার অনুপস্থিতিতে যা সে অপছন্দ করে।কিন্তু এখানে তার নাম উল্লেখ না করে এভাবে বললাম যে অমুক পেশার লোকদের এটাই আকর্ষন বা এটাই অন্যতম লক্ষ্য।এভাবে বলা কি জায়েজ?

২) অনেক সময় দেখা যায় যে, দুইজন ব্যক্তি হাসি তামাশা করতে করতে একজন আরেকজনকে বলল যে,"অটিস্টিক এর মতো করস ক্যান " বা একজন আরেকজনকে বলল যে,"অটিস্টিক এর মতো মারবো তোকে",এভাবে বললে অপরজন কোনো কষ্ট না পেয়ে হাসি-ঠাট্টা রূপেই নিলো কিন্তু এভাবে অটিস্টিকদের গীবত করা হলো না? বা তাদের অধিকার নষ্ট করা হলো না?

নিয়ত:

ইমাম রুকুতে চলে যাওয়ায় ওযু করে তাড়াতাড়ি রাকাত ধরার জন্য কাতারে দাঁড়ানোর পূর্বেই হাটতে হাটতে মনে মনে নিয়ত পড়ি।এতে নামাজ শুদ্ধ হবে কি?

কসম:

কসম করার জন্য "আমি কসম করছি"এটা বলা আবশ্যক নাকি "আমি আল্লাহর নামে কসম করছি "এটা বলা আবশ্যক? আর কাউকে বললাম যে "আমি এরকম ঘটনা ঘটলে এরকম প্রতিক্রিয়া করবো" কিন্তু ‘কসম‘ শব্দটি ব্যবহার করিনি ।এতে কসম আপতিত হবে কি?

Answer 1

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ-

(১) নাম উল্লেখ না করলে গীবত হবে না। এভাবে বললে যে,অমুক পেশার লোকদের এটাই আকর্ষন বা এটাই অন্যতম লক্ষ্য।এভাবে বললে তা গীবত হবে না। 

(২) এভাবে বলা উচিৎ নয়। তবে তা যদি তাদের বাস্তব কোনো অভ্যাস থাকে, তাহলে এদ্বারা কোনো গীবত হবে না।

নিয়ত অন্তরের বিষয়। সুতরাং এভাবে নিয়ত করলেও হবে। 

https://www.ifatwa.info/3101 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, 

কসম সম্পর্কে ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বর্ণনা করা হয় যে, 

(أَمَّا تَفْسِيرُهَا شَرْعًا) فَالْيَمِينُ فِي الشَّرِيعَةِ عِبَارَةٌ عَنْ عَقْدٍ قَوِيَ بِهِ عَزْمُ الْحَلِفِ عَلَى الْفِعْلِ أَوْ التَّرْكِ كَذَا فِي الْكِفَايَةِ.

ইয়ামিন বা কসম হল, যে ইবারত বা বাক্যমালার দ্বারা কসমকারী কোনো জিনিষ করা বা না করার শপথ করবে,

وَهِيَ نَوْعَانِ: يَمِينٌ بِاَللَّهِ تَعَالَى، أَوْ صِفَتِهِ، وَيَمِينٌ بِغَيْرِهِ، وَهِيَ تَعْلِيقُ الْجَزَاءِ بِالشَّرْطِ كَذَا فِي الْكَافِي.

(أَمَّا الْيَمِينُ بِغَيْرِ اللَّهِ فَنَوْعَانِ) : أَحَدُهُمَا الْيَمِينُ بِالْآبَاءِ، وَالْأَنْبِيَاءِ، وَالصَّوْمِ، وَالصَّلَاةِ، وَسَائِرِ الشَّرَائِعِ، وَالْكَعْبَةِ، وَالْحَرَمِ، وَزَمْزَمَ، وَنَحْوِ ذَلِكَ، وَلَا يَجُوزُ الْحَلِفُ بِشَيْءٍ مِنْ ذَلِكَ.

، وَالثَّانِي الشَّرْطُ، وَالْجَزَاءُ، وَهَذَا النَّوْعُ يَنْقَسِمُ إلَى قِسْمَيْنِ: يَمِينٌ بِالْقُرَبِ، وَيَمِينٌ بِغَيْرِ الْقُرْبِ أَمَّا الْيَمِينُ بِالْقُرَبِ فَهُوَ أَنْ يَقُولَ: إنْ فَعَلْت كَذَا فَعَلَيَّ صَوْمٌ، أَوْ صَلَاةٌ، أَوْ حَجَّةٌ، أَوْ عُمْرَةٌ، أَوْ بَدَنَةٌ، أَوْ هَدْيٌ، أَوْ عِتْقُ رَقَبَةٍ، أَوْ صَدَقَةٌ، أَوْ نَحْوُ ذَلِكَ، وَأَمَّا الْيَمِينُ بِغَيْرِ الْقُرَبِ فَهِيَ الْحَلِفُ بِالطَّلَاقِ، وَالْعَتَاقِ هَكَذَا فِي الْبَدَائِعِ.

কসম দুই প্রকারঃ (১) আল্লাহ বা তার সিফাতের উল্লেখপূর্বক কসম করা (২) আল্লাহ ব্যতীত ভিন্ন কিছু দ্বারা কসম করা। আর তা হচ্ছে, শর্ত ও জাযা । 

আল্লাহ ব্যতীত ভিন্ন কিছু দ্বারা কসম করা আবার দুই প্রকার। যথাঃ (১) বাপ,দাদা ও নবী এবং নামায রোযা ইত্যাদির নাম উল্লেখপূর্বক কসম করা। এটা নাজায়েয। (২) শর্ত এবং জাযা উল্লেখপূর্বক কসম করা। তা আবার দুই প্রকার, যথা- (ক) যেখানে জাযা কোনো প্রকার ইবাদত থেকে হবে, যেমন যদি আমি ঐ কাজ করি, তাহলে আমার উপর রোযা ওয়াজিব। (খ) অথবা জাযা ইবাদতের মধ্য থেকে হবে না। যেমন, আমি যদি ঐ কাজ করি তাহলে আমার স্ত্রী তালাক বা আমার গোলাম আযাদ।  

(وَأَمَّا رُكْنُ الْيَمِينِ بِاَللَّهِ) فَذِكْرُ اسْمِ اللَّهِ، أَوْ صِفَتِهِ، وَأَمَّا رُكْنُ الْيَمِينِ بِغَيْرِهِ فَذِكْرُ شَرْطٍ صَالِحٍ، وَجَزَاءٍ صَالِحٍ كَذَا فِي الْكَافِي

«الفتاوى الهندية» (2/ 51)

কসমের রুকুন হল, আল্লাহ শব্দ বা আল্লাহর কোনো সিফাত তাতে উল্লেখ থাকা। আর বিশুদ্ধ ও উপযোক্ত শর্ত এবং জাযা উপস্থিত থাকা। ( ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-২/৫১)

"আমি আল্লাহর নামে কসম করছি " কসমের জন্য বলা আবশ্যক নয়। বরং অন্য পদ্ধতি দ্বারাও কসম হতে পারে। 

"আমি এরকম ঘটনা ঘটলে এরকম প্রতিক্রিয়া করবো" এদ্বারা কসম হবে না।