بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
পবিত্র কুরআন
পাকের এরশাদ:
إِذْ
يُغَشِّيكُمُ
النُّعَاسَ
أَمَنَةً
مِنْهُ
وَيُنَزِّلُ
عَلَيْكُمْ
مِنَ
السَّمَاءِ
مَاءً
لِيُطَهِّرَكُمْ بِهِ وَيُذْهِبَ عَنْكُمْ رِجْزَ الشَّيْطَانِ-
“যখন
তিনি আরোপ করেন তোমাদের উপর তন্দ্রাচ্ছন্ন তা নিজের পক্ষ থেকে তোমাদের
প্রশান্তির জন্য এবং তোমাদের উপর আকাশ থেকে পানি অবতরণ করেন,
যাতে তোমাদিগকে পবিত্র করে দেন এবং যাতে
তোমাদের থেকে অপসারিত করে দেন শয়তানের অপবিত্রতা।” [সুরাহ আনফাল আয়াত ১১]
অন্য আয়াতে
ইরশাদ হয়েছে:
وَأَنْزَلْنَا مِنَ السَّمَاءِ مَاءً طَهُورًا-
“এবং
আমি আকাশ থেকে পবিত্রতা অর্জনের জন্যে পানি বর্ষণ করি।” [সুরাহ আল ফুরকান : আয়াত ৪৮]
যে পানি দিয়ে
পবিত্রতা অর্জন করা যায় তা নিম্নরূপ—
১। খালেস পানি।
(সুরা : আনফাল, আয়াত : ১১, বুখারি, হাদিস : ১৪৬)
খালেস পানি বলা
হয় ওই পানিকে, যাতে মৌলিক গুণাবলি (রং, স্বাদ, ঘ্রাণ) বহাল থাকে,
কোনো নাপাকির সংমিশ্রণ না হয় এবং অন্য
কোনো বস্তু তার ওপর প্রাধান্য বিস্তার না করে। (ইবনে মাজাহ,
হাদিস : ৫১৪)
খালেস পানি বলতে
নিম্নের পানিগুলোকে বোঝানো হয়—
১। আসমান থেকে
বর্ষিত পানি ২. কূপের পানি ৩. ঝরনার পানি ৪. নদীর পানি ৫. সাগরের পানি ৬. বরফ গলা
পানি .৭ কুয়াশার পানি।(আল ফিকহুল হানাফি আল মুইয়াসসার : ১/৩৩)
পবিত্রতা অর্জিত
হওয়া ও না হওয়ার দিক থেকে পানি পাঁচ প্রকার—১। সাধারণ পবিত্র পানি : যে পানি নিজেও পবিত্র আবার অন্যকেও পবিত্র করতে সক্ষম তা হলো খালেস পানি। (সুরা : আনফাল, আয়াত : ১১; বুখারি, হাদিস : ১৪৬)
২। মাকরুহ পানি : যে পানি নিজে পবিত্র এবং তা থেকে পবিত্রতাও অর্জন করা যায়, তবে মাকরুহ; যেমন—বিড়াল, মোরগ, ছিঁড়ে-ফেড়ে খাওয়া জন্তু বা সাপের উচ্ছিষ্ট পানি। খালেস পবিত্র পানি থাকা অবস্থায় এমন পানি দিয়ে অজু-গোসল করা মাকরুহে তানজিহি। যদি এমন পানি ছাড়া কোনো পানি না থাকে, তাহলে এই পানি ব্যবহার করা মাকরুহ হবে না। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৬২; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৮৩২৪)
৩। সন্দেহযুক্ত পানি : এ ধরনের পানি পবিত্র, কিন্তু তা দ্বারা পবিত্র হওয়ার বিষয়টি সন্দেহযুক্ত; যেমন—গাধা অথবা খচ্চরের উচ্ছিষ্ট পানি। এই পানি পবিত্র হওয়ার ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই, কিন্তু এর দ্বারা অজু করা ঠিক হবে কি না তাতে সন্দেহ। তাই এমন পানি ছাড়া অন্য পানি না থাকলে তা দিয়ে অজুও করবে, তায়াম্মুমও করবে। এ ব্যাপারে পরস্পর বিরোধপূর্ণ হাদিস থাকায় বিষয়টি সন্দেহযুক্ত বলে বিবেচিত হবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৮৭৭; আবু দাউদ, হাদিস : ৩৩১৫)
৪। ব্যবহৃত পানি : হাদিসের স্পষ্ট বর্ণনার কারণে ব্যবহৃত পানি পবিত্র। তবে হাদিসের ভাষ্য মতে, এই পানি দ্বারা অজু হবে না। (বুখারি, হাদিস : ৫২৪৪)
ব্যবহৃত পানি বলা হয় এমন পানিকে, যা ‘হাদাস’ (অপবিত্রতা দূর করা বা সওয়াব অর্জনের জন্য অজু ও গোসলে ব্যবহৃত হয়েছে। ব্যবহারকারীর শরীর থেকে আলাদা হওয়ার পর সেই পানি ব্যবহৃত পানি বলে গণ্য হবে।
৫. নাপাক পানি : সামান্য আবদ্ধ পানি, যাতে নাপাকির মিশ্রণ ঘটেছে—পানির মধ্যে নাপাকির প্রভাব প্রকাশ হোক বা না হোক, এমন পানি দিয়ে পবিত্রতা অর্জন করা যাবে না। (বুখারি, হাদিস : ২৩২)
যে পানির মধ্যে নাপাকির প্রভাব প্রকাশ পায় তা কম হোক আর বেশি, ভাসমান হোক বা আবদ্ধ—সবই নাপাক পানি হিসেবে গণ্য হবে। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৫১৪)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
মিনারেল ওয়াটার পবিত্র হওয়ার ব্যাপারে সকল উলামায়ে কেরাম একমত পোষণ করেছেন।আমরা জানি যে,তহারত অর্জনের জন্য পানি পবিত্র হওয়া শর্ত। সুতরাং উক্ত পানি পবিত্র হওয়াই তা দিয়ে অজু ,গোসল ও পবিত্রতা অর্জন করা যাবে।