আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
402 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম। আমি আবুল গাজী, কোরীয়া থেকে।
প্রশ্নঃ আমার স্ত্রীর দাবী যে, ঝগড়ার সময় আমি নাকি বলেছি, " তরে ছাইড়া দিলাম" কিন্তু আমার যতদূর মনে পড়ে আমি বলেছি "তুই আমার কথা না শুনলে আমার বাড়িতে থাকার দরকার নাই, তর বাপের বাড়ি চইলা যা। উল্লেখ্য যে, আমি এসব বলেছি ভয় দেখানোর জন্য বা ধমক স্বরূপ। তালাকের নিয়তে নয়।
এখন ২ টা প্রশ্ন হল যে, ১)উপরোক্ত দুইটি দাবী দুজনের দুইরকম। এই কথাগুলোর দ্বারা কি তালাক হয়েছে?

কোন এক ওয়েব পেইজে পড়েছিলাম যে, তালাকের নিয়ত না থাকলেও ছাইড়া দিলাম বললে এক তালাক হয়ে যায়,। এটা দেখে আমি ঘাবড়ে যাই, তখন রাজাআত সম্পর্কে জানতে পারি যে, তিন মাসের (ইদ্দতের) ভিতর ফিরিয়ে নিতে পারব কোনরূপ বিবাহ দোহরানো ছাড়া।
প্রশ্ন ২) যেহেতু আমি প্রবাসী তাই রাজাআাতের জন্য স্বামী স্ত্রী একত্রে থাকার সুযোগ ছিলনা তাই তাত্ক্ষণিক আমি আমার মা চাচী দেরকে শশুর বাড়িতে পাঠাই স্ত্রীকে নিয়ে আসার জন্য। সে আসতে রাজি না তার দাবী আমি ঐটা বলেছি (ছাইরা দিলাম)। আমি ঝামেলা বাড়াতে চাইনি। তাই অস্বীকার করেছি যে আমি ওসব বলিনাই। কারন, কোন কথায় কতটুকু হয় বা রাজাআত বিষয়ে এতসব বুঝাইতে গেলে ঝামেলা আরো বাড়বে, তাই আমি ওর দাবী অস্বীকার করেছি এবং বারবার আমার বাড়িতে যাওয়ার জন্য বলেছি/অনুরোধ করেছি/চাপ দিয়েছি এমনকি আমার শশুরকেও অনেক ভাবে বলেছি। প্লাস আমি নিজে নিজে মনে মনে বলেছি  আমার স্ত্রী কে ফিরিয়ে নিলাম। ওরে শুনিয়ে বলিনি কারন ঝামেলা বাড়ে কিনা... অতঃপর কোন এক কারনে ছুটিতে দেশে যাই। তখন স্ত্রী প্রেগন্যান্ট ছিল ৮ মাস। যতটুকু জানি ইদ্দত সময় তিন মাস এবং  প্রেগন্যান্ট মেয়েদের ইদ্দত বাচ্চা প্রসব হওয়া পর্যন্ত।  ঐ অবস্থায় আমি স্ত্রী সহবাস করি যদিও তখন ঐ ঝগড়ার ৫ মাস হয়ে গেছে, আমি প্রেগন্যান্ট অবস্থাকে ইদ্দত সময় ধরে সহবাস করেছি।
উপরোক্ত সুরতগুলোর কোনটি দ্বারা কি আমার রাজাআত (রুজু) শুদ্ধ হয়েছে? প্লিজ জানাবেন হুজুর। খুব হতাশায় আছি।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
আপনি যদি নিশ্চিত হোন যে আপনি তাকে "ছেড়ে দিলাম"" বলেননি,এবং স্ত্রীর পক্ষে সেই সময়ে শুনেছে এমন কেহ না থাকলে, তালাক পতিত হবেনা।   

(০২)
আর যদি আপনি ছেড়ে দিলাম বলে থাকেন,সেক্ষেত্রে তালাক হবে।
,
"ছেড়ে দিলাম” বাক্যটি আমাদের দেশীয় পরিভাষায় তালাকের “সরীহ” তথা তালাকের জন্য ব্যবহৃত পরিস্কার শব্দ।
তাই এ শব্দ দ্বারা নিয়ত ছাড়াও এক তালাকে রেজয়ী পতিত হয়ে গেছে। ইদ্দতের মাঝে আবার স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনা যাবে।

سرحتك وهو “رها كردم” لأنه صار صريحا فى العرف (رد المحتار، كتاب الطلاق، باب الكنايات-4/530)
সারমর্মঃ
রেহাই করে দিলাম,বিচ্ছেদ করে দিলাম,এগুলো আমাদের দেশীয় পরিভাষায় তালাকের “সরীহ” বাক্য হয়ে গিয়েছে।
,
اذا قال الرجل لامرأته: “بهشتم ترا از زنى” فاعلم بأن هذه اللفظة استعملها أهل خراسان وأهل العراق فى الطلاق، وأنها صريحة عند أبى يوسف حتى كان الواقع بها رجعيا ويقع بدون النية (الفتاوى الهندية، كتاب الطلاق، الفصل السابع فى الطلاق بألفاظ الفارسية-1/379، جديد-1/447، الفتاوى التاتارخانية-4/463، رقم-6678)
সারমর্মঃ
কোনো পুরুষ যদি তার স্ত্রীকে "তোমাকে ছেড়ে দিলাম" বলে,তাহলে জেনে রাখো এসব বাক্য খুরাসান,আহলে ইরাকগন স্পষ্ট তালাকের ক্ষেত্রে ব্যবহার করে থাকে। 

,
★সুতরাং সেক্ষেত্রে আপনি যেহেতু প্রেগন্যান্ট অবস্থায় তালাক দিয়ে প্রেগন্যান্ট অবস্থাতেই সহবাস করেছেন,সেক্ষেত্রে রাজাআত (রুজু) শুদ্ধ হয়েছে।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

وَ اُولَاتُ الۡاَحۡمَالِ اَجَلُہُنَّ اَنۡ یَّضَعۡنَ حَمۡلَہُنَّ ؕ وَ مَنۡ یَّتَّقِ اللّٰہَ یَجۡعَلۡ لَّہٗ مِنۡ اَمۡرِہٖ یُسۡرًا ﴿۴﴾ 
আর গর্ভবতী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব পর্যন্ত। আর যে আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করে আল্লাহ্ তার জন্য তার কাজকে সহজ করে দেন।
(সুরা তালাক ০৪)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...