আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
274 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (35 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকা তুহ
শায়েখ,জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিন অত্যন্ত ফযীলতপূর্ণ। এই দিনগুলো আমরা কি কি আমল করতে পারি?
এই প্রথম ১০ দিনে কি কি সুন্নাহ আর কি কি করা যাবে না?

একটু বিস্তারিত বলবেন দয়া করে।
জাযাকাল্লাহু খইরন।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا مِنْ أَيَّامٍ الْعَمَلُ الصَّالِحُ فِيهِنَّ أَحَبُّ إِلَى اللَّهِ مِنْ هَذِهِ الْأَيَّامِ الْعَشَرَةِ» قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ وَلَا الْجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ؟ قَالَ: «وَلَا الْجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ إِلَّا رَجُلٌ خَرَجَ بِنَفْسِهِ وَمَالِهِ فَلَمْ يَرْجِعْ مِنْ ذَلِكَ بِشَيْءٍ» . رَوَاهُ البُخَارِيّ

’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ আল্লাহ তা’আলার নিকট তাঁর দিনসমূহের মধ্যে এমন কোন দিন নেই, যে দিনের ’আমল এ (জিলহজ্জ মাসের) দশদিনের ’আমল অপেক্ষা অধিক প্রিয়। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসূল! আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও নয়? তিনি বললেন, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও নয়। তবে যে ব্যক্তি নিজের জীবন ও সম্পদ নিয়ে বের হয়েছে। আর তা হতে কোন কিছু নিয়ে ফিরেনি।
(বুখারী ৯৬৯, আবূ দাঊদ ২৪৩৮, আত্ তিরমিযী ৭৫৭, ইবনু মাজাহ্ ১৭২৭, ইবনু আবী শায়বাহ্ ১৯৫৪০, আহমাদ ১৯৬৮, ইবনু খুযায়মাহ্ ২৮৬৫, ইবনু হিব্বান ৩২৪, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৮৩৯২, ইরওয়া ৮৯০, সহীহ আত্ তারগীব ১২৪৮।)

জিলহজ্জ মাসের ১ম ১০ দিনের আমল সমূহঃ-
★যাদের উপর হজ ফরজ হয়েছে তারা ফরজ হজ আদায় করবো। আর এটিই হল জিলহজের প্রথম দশ দিনের শ্রেষ্ঠ আমল। 

আম্মাজান আয়েশা র. থেকে বর্ণিত আছে যে, নবী কারীম সা. বলেছেন, ঈদুল আজহার দিন কুরবানির চে’ আল্লাহর কাছে বনি আদমের আর কোন আমল এত অধিক প্রিয় নয়। কিয়ামত দিবসে তার শিং, পশম আর নক ইত্যাদি কোলে করে নিয়ে হাযির হবেন কুরবানি করেছেন যে ব্যক্তি, আর নিশ্চয় কুরবানির পশুর রক্ত মাটিতে পড়ার আগেই আল্লাহর দরবারে কুরবানি করাটা কবুল হয়ে যায়, সুতরাং খুশি মনে (আল্লাহ্ ওয়াস্তে) কুরবানি করো। -তিরমিজি, ইবনে মাজা,মিশকাত :১২৮, ফায়যুল কালাম ২৯৬ পৃ।

★জিলহজ মাসের আরেকটি মুস্তাহাবি আমল হল, চাঁদ উঠার আগে নখ, চুল আর পশমাদি কাটাছাটার প্রয়োজন হলে কেটেছেটে ফেলা এবং কুরবানির দিন পশুর গলায় ছুরি দেয়ার আগ পর্যন্ত এসবে হাত না দেয়া।

জিলহজ মাসের চাঁদ উঠার পর থেকে নিয়ে চুল, মোচ, নখ, বগল ও অন্য স্থানের লোম বা পশম না কাটা মুস্তাহাব। এ সম্পর্কে উম্মে সালমা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জিলহজের চাঁদ দেখে এবং কোরবানির ইচ্ছা করে, সে যতক্ষণ কোরবানি না করে, ততক্ষণ পর্যন্ত যেন চুল বা নখ না কাটে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৩৬৫৬)। তবে এ আমল মুস্তাহাব, ওয়াজিব নয়।
,
★ঈদের রাতে ইবাদতে রাত জাগা।
হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছেঃ 

حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ الْمَرَّارُ بْنُ حَمُّويَةَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُصَفَّى حَدَّثَنَا بَقِيَّةُ بْنُ الْوَلِيدِ عَنْ ثَوْرِ بْنِ يَزِيدَ عَنْ خَالِدِ بْنِ مَعْدَانَ عَنْ أَبِي أُمَامَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَنْ قَامَ لَيْلَتَيْ الْعِيدَيْنِ مُحْتَسِبًا لِلهِ لَمْ يَمُتْ قَلْبُهُ يَوْمَ تَمُوتُ الْقُلُوبُ
আবূ উমামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে ব্যক্তি দু’ ঈদের রাতে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশে ইবাদত করবে তার অন্তর ঐ দিন মরবে না, যে দিন অন্তরসমূহ মরে যাবে।
ইবনে মাজাহ ১৭৮২.বায়হাকী ৪/১০৩। যঈফাহ ৫২১, ৫১৩৬, তা’লীকুর রগীব ২/১০০। 

★তাকবিরে তাশরিক
তাকবিরে তাশরিক হল, যে তাকবির জিলহজের ৯ তারিখ ফজর থেকে ১৩ তারিখ আছর পর্যন্ত পড়া হয়। যে কারণে এই দিনগুলোকে আইয়্যামে তাশরিক বা তাশরিকের দিন বলা হয়। দিন হিসেবে পাঁচদিন হয়।
পুরুষদের পড়তে হয় বড় আওয়াজে আর মহিলাদের পড়তে হয় ছোট আওয়াজে। 
তাকবীর হল:—
اَللهُ أَكْبَرُ، اَللهُ أَكْبَرُ، لَاإِلَهَ إِلاَّ اللهُ، وَاللهُ أَكْبَرُ، اللهُ أَكْبَرُ وَلِلهِ الحَمْدُ
সাহাবি আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. ও আবু হুরাইরা রা. যিলহজ মাসের প্রথম দশকে বাজারে যেতেন ও তাকবীর পাঠ করতেন, লোকজনও তাদের অনুসরণ করে তাকবীর পাঠ করতেন। অর্থাৎ, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এই দুই প্রিয় সাহাবি লোকজনকে তাকবীর পাঠের কথা স্মরণ করিয়ে দিতেন।
(বুখারি, ঈদ অধ্যায়)


★জিলহজের ৯ রোজা।

عن حفصة- رضى الله عنها- قالت: أربع لم يكن يدعهن النبي- صلى الله عليه وسلم-: صيام عاشوراء، والعشر، وثلاثة أيام من كل شهر والركعتين قبل الغداة . رواه أحمد، والنسائي صحيح سنن أبي داود، صحيح سنن النسائي

হাফসা রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো চারটি আমল পরিত্যাগ করেননি। সেগুলো হল: আশুরার সওম, যিল হজের দশ দিনের সওম, প্রত্যেক মাসে তিন দিনের সওম, ও জোহরের পূর্বের দুই রাকাত সালাত।
আহমদ: ৬/২৮৭, আবু দাউদ: ২১০৬, নাসায়ী: ২২৩৬

★আরাফার দিনে বিশেষ রোজা।
আবু কাতাদাহ রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আরাফার দিনের রোজা রাখা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন,
«احتسب على الله أن يكفر السنة التي قبله والسنة التي بعده » .]...رواه مسلم [
আমি আল্লাহর কাছে আশাবাদী, ইহা পূর্ববর্তী এক বছর ও পরবর্তী এক বছররে গুনাহর কাফফারা হবে।
মুসলিম: ১১৬৩


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...