আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
305 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (44 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারাকাতুহ ।

আমি একজন অবিবাহিতা,,শিক্ষার্থী ।রোজগার করিনা।তবে বৃত্তির টাকা পাই।কিন্তু এখনো টাকা হাতে আসেনি।আমার খরচ আমার বাবা চালান।

দ্বীনের বুঝ পাওয়ার আগে,,বয়স ১০/১১ হবে,,, (আমি তখন সাবালিকা ছিলাম,,আমি তীব্র ধারণা করি ) ভাইয়ের কাছে আল্লাহর নামে কসম করে মিথ্যে বলেছিলাম।আমি জানতাম মিথ্যা কসম করা উচিৎ না,,গুনাহ,,, কিন্তু এই মিথ্যা কসমের ভয়াবহতা জানতাম না।সত্য কথা,,আমি জানতাম না।এখন আমার বয়স ২০+।আল্লাহর দয়ায়,দেড় বছর এর চেয়ে কম সময় হলো দ্বীনের সামান্য জ্ঞান লাভ করেছি।

১)আমি কি আমার এর ভয়াবহতা না বুঝে কৃত মিথ্যা কসম এর জন্য জাহান্নামি হয়ে যাবো?

দুয়া করবেন আল্লাহ যেন আমাকে মাফ করেন।

বয়ঃসন্ধিকালের শুরুর দিকে একজন বড় ভাইকে পছন্দ ছিল।ফোনে কথা হত।আমার তখন নিজস্ব ফোন ছিল না।তার সাথে কথা বলার জন্য আমি ফোন লুকায় নেওয়ার চেষ্টা করতাম।আমার এখন মনে হচ্ছে যে,,,আমি হয়ত মান্নত করেছিলাম,,ভাইয়ার সাথে কথা বলার জন্য যদি *সেদিন* ফোন হাতে পাই তাহলে এত রাকাত নামাজ পড়ব।কিন্তু আমার মনে নেই যে,,###আমি মুখে মান্নত এর কথাগুলো উচ্চারণ করেছিলাম কি না,###করলে ঠিক কতবার মান্নত করেছিলাম###একটিও মান্নত পূরন হয়েছিল কি না###কত রাকাত নামাজ।
২)এই মান্নত করার জন্য কি কোনো প্রকার কাফফারা আদায় করতে হবে?

৩)যদি ধরে নেই,,মান্নত পূরন হয়েছে তাহলে কি কাফফারা দিতে হবে?

৪)নামাজগুলো কি আদায় করতে হবে?করতে হলে কিভাবে করব?

৪)তওবা করতে হবে কি?

দ্বীনের সামান্য বুঝ পাওয়ার পর একটি পাপ ছাড়ার জন্য তওবা করার সময়,,,দুয়ায় বলেছিলাম,"হে আল্লাহ, আমি প্রমিজ করছি অমুক কাজটি আর করব না।" বা,প্রায় এরকম অন্য বাক্য।কিন্তু আমি সে সময় জানতাম না,,এটি শপথ এ পরিণত হয়ে গেছে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করায়।

পরে এ শপথ আমি রাখতে পারিনি,,ভেঙে ফেলেছিলাম এবং গুনাহ টি কয়বার করেছি স্মরণ নেই।আবারও  ওয়াদা করে শপথ নিয়ে ফেলেছিলাম,,,একই ওয়াদা বা অন্য ওয়াদা।সেবার ও জানতাম না সেটা শপথ হয়ে গিয়েছিল।এবং পরবর্তীতে তা নিজ দোষ এ আবারও ভেঙে ফেলেছিলাম।

আমার মনে নেই ,,,কতবার আমি শপথ করেছি এভাবে এবং ভেঙে কয়বার গুনাহটি করেছি।তবে,,,আনুমানিক ধারণা,,আমি এরকম শপথ এর বাক্য দুইবার উচ্চারণ করেছি ইন শা আল্লাহ এবং প্রথমবার ভেংগে একবার,,,,আবার দ্বিতীয়বারে ছয়বার হতে পারে।

৫)আমি পড়াশুনা করছি,,ছাত্রী।আপাতত কোনো কামাই নেই।তবে বৃত্তির টাকা পাই কিন্তু আপাতত হাতে টাকা নেই।আমার কি কাফফারার জন্য বাবার কাছে টাকা চাইতে হবে যেহেতু বাবা ভরনপোষণ চালনা করেন?আমি ভয় পাচ্ছি,,টাকা চাইতে কারন এর পরিমান অনেক যদিও বাবার দেওয়ার সামর্থ্য ইন শা আল্লাহ আছে।

৬)আমি কি কিছুসময় বিলম্ব করতে পারব?হয়ত,আমি টাকার ব্যবস্থা করতে পারব ইন শা আল্লাহ।
৭)নাকি,রোজা দিতে পারবো?যদি দিতে পারি তাহলে কি ২১ টা রোজা টানা করতে হবে?যদি পিরিয়ড শুরু হয়ে যায়?

৮)যদি বিলম্ব করি,,তাহলে কি কাফফারা কবুল হবেনা?আমার সামনে ভর্তি পরীক্ষা।যদি পরীক্ষার আগে রোজা শেষ করতে না পারি তখন কি পরীক্ষার সময়টা বিলম্ব করতে পারব?

৯)কাফফারা না দেওয়া পর্যন্ত কি তওবা কবুল হবেনা?এই দুটো কি একসাথে?আমি তওবা করার চেষ্টা করেছি।যেহেতু কাফফারা দেইনি,,,এর জন্য কি এখনো তওবা হয়নি?

১০)কাফফারার ব্যাপার এ জানতে,,,দ্বিধা দ্বন্দ,, পরিস্থিতি ইত্যাদি কারনে কাফফারা দিতে দেরি করার জন্য কি গুনাহ হবে? আবার তওবা করতে হবে?

১১)কাফফারা দেওয়ার পর যদি শপথ না নেই এবং পাপ কাজটি পূনরায় ঘটে,,,তখনো কি কাফফারা আদায় করতে হবে?

সব প্রশ্ন গুলোর উত্তর খুব প্রয়োজন। আল্লাহ যেন আপনাদের নেক কাজ কবুল করেন। জাঝাকুমুল্লহু খইরন।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


সুরা মায়েদার ৮৯ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন 

 لَا یُؤَاخِذُکُمُ اللّٰہُ بِاللَّغۡوِ فِیۡۤ اَیۡمَانِکُمۡ وَ لٰکِنۡ یُّؤَاخِذُکُمۡ بِمَا عَقَّدۡتُّمُ الۡاَیۡمَانَ ۚ فَکَفَّارَتُہٗۤ اِطۡعَامُ عَشَرَۃِ مَسٰکِیۡنَ مِنۡ اَوۡسَطِ مَا تُطۡعِمُوۡنَ اَہۡلِیۡکُمۡ اَوۡ کِسۡوَتُہُمۡ اَوۡ تَحۡرِیۡرُ رَقَبَۃٍ ؕ فَمَنۡ لَّمۡ یَجِدۡ فَصِیَامُ ثَلٰثَۃِ اَیَّامٍ ؕ ذٰلِکَ کَفَّارَۃُ اَیۡمَانِکُمۡ اِذَا حَلَفۡتُمۡ ؕ وَ احۡفَظُوۡۤا اَیۡمَانَکُمۡ ؕ کَذٰلِکَ یُبَیِّنُ اللّٰہُ لَکُمۡ اٰیٰتِہٖ لَعَلَّکُمۡ تَشۡکُرُوۡنَ ﴿۸۹﴾

আল্লাহ তোমাদেরকে পাকড়াও করেন না তোমাদের অর্থহীন কসমের ব্যাপারে, কিন্তু যে কসম তোমরা দৃঢ়ভাবে কর সে কসমের জন্য তোমাদেরকে পাকড়াও করেন। সুতরাং এর কাফফারা হল দশ জন মিসকীনকে খাবার দান করা, মধ্যম ধরনের খাবার, যা তোমরা স্বীয় পরিবারকে খাইয়ে থাক, অথবা তাদের বস্ত্র দান, কিংবা একজন দাস-দাসী মুক্ত করা। অতঃপর যে সামর্থ্য রাখে না তবে তিন দিন সিয়াম পালন করা। এটা তোমাদের কসমের কাফ্ফারা, যদি তোমরা কসম কর, আর তোমরা তোমাদের কসম হেফাযত কর। এমনিভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ বর্ণনা করেন যাতে তোমরা শোকর আদায় কর। 
,
★সুতরাং শপথ তিন প্রকার। এক. যদি অতীত ঘটনা সম্পর্কে ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা শপথ করা হয়, তাকে 'ইয়ামিনে গুমুস' বা পাপে নিমজ্জিত শপথ বলা হয়। উদাহরণত, কেউ কোনো কাজ করে জেনেশুনে শপথ করে বলল যে সে কাজটি করেনি। এ মিথ্যা শপথ কবিরা গুনাহ। তবে এর জন্য কাফফারা ওয়াজিব হবে না।

দুই. নিজ ধারণায় সত্য মনে করে কোনো অতীত ঘটনা সম্পর্কে শপথ করা। অথচ বাস্তবে তা অসত্য। যেমন- কোনো অসমর্থিত সূত্রে জানা গেল, অমুক ব্যক্তি এসে গেছে। এর ওপর নির্ভর করে কেউ আল্লাহর নামে শপথ করে বলল, 'অমুক ব্যক্তি এসে গেছে।' এরপর দেখা গেল, এটি বাস্তবের বিপরীত। এ ধরনের শপথকে 'ইয়ামিনে লগ্ভ' বলা হয়। 

এ ছাড়া অনিচ্ছাকৃতভাবে মুখে শপথবাক্য উচ্চারিত হলে একেও 'ইয়ামিনে লগ্ভ' বা অহেতুক শপথ বলা হয়। এ-জাতীয় শপথে কোনো গুনাহ নেই। কাফফারাও দিতে হয় না।

তিন. আল্লাহর নাম নিয়ে ভবিষ্যতে কোনো কাজ করা বা না করার শপথ করা। এ রকম শপথকে 'ইয়ামিনে মুনআকিদ' বা কার্যকর শপথ বলা হয়। এ শপথ ভঙ্গ করলে কাফফারা ওয়াজিব হবে। এমনকি কোনো কোনো অবস্থায় গুনাহও হয়।

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
আপনি আল্লাহর নাম নিয়ে ভবিষ্যতে কোনো কাজ করা বা না করার শপথ করেছিলেন?
উপরে তথ্য মতে আপনি আল্লাহর নাম নিয়ে এমন কোনো শপথ করেননি।
,
তাই কোনো কাফফারা আপনার উপর ওয়াজিব নয়।
,
আপনি নামাজ পড়া নিয়ে যেসব মান্নত করেছিলেন,এগুলো যেহেতু আদায় করেননি,তাই এখন সেই নামাজ গুলি আদায় করবেন।
ঠিক কতগুলি নামাজের মান্নত হয়ে গেছে,গননা করতে না পারলে প্রবল ধারনার ভিত্তিতে কিছু সংখ্যা নির্দিষ্ট করে সেই নামাজ এখন আদায় করবেন।
,
নিজের গুনাহের জন্য আল্লাহর কাছে তওবা করবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 234 views
...