আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
2,955 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (49 points)
আসসালামু আলাইকুম  শাইখ

আমার এক দ্বীনি ভাই আমাকে নিম্নোক্ত হাদিসটি দিয়ে আমাকে জানান যে "সিহাব" নামটি রাখা সঠিক হবে না।(আমার নামের শেষাংশ "সিহাব")

হাদিসটি হলোঃ আছিয়া শব্দের একটি অর্থ নাফরমান,অবাধ্যচারিনী।এই নামের মধ্যে আল্লাহর অবাধ্যচরণের ইঙ্গিত রয়েছে। কোন মুসলমানের এই ধরনের নাম রাখা উচিত নয়।এই মূলনীতিত্র রাসুল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিম্নোক্ত নাম গুলোও পরিবর্তনকরে দিয়েছেন আছ(অবাধ্য),উতলাহ(রূঢ়),শয়তান,শিহাব(উল্কাপিন্ড)মিশকাত শরীফ ২/৪০৮
এখন আমার করণীয় সম্পর্কে জানাবেন হুজুর।

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
 জবাবঃ- 
 আ'ছিয়া ইছয়ান শব্দ থেকে নির্গত।যার অর্থ হলো,অবাধ্যতা। আল্লাহর বিধানের উল্টো কোনো কাজ করা।এটা নিন্দনীয় নাম। হযরত ইবনে উমর রাযি থেকে বর্ণিত।
 عَنِ ابْنِ عُمَرَ : " أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ غَيَّرَ اسْمَ عَاصِيَةَ ، وَقَالَ: (أَنْتِ جَمِيلَةُ) " 
 রাসূলুল্লাহ সাঃ আ'ছিয়া নাম পরিবর্তন করে বলেন,আজ থেকে তুমি জামিলাহ।(সহীহ মুসলিম-২১৩৯) উক্ত নাম মুসলমানদের জন্য নিন্দনীয় হওয়ার ব্যাপারে উক্ত হাদীসই যথেষ্ট। শিহাব নামের অর্থ:আগুনের উল্কাপিণ্ড,গরম ইত্যাদি হযরত আয়েশা রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
 عن عائشة رضي الله عنها قالت: ذُكر عند رسول الله صلى الله عليه وسلم رجل يقال له: شهاب، فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: "بل أنت هشام". (الأدب المفردبالتعليقات ،سمير ابن آمين الزهيري،طبع بمكتبة المعارف،رياض) 
 রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট একবার এক ব্যক্তির আলোচনা উঠলো,যাকে শিহাব নামে ডাকা হতো,রাসূলুল্লাহ সাঃ শুনে বললেন, না বরং তুমি হেশাম।(আল-আদাবুল-মুফরাদ,ইমাম বোখারী-পৃষ্টা:৪৪৪,হাদীস নংঃ৮২৫,) 

 কারো এই নাম রাখা হয়ে গেলে সেটাকে কি পরিবর্তন করতে হবে?
এ সম্পর্কে বলা যায় যে,এ নামকে বদলিয়ে ফেলা মুস্তাহাব।তবে ওয়াজিব নয়।যেমন বর্ণিত রয়েছে, হযরত সামুরা বিন জুনদুব রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে,
 وعن سمرة بن جندب - رضي الله عنه - قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: " «لا تسمين غلامك يسارا، ولا رباحا، ولا نجيحا، ولا أفلح، فإنك تقول: أثم هو؟ فلا يكون، فيقول لا» ". رواه مسلم. وفي رواية له، قال: " «لا تسم غلامك رباحا، ولا يسارا ولا أفلح ولا نافعا» 
" রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,তুমি তোমার গোলামের নাম ইয়াসার,রাবাহ,নাজিহ,আফলাহ দ্বারা রাখবে না।তুমি যদি কখনোতাকে বলো,রাবাহ কি এখানে আছে,যদি সে ঐখানে না থাকে,তাহলে জবাবে বলা হবে যে,রাবাহ এখানে নেই।অথচ তখন শুভকামনা না হয়ে মন্দকামনা হবে।মুসলিম শরীফের সূত্রে বর্ণিত(মিরকাতুল মাফাতিহ-৪৭৫৩) 

 মুল্লা আলী কারী রাহ উক্ত হাদীসের ব্যখ্যায় লিখেন,
 قال أصحابنا: يكره التسمي بالأسماء المذكورة في الحديث، وما في معناها وهي كراهة تنزيه لا تحريم، والعلة فيه ما نبه - صلى الله عليه وسلم - بقوله: أثم هو؟ فيقول: لا 
 আমাদের উলামায়ে কেরাম বলেন,হাদীসে উল্লেখিত নাম দ্বারা কারো নাম রাখা মাকরুহে তানযিহি বা অপছন্দনীয়।এর কারণ হল,কখনো শুভকামনার স্থলে মন্দ কামনা হয়ে যেতে পারে।(আল-মিনহাজ,শরহে মুসলিম) 

 শায়েখ বিনবায রাহ, বলেন, শিহাব শব্দ দ্বারা নাম রাখাতে নাম কোনো প্রকার সমস্যা নাই। 

 সু-প্রিয় পাঠকবর্গ! 
 সর্বসম্মতিক্রমে আ'ছিয়া নামকে পরিবর্তন করাই জরুরী।তবে শিহাব শব্দ দ্বারা নাম রাখাকে কেন্দ্র করে মতভেদ রয়েছে।হ্যা নিশ্চিন্তরূপে এ সিদ্ধান্তে পৌছা যায় যে,শিহাব শব্দ দ্বারা নাম রাখা হারাম নয়।এবং এ নাম দ্বারা কারো নাম রাখা হয়ে গেলে তার নাম পরিবর্তন করা ওয়াজিব ও নয়,বরং এক্ষেত্রে হুকুম মুস্তাহাব পর্যায়ের। আর সিহাব যা সিন দ্বারা হয়ে থাকে, সেই নামের অর্থ হল, গভীর নলকূপ,জঙ্গলের আধিবাসী,লোভী,ইত্যাদি। সুতরাং সেই নামের অর্থও তেমন সুবিধাজনক নয়, না রাখাই উত্তম। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (49 points)
জাযাকাল্লাহ খাইরান শাইখ
by (597,330 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...