জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
.
بسم الله الرحمن الرحيم
(১.২,৩)
★নিজের মায়ের ভাষায় কথা বলা ব্যক্তির অধিকার।
★জুলুমহীনভাবে স্বীয় ভূখন্ডে বসবাস করা প্রতিটি ব্যক্তির অধিকার। সেই অধিকার থেকে যারা অন্যায়ভাবে বঞ্চিত করতে চেয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার কারণে যাদেরকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে তারা যদি মুসলমান হয়ে থাকেন, তাহলে উক্ত ব্যক্তি শহীদ বলে গণ্য হবে।
মুসলমান না হলে উক্ত ব্যক্তিকে শহীদ বলা যাবে না। কারণ শহীদ এটি কোন রাজনৈতিক শব্দ নয়। এটি ইসলামী শরীয়তের একটি বিধান সম্বলিত পরিভাষা। এটি কেবল মুসলমানদের জন্যই প্রযোজ্য। বিধর্মীদের জন্য নয়।
শহীদ ইসলামী দৃষ্টিতে খুবই মর্যাদাবান ও তাৎপর্যপূর্ণ একটি শব্দ। এটি ইসলামের নিজস্ব পরিভাষা। শহীদ মৃত্যুবরণ করার সাথে সাথেই জান্নাতের নেয়ামত ভোগ করতে থাকে।
শহীদ কোন সামাজিক বা রাজনৈতিক পরিভাষা নয়। তাই এটার যত্রতত্র ব্যবহার কিছুতেই কাম্য নয়। হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টান, নাস্তিক-মুরতাদ সকলের জন্যই এ শব্দ ব্যবহার করা একটি ধৃষ্টতা বৈ কিছু নয়।
,
★১৯৫২ সালের ও তার বিগত বছরগুলোর ভাষা আন্দোলনে নিহত মুসলমান ব্যক্তিদের কে "ভাষাশহীদ" বলা যাবে।
★মুক্তিযুদ্ধের সময় যেসব মুসলমান যুদ্ধরত অবস্থায় নিহত হয়েছেন তাঁদেরকে এবং যেসব মুসলমান নির্যাতনে-হত্যাযজ্ঞে অন্যায়ভাবে নিহত হয়েছেন তাঁদেরকে 'শহীদ' বলা যাবে।
★ আততায়ীর আক্রমনে যেসব মাজলুম মুসলমান মারা গিয়েছেন,তাদেরকেও শহিদ বলা যাবে।
عن سعيد بن زيد عن النبى -صلى الله عليه وسلم- قال : « من قتل دون ماله فهو شهيد ومن قتل دون أهله أو دون دمه أو دون دينه فهو شهيد
হযরত সাঈদ বিন যায়েদ থেকে বর্ণিত। রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন-“যে ব্যক্তি নিজ সম্পত্তি রক্ষায় নিহত হয় সে শহীদ। যে ব্যক্তি নিজ পরিবার রক্ষায় নিহত হয় সেও শহীদ। অথবা প্রাণ রক্ষায় কিংবা দ্বীন রক্ষায় নিহত হয় সেও শহীদ। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং-৪৭৭৪, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৬৫২)
আল্লাহর রাস্তায় জিহাদরত অবস্থায় যারা শহীদ হন তাদের বলা হয় শহীদ। এটা হল সত্যিকার শহীদ। রাসূল সাঃ কতিপয় ব্যক্তিকে হুকুমের দিক থেকে শহীদ বলেছেন। প্রকৃত শহীদ নয় বরং শহীদের কাছাকাছি মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি। যেমন হাদীসে রয়েছে-
أن جابر بن عتيك أخبره :أن رسول الله صلى الله عليه و سلم قال الشهداء سبعةسوى القتل في سبيل الله المطعون شهيد والغرق شهيد وصاحب ذات الجنب شهيد والمبطون شهيد والحرق شهيد والذي يموت تحت الهدم شهيد والمرأة تموت بجمع شهيد
হযরত জাবের বিন আতীক রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন-আল্লাহর পথে মৃত্যুবরণ করা ছাড়াও সাত প্রকার শহীদ রয়েছে। ১-মহামারীতে মৃত্যুবরণকারী শহীদ। ২-পানিতে নিমজ্জিত শহীদ। ৩-শয্যাশায়ী অবস্থায় মৃত শহীদ। ৪-পেটের রোগ মৃত্যুবরণকারী শহীদ। ৫-আগ্নিদগ্ধ ব্যক্তি শহীদ। ৬-যে ব্যক্তি ধ্বংসাবশেষের নিচে পড়ে মারা যায় সেও শহীদ। ৭-সন্তান প্রসব করতে মারা যাওয়া নারীও শহীদ। {মুয়াত্তা মালিক, হাদিস নং-৫৫৪, ৮০২, আল মু’জামুল কাবীর, হাদিস নং-১৭৮০, সহীহ কুনুজু সুন্নাতিন নাবাবিয়্যাহ, হাদিস নং-২৩}
সুতরাং যেসব মুসলমান একাত্তরে নিজের প্রাণ ও পরিবার ও ন্যায্য অধিকার রক্ষায় মারা গেছেন এবং ৫২ এর ভাষা আন্দোলনে যে সমস্ত মুসলমানদের অন্যায় ভাবে মারা হয়েছে, তারা শহীদ। যা উপরোক্ত হাদীসের আলোকে পরিস্কার ভাষায়ই বুঝে আসছে।
.
والله أعلم بالصواب
.
উত্তর লিখনে
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ IOM