বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
١٣ -عَنْ أَبِي مَالِكٍ الْأَشْعَرِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ “الطَّهُورُ شَطْرُ الْإِيمَانِ، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ تَمْلَأُ الْمِيزَانَ،وَسُبْحَانَ اللَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ تَمْلَآنِ -أَوْ: تَمْلَأُ- مَا بَيْنَالسَّمَاءِ وَالْأَرْضِ، وَالصَّلَاةُ نُورٌ، وَالصَّدَقَةُ بُرْهَانٌ،وَالصَّبْرُ ضِيَاءٌ، وَالْقُرْآنُ حُجَّةٌ لَك أَوْ عَلَيْك، كُلُّ النَّاسِيَغْدُو، فَبَائِعٌ نَفْسَهُ فَمُعْتِقُهَا أَوْ مُوبِقُهَا”. رَوَاهُ مُسْلِمٌ
আবূ মালিক আল আশ’আরী (রা:) থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ পবিত্রতা হল ঈমানের অংশ।“আলহামদু লিল্লা-হ” মিযানের পরিমাপকে পরিপূর্ণ করে দিবে এবং “সুবহানাল্লা-হ ওয়াল হামদুলিল্লা-হ” আসমান ও জমিনের মধ্যবর্তী স্থানকে পরিপূর্ণ করে দিবে। “সালাত”হচ্ছে একটি উজ্জ্বল জ্যোতি।“সদাকাহ” হচ্ছে দলীল। “ধৈর্য” হচ্ছে জ্যোতির্ময়। আর “আল কুরআন’ হবে তোমার পক্ষে অথবা বিপক্ষে প্রমাণ স্বরূপ। বস্তুতঃ সকল মানুষই প্রত্যেক ভোরে নিজেকে আমলের বিনিময়ে বিক্রি করে। তার আমাল দ্বারা সে নিজেকে (আল্লাহর আযাব থেকে) মুক্ত করে অথবা সে তার নিজের ধ্বংস সাধন করে।( সহীহ মুসলিম-৪২২)
ইমাম নববী রাহ, উক্ত হাদীসের ব্যখ্যায় বলেন,
وَأَمَّا قَوْلُهُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالصَّلَاةُ نُورٌ فَمَعْنَاهُ أَنَّهَا تَمْنَعُ مِنَ الْمَعَاصِي وَتَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَرِ وَتَهْدِي إِلَى الصَّوَابِ كَمَا أَنَّ النُّورَ يُسْتَضَاءُ بِهِ وَقِيلَ مَعْنَاهُ أَنَّهُ يَكُونُ أَجْرُهَا نُورًا لِصَاحِبِهَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَقِيلَ لِأَنَّهَا سَبَبٌ لِإِشْرَاقِ أَنْوَارِ الْمَعَارِفِ وَانْشِرَاحِ الْقَلْبِ وَمُكَاشَفَاتِ الْحَقَائِقِ لِفَرَاغِ الْقَلْبِ فِيهَا وَإِقْبَالِهِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى بِظَاهِرِهِ وَبَاطِنِهِ وَقَدْ قَالَ اللَّهُ تعالى واستعينوا بالصبر والصلاة وَقِيلَ مَعْنَاهُ أَنَّهَا تَكُونُ نُورًا ظَاهِرًا عَلَى وَجْهِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَيَكُونُ فِي الدُّنْيَا أَيْضًا عَلَى وَجْهِهِ الْبَهَاءُ بِخِلَافِ مَنْ لَمْ يُصَلِّ وَاللَّهُ أَعْلَمُ وَأَمَّا قَوْلُهُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالصَّدَقَةُ بُرْهَانٌ فَقَالَ صَاحِبُ التَّحْرِيرِ مَعْنَاهُ يَفْزَعُ إِلَيْهَا كَمَا يَفْزَعُ إِلَى الْبَرَاهِينِ كَأَنَّ الْعَبْدَ إِذَا سُئِلَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَنْ مَصْرِفِ مَالِهِ كَانَتْ صَدَقَاتُهُ بَرَاهِينَ فِي جَوَابِ هَذَا السُّؤَالِ فَيَقُولُ تَصَدَّقْتُ بِهِ قَالَ وَيَجُوزُ أَنْ يُوسَمَ الْمُتَصَدِّقُ بِسِيمَاءَ يُعْرَفُ بِهَا فَيَكُونُ بُرْهَانًا لَهُ عَلَى حَالِهِ وَلَا يُسْأَلُ عَنْ مَصْرِفِ مَالِهِ وَقَالَ غَيْرُ صَاحِبِ التَّحْرِيرِ مَعْنَاهُ الصَّدَقَةُ حُجَّةٌ عَلَى إِيمَانِ فَاعِلِهَا فَإِنَّ الْمُنَافِقَ يَمْتَنِعُ مِنْهَا لِكَوْنِهِ لَا يَعْتَقِدُهَا فَمَنْ تَصَدَّقَ اسْتُدِلَّ بِصَدَقَتِهِ عَلَى صِدْقِ إِيمَانِهِ وَاللَّهُ أَعْلَمُ
«شرح النووي على مسلم» (3/ 101)
“সালাত”হচ্ছে একটি উজ্জ্বল জ্যোতি“ এর অনেক অর্থ হতে পারে, একটি অর্থ হল, সালাত সকল প্রকার অশ্লীল কথাবার্তা ও কাজ থেকে মানুষকে বিরত রাখে। এজন্য সালাতকে নূর বলা হয়েছে।
“সদাকাহ” হচ্ছে দলীল” এরও অনেক অর্থ হতে পারে, একটি অর্থ হল, যারা সদকাহ করবে, তাদের শরীরে মধ্যে চিহ্ন থাকবে, যদ্দরুণ কিয়ামতের দিন তাদেরকে তাদের মাল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে না।
(২)
হযরত সাদ ইবনে ওবায়দা (রা.) থেকে বর্ণিত,
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلَاءِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ إِدْرِيسَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي زِيَادٍ، عَنْ عِيسَى بْنِ فَائِدٍ، عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَادَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم " مَا مِنِ امْرِئٍ يَقْرَأُ الْقُرْآنَ يَنْسَاهُ إِلَا لَقِيَ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَجْذَمَ "
রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি কোরআন পড়ে ভুলে যায়, সে কেয়ামতের দিন আল্লাহর দরবারে এমন অবস্থায় আসবে যে, কুষ্ঠ রোগের কারণে তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ যেন খসে খসে পড়ছে।’ (আবু দাউদ : ১৪৭৪)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
কুরআনে কারীম কিছু মানুষের পক্ষ্যে থাকবে, এবং কিছু মানুষের বিপক্ষ্যে থাকবে। যারা কুরআন পড়বে এবং কুরআনের বিধি-বিধানের উপর আ’মল করবে, কুরআন তাদের জন্য সুপারিশ করবে। আর যারা কুরআন পড়বে না বা পড়ে ভূলে যাবে, তাদের বিপক্ষ্যে কুরআন দাড়াবে।