আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
268 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (8 points)
বিবাহের কথা যদি পাকাপাকি হয়ে যায়, দিনক্ষণ ঠিক হয়ে যায় এবং পাত্র পাত্রী যদি একে অপরকে বিবাহ করার ব্যাপারে মনস্থির করে ফেলে, তাহলে আল্লাহর ইচ্ছায় তাদের বিয়ে হওয়ার আগ পর্যন্ত তারা কি অনলাইনে ম্যাসেজ আদান প্রদান করতে পারবে?
অনেক সময় এমনটা দেখা যায় যে বিয়ের দ্বিপাক্ষিক প্রস্তুতি গ্রহণের সুবিধার্থে ও অনাকাঙ্ক্ষিত গোলযোগ এড়াতে কিছু তথ্য অগ্রিম জেনে নিলে সুবিধা হয়। এ ধরনের পরিস্থিতিতে ছেলে ও মেয়ে যদি নিজেদের মধ্যে এস এম এস/ টেক্সটিং এর মাধ্যমে তথ্য আদান প্রদান করে তাহলে কি তারা গুনাহগার হবে?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 


আমরা পূর্বের কিছু ফতোয়াতে উল্লেখ করেছি যে, বিবাহ বহির্ভূত নারী-পুরুষের দেখা সাক্ষাৎ কথা বার্তা ও আমোদ পুর্তি সবকিছুই হারাম ও নাজায়েয। বিয়ের পূর্বে পুরুষ প্রস্তাবকৃত মহিলার সাথে প্রয়োজনীয় কিছূ কথাবার্তা বলতে পারবে। 
যদি কেউ কোনো মহিলাকে বিয়ে করার পূর্ণ ইচ্ছা করে নেয়,তাহলে ঐ মহিলাকে দেখতে পারবে এবং কথাও বলতে পারবে।

হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাযি থেকে বর্ণিত,

(إِذَا خَطَبَ أَحَدُكُمْ الْمَرْأَةَ ، فَإِنْ اسْتَطَاعَ أَنْ يَنْظُرَ إِلَى مَا يَدْعُوهُ إِلَى نِكَاحِهَا ، فَلْيَفْعَلْ)

যদি কেউ কোনো মহিলাকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে চায়,তাহলে সে যেন যযথাসম্ভব ঐ মহিলাকে দেখে নেয়।(সুনানু আবি দাউদ-২০৮২)

হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,
عن أبي هريرة، قال: كنت عند النبي صلى الله عليه وسلم، فأتاه رجل فأخبره أنه تزوج امرأة من الأنصار، فقال له رسول الله صلى الله عليه وسلم: «أنظرت إليها؟»، قال: لا، قال: «فاذهب فانظر إليها، فإن في أعين الأنصارشيئا»

তিনি বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর পাশে বসা ছিলাম।একব্যক্তি এসে বলল, আমি আনসারি এক মহিলাকে বিয়ে করতে চাই।রাসূলুল্লাহ বললেন,তুমি কি পাত্রী দেখেছো?তিনি বললেন,না।রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন,যাও গিয়ে পাত্রী দেখে আসো।কেননা আনসারীদের চোখে নীল বা এ জাতীয় কিছু থাকে।(সহীহ মুসলিম-১৪২৪)

" يَجُوزُ تَكْرَارُ النَّظَرِ إِنِ احْتَاجَ إِلَيْهِ لِيَتَبَيَّنَ هيئتها ، فَلاَ يَنْدَمُ بَعْدَ النِّكَاحِ ، إِذْ لاَ يَحْصُل الْغَرَضُ غَالِبًا بِأَوَّل نَظْرَةٍ ".

বারংবার দৃষ্টি দেয়া জায়েয।যাতেকরে পাত্রীর পূর্ণ অবয়ব পরিস্কার ভাবে ফুটে উঠে।এবং যাতেকরে বিয়ে পরবর্তী লজ্জিত হতে না হয়।কেননা একবারের দৃষ্টি অধিকাংশ সময়ে যথেষ্ট নাও হতে পারে।(আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যাহ-২২/১৭)


পাত্র-পাত্রীর পরস্পর দেখা সাক্ষাৎ ও আলাপ-চারিতার কয়েকটি মূলনীতি-
(১)খালওয়াত হতে পারবে না।
(২)মুবাহ বিষয় ব্যতীত অন্য কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাবে না।
(৩)ফিতনা থেকে নিরাপদ থাকতে হবে।যদি কামভাব জাগ্রত হওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে যায়,অথবা কোনো একজন উপভোগ করতে শুরু করে নেয়,তাহলে তখন সেটা হারাম হয়ে যাবে।
(৪)মহিলা নরম ভাষায় কথা বলতে পারবে না।
(৫)মহিলা পূর্ণ হেজাব তথা কবজা পর্যন্ত হাত,টাখনু পর্যন্ত পা,এবং মুখ ব্যতীত সমস্ত শরীর ঢেকে রাখবে।
(৬)প্রয়োজন অতিরিক্ত কথাবর্থা বলা যাবে না।
যখন এই সব শর্ত পাওয়া যাবে, তখনই মূলত পাত্র-পাত্রী পরস্পর আলোচনা ও দেখা সাক্ষাৎ করতে পারবে।
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- 2898

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যদিও কোনো মেয়েক বিয়ে করার পূর্ণ ইচ্ছা করে নেয়া হোক না কেন ।  ওই মেয়ের সাথে বিয়ের আগ পর্যন্ত একসাথে কথা বলা , ঘুরতে যাওয়া কোনো কিছুই জায়েয হবে না।শুধুমাত্র উপরোক্ত শর্তাদির আলোকে বিয়ের প্রস্তাবকৃত নারীর সাথে এক আধ বার সাময়িক দেখা করতে পারবে।
এক আধবার কথা বলতে পারবে।

এই ভাবে প্রশ্নে উল্লেখিত পদ্ধতিতে মেসেজ আদান প্রদান জায়েজ হবেনা।
,
★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তথ্য আদান প্রদান বিবাহ পূর্ব সাক্ষাৎ এর সময়েই সেরে ফেলতে হবে। 
যদি সেই সময় সেই তথ্য গুলো গ্রহন না করা হয়,সেক্ষেত্রে বৈধ বিষয় বলা,ফিতনার আশংকা না থাকা,নরম ভাষায় কথা না বলা,প্রয়োজনে অতিরিক্ত কথা না বলা ইত্যাদি শর্তে অল্প সময়ে ফোনে  কথা বলে সেড়ে নিবে।
এই ভাবে প্রশ্নে উল্লেখিত বিবাহের আগ পর্যন্ত  অনলাইনে মেসেজ আদান প্রদান জায়েজ হবেনা।    


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...