আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
333 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (7 points)
আসসালামু আলাইকুম, আমি কিছুদিন যাবৎ খুবই পেরেশানির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি।যতরকমের বিভৎস আর বাজে ধরনের ওয়াস ওয়াসা আমাকে পেয়ে বসেছে।তাও আবার হুরমত সংক্রান্ত। হুরমতের মাসয়ালাগুলো দেখার পর থেকেই এমন হচ্ছে।কি করব বুঝতেছি না।আজকেও খুব বাজে ধরনের ঘটনা ঘটেছে আমার সাথে।সেটা হলো,  আমার আম্মু কোনো একটা কারণে আমার কপালে বেশ কিছুক্ষণ হাত দিয়েছিলেন।শুরুতে কিছু না হলেও একটু পরেই ওয়াস ওয়াসায় পেয়ে বসে আমাকে।জঘন্যরকমের সব চিন্তাভাবনা মনের মধ্যে আসে।তখন আমার এরকমটা মনে হয়েছিল যে, এই স্পর্শ তো কামভাব নিয়েই হচ্ছে।আমার তো সহবাসের ইচ্ছা জাগ্রত হয়েছেই(নাউজুবিল্লাহ) ,হ্যা এটা ত আমি করতেই চাই  (নাউজুবিল্লাহ)। আমি এমনটা মনে করতে চাইনি।কিন্তু ওয়াস ওয়াসার কারণে এরকম  হয়েছে।এমনকি স্পর্শ থাকাকালীন সময়ে  কামভাব/ সহবাসের  নিয়তও চলে এসেছিল। একই সাথে এই ধরনের চিন্তাভাবনার কারণে প্রচন্ড মাত্রার ভয়ও চলে এসেছিল।খুবই লজ্জাজনক যে আপনার মতো একজন আলেমের কাছে আমার এসমস্ত জঘন্য চিন্তাভাবনার কথা  বলতে হচ্ছে।কিন্তু আমি নিরুপায়।  আশা করি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

কিন্তু আম্মু যতক্ষণ ধরেই কপালে হাত দিয়েছিলেন, এসমস্ত জঘন্য চিন্তা আসলেও আমি স্পর্শের কারণে  নিজের মধ্যে কোনো ধরনের উত্তেজনাই অনুভব করি নাই।আল্লাহর শপথ। এক মুহুর্তের জন্যও সামান্য পরিমাণ উত্তেজনাও অনুভূত হয় নাই।এমনকি লিঙ্গও নড়ে নি।কিন্তু যেহেতু এসমস্ত আজেবাজে চিন্তা আসছিল তাই আমি দ্রুত সরে যেতে চেষ্টা করি। আর তখনই মানে সরে যাওয়ার আগেই কপালে হাত থাকা অবস্থাতেই, তলপেটের মধ্যে কেমন যেনো একটা অনুভূতি হয়।আমি নিশ্চিত এটা স্পর্শের কারণে উত্তেজনাবশত হয় নি বরং আমার ভয় পাওয়ার ফলে হয়েছে।একই সাথে তখন লিঙ্গের মধ্যেও কেমন যেনো আলোড়ন অনুভূত হয়।দাড়িয়ে যাওয়ার মত না, শুধুমাত্র অন্য ধরনের একটা আলোড়ন।এমনটা কি স্পর্শের কারণে উত্তেজনাবশত হয়েছিল নাকি ভয় পাওয়ার কারণে হয়েছিল সেটা জানি না।তবে আমি এটুকু সুনিশ্চিত যে স্পর্শের কারণে আমার মনের মধ্যে কোনো ধরনের উত্তেজনাই অনুভূত হয় নাই।

এই ঘটনার পর থেকেই প্রচন্ড খারাপ লাগছে।কি করব বুঝতেছি না।দয়া করে বলবেন কি এর কারণে হুরমত সাব্যস্ত হয়ে গিয়েছে কিনা??যদি হয়ে থাকে তাহলে তো সব শেষ। আর যদি না হয়ে থাকে তবে ভবিষ্যতে এ ধরনের বাজে ওয়াস ওয়াসা থেকে কিভাবে বিরত থাকতে পারি দয়ে করে সেটার ব্যাপারে কিছু বলবেন।জাজাকাল্লাহু খাইরন।

1 Answer

0 votes
by (559,530 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


হাদীস শরীফে এসেছেঃ 
ই'লাউস সুনান ১১/১৩১

أخبرنا أبوحنیفة، عن حماد، عن إبراهیم، قال: إذا قبل الرجل أم أمرأته أو لمسها من شهوةٍ حرمت علیه امرأته، أخرجه محمد في الحجج ورجاله ثقات (إعلاء السنن: ۱۱/۱۳۱)

যার সারমর্ম হলো কেহ যদি তার শাশুড়িকে চুম্বন করে,অথবা উত্তেজনার সাথে স্পর্শ করে,তাহলে স্ত্রী তার উপর চিরজীবনের জন্য হারাম হয়ে যাবে।      

হুরমতে মুসাহারাত সাব্যস্ত হবার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে।
তার মধ্যে অন্যতম একটি হলোঃ  

স্পর্শ করলে পুরুষ মহিলা যেকোন একজনের উত্তেজনা অনুভুত হওয়া।

পুরুষের উত্তেজনা অনুভূত হওয়ার লক্ষণ হল গোপনাঙ্গ দাঁড়িয়ে যাওয়া, আর পূর্ব থেকে দাঁড়িয়ে থাকলে স্পর্শ করার পর উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়া।

وفى رد المحتار- قوله (بشهوة) اي ولو من احدهما،
وفى الدر المختار- وحدها فيهما تحرك آلته أو زيادته به يفتى
وفي امرأة ونحو شيخ كبير تحرك قلبه أو زيادته (الفتاوى الشامية، كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-4/107-109)  
সারমর্মঃ
উত্তেজিত হওয়ার সীমা হলো লিঙ্গ দাঁড়িয়ে যাওয়া, আর পূর্ব থেকে দাঁড়িয়ে থাকলে স্পর্শ করার পর উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়া।
মহিলাদের ক্ষেত্রে কলব তথা অন্তর কেঁপে উঠা, আগে থেকেই কেঁপে উঠে থাকলে স্পর্শ করার পর কাঁপা বেড়ে যাওয়া। 

বিস্তারিত জানুনঃ  
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেহেতু লিঙ্গের মধ্যেও কেমন যেনো আলোড়ন অনুভূত হলেও স্পর্শের সময় আপনার লিঙ্গ দাড়িয়ে যায়নি,তাই হুরমতে মুসাহারাত প্রমাণিত হয়নি।
,
আপনি নিশ্চিত থাকুন,কোনো সমস্যা নেই।
,
আপনি আপনার মাথা থেকে এসব ভয় দূর করে স্বাভাবিক ভাবে থাকার চেষ্টা করুন,এসব বিষয় ভাববেননা,মাথায় আসতেই দিবেননা।
তাহলেই ইনশাআল্লাহ আর কোনো সমস্যা হবেনা।  
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
মাসয়ালা জানতে লজ্জিত হওয়ার কিছু নেই।
এতে সংকোচ বোধ করা উচিত নয়।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَدۡخُلُوۡا بُیُوۡتَ النَّبِیِّ اِلَّاۤ اَنۡ یُّؤۡذَنَ لَکُمۡ اِلٰی طَعَامٍ غَیۡرَ نٰظِرِیۡنَ اِنٰىہُ ۙ وَ لٰکِنۡ اِذَا دُعِیۡتُمۡ فَادۡخُلُوۡا فَاِذَا طَعِمۡتُمۡ فَانۡتَشِرُوۡا وَ لَا مُسۡتَاۡنِسِیۡنَ لِحَدِیۡثٍ ؕ اِنَّ ذٰلِکُمۡ کَانَ یُؤۡذِی النَّبِیَّ فَیَسۡتَحۡیٖ مِنۡکُمۡ ۫ وَ اللّٰہُ لَا یَسۡتَحۡیٖ مِنَ الۡحَقِّ ؕ

হে ঈমানদারগণ! তোমাদেরকে অনুমতি দেয়া না হলে তোমরা খাবার-দাবার তৈরীর জন্য অপেক্ষা না করে খাওয়ার জন্য নবীর ঘরে প্রবেশ করো না। তবে তোমাদেরকে ডাকা হলে তোমরা প্ৰবেশ করো তারপর খাওয়া শেষে তোমরা চলে যেও; তোমরা কথাবার্তায় মশগুল হয়ে পড়ো না। নিশ্চয় তোমাদের এ আচরণ নবীকে কষ্ট দেয়, কারণ তিনি তোমাদের ব্যাপারে (উঠিয়ে দিতে) সংকোচ বোধ করেন। কিন্তু আল্লাহ সত্য বলতে সংকোচ বোধ করেন না।
(সুরা আহযাব ৫৩)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...