বিসমিল্লাহির রাহমানির
রাহিম।
জবাবঃ
গোঁফ কাটার পদ্ধতি নিয়ে হানাফি ফুকাহায়ে কেরামদের কিতাবে বিরোধপূর্ণ বক্তব্য অনুধাবন করা যাচ্ছে । মৌলিকভাবে বিষয়টা
বুঝতে হলে আমাদেরকে তা জানতে হবে,
যেজন্য তা
নিম্নে উল্লেখ করা হল।
★আল্লামা
আলাউদ্দীন হাসক্বফী রাহ বলেনঃ-
حَلْقُ الشَّارِبِ بِدْعَةٌ وَقِيلَ سُنَّةٌ وَلَا بَأْسَ بِنَتْفِ
الشَّيْبِ،
ভাবার্থঃ- গোঁফ
মুন্ডানো বেদ'আত। তবে কেউ কেউ সুন্নাত ও বলে থাকেন। সাদা
গোঁফ উফড়ানোতে কোনো সমস্যা নেই। -আদ্দুরুল
মুখতার-৬/৪০৭; (দারুল ফিকর
বাইরুত, মাকতাবা
থেকে ৬ খন্ডে প্রকাশিত, ১৪১২হিঃ-১৯৯২ইং।)
মুহাম্মদ
আমীন ইবনে উমর ইবনে আব্দুল আজীজ আবেদীন(ইবনে আবেদীন) শামী রাহ লিখেনঃ
وَاخْتُلِفَ فِي
الْمَسْنُونِ فِي الشَّارِبِ هَلْ هُوَ الْقَصُّ أَوْ الْحَلْقُ؟ وَالْمَذْهَبُ
عِنْدَ بَعْضِ الْمُتَأَخِّرِينَ مِنْ مَشَايِخِنَا أَنَّهُ الْقَصُّ. قَالَ فِي
الْبَدَائِعِ: وَهُوَ الصَّحِيحُ. وَقَالَ الطَّحَاوِيُّ: الْقَصُّ حَسَنٌ
وَالْحَلْقُ أَحْسَنُ، وَهُوَ قَوْلُ عُلَمَائِنَا الثَّلَاثَةِ نَهْرٌ.
ভাবার্থঃ- গোঁফ
কাটার মাসনুন পদ্ধতি নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে।কেচি দিয়ে কাটা মাসনুন? নাকি মুন্ডিয়ে ফেলা মাসনুন?এ সম্পর্কে মুতা'আখ্খীরিন(পরবর্তী) উলামায়ে কেরামদের
সিদ্ধান্ত হল, কেচি দিয়ে
কাটা মাসনুন। বাদায়ে সানায়ে নামক কিতাবে এঅভিমতকেই বিশুদ্ধ বলা হয়েছে।
ইমাম
ত্বাহাবী রাহ, বলেনঃ
কেছি দিয়ে
কাটা উত্তম। এবং মুন্ডিয়ে ফেলা অতি উত্তম। তিনি বলেনঃ এটাই আমাদের সম্মানিত
ইমামগণের মত। (নাহরুল ফায়েক)
অতঃপর ইবনে
আবেদীন শামী রাহ,আরোও লিখেনঃ
قَالَ فِي الْفَتْحِ:
وَتَفْسِيرُ الْقَصِّ أَنْ يَنْقُصَ حَتَّى يَنْتَقِصَ عَنْ الْإِطَارِ، وَهُوَ
بِكَسْرِ الْهَمْزَةِ: مُلْتَقَى الْجِلْدَةِ وَاللَّحْمِ مِنْ الشَّفَةِ، وَكَلَامُ
صَاحِبِ الْهِدَايَةِ عَلَى أَنْ يُحَاذِيَهُ. اهـ. وَأَمَّا طَرَفَا الشَّارِبِ
وَهُمَا السِّبَالَانِ، فَقِيلَ هُمَا مِنْهُ، وَقِيلَ مِنْ اللِّحْيَةِ،
وَعَلَيْهِ فَقِيلَ لَا بَأْسَ بِتَرْكِهِمَا، وَقِيلَ يُكْرَهُ لِمَا فِيهِ مِنْ
التَّشَبُّهِ بِالْأَعَاجِمِ وَأَهْلِ الْكِتَابِ، وَهَذَا أَوْلَى بِالصَّوَابِ،
وَتَمَامُهُ فِي حَاشِيَةِ نُوحٍ. وَرَجَّحَ فِي الْبَحْرِ مَا قَالَهُ
الطَّحَاوِيُّ،(ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ - ﻛِﺘَﺎﺏُ ﺍﻟْﺤَﺞِّ ﺑَﺎﺏُ ﺍﻟْﺠِﻨَﺎﻳَﺎﺕِ ﺍﻟْﺠِﻨَﺎﻳَﺔُ)
ভাবার্থঃ- কেচি
দিয়ে কাটার পদ্ধতি হচ্ছে, গোফকে ছেঁচে
ছোট করা হবে,যতক্ষণ না ইত্বার পরিমাণ হবে।
ইত্বার
পরিমাণ হওয়া মানে ঠোটের গোস্ত ও তার উপরিভাগের চামড়ার সমপরিমাণ হওয়া। হেদায়া
গ্রন্থকারের বক্তব্যর সারমর্মই হচ্ছে তা যা উপরোল্লিখিত অর্থাৎ ঠোটের উপরিভাগের
চামড়া সমান সমান হওয়া। আর গোফের উভয় সাইট,যাকে
পরিভাষায় সিবালান বলা হয়,কেউ কেউ বলেন তা গোফের অন্তর্ভুক্ত আর কেউ
বলেনঃ তা দাড়ির অন্তর্ভুক্ত। দাড়ির অন্তর্ভুক্ত হলে তা রেখে দিতে কোনো কোনো সমস্যা
নেই। তবে কেউ বলেনঃ তা রাখা দেওয়া মাকরুহ। কেননা তাতে অনারবী ও আহলে কিতাবদের
অনুসরণ হবে। আর এটাই বিশুদ্ধ কথা। এ সম্পর্কে পরিপূর্ণ আলোচনা হাশিয়ায়ে নুহে
বর্ণিত রয়েছে। রাহরুর রায়েক কিতাবে ইমাম ত্বাহাবীর উপরোক্ত বক্তব্যকেই অগ্রাধিকার
দেওয়া হয়েছে। (রদ্দুল মুহতার-২/৫৫০;-দারুল ফিকর বাইরুত, মাকতাবা থেকে ৬ খন্ডে প্রকাশিত,১৪১২হিঃ-১৯৯২ইং)
"গোঁফ
মুন্ডানো জায়েয আছে,তবে কেচি দিয়ে কাটা উত্তম" (কিফায়াতুল মুফতী-৯/১৭৮-দারুল এশায়াত উর্দু
বাজার করাচি,থেকে ২০০১ ইং তে ৮খন্ডে প্রকাশিত)
আরো বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/1857/?show=1857#q1857
★ সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!
গোফের উভয় সাইট,যাকে পরিভাষায় সিবালান বলা হয়,কেউ কেউ বলেন তা গোফের অন্তর্ভুক্ত আর কেউ
বলেনঃ তা দাড়ির অন্তর্ভুক্ত। দাড়ির অন্তর্ভুক্ত হলে তা রেখে দিতে কোনো কোনো সমস্যা
নেই। তবে কেউ বলেনঃ তা রেখে দেওয়া মাকরুহ। কেননা তাতে অনারবী ও আহলে কিতাবদের
অনুসরণ হবে। আর এটাই বিশুদ্ধ কথা।