আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
855 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (18 points)
closed by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু।

১. একটা হাদিসের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি, একজন সাহাবীকে জান্নাতি ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। কারণ তাঁর বিশেষ গুণ ছিল, তিনি রাতে ঘুমানোর আগে সবাইকে ক্ষমা করে দিয়ে ঘুমাতেন, কারো প্রতি রাগ, বিদ্বেষ, হিংসা মনে পুষে রাখতেন না।

  ★আমার প্রশ্ন হচ্ছে আমরা যদি এই গুণটি অর্জন করার জন্য আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে এবং আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করে দিবেন এই আশায় সবাইকে ক্ষমা করে দিতে চাই, কারো প্রতি রাগ, ক্ষোভ, হিংসা, বিদ্বেষ না রাখতে চাই, তাহলে এক্ষেত্রে কি শুধু সকল মুসলিম ভাইবোনদেরকেই ক্ষমা করলে হবে ? নাকি অমুসলিমরাও এর মধ্যে পড়বে?
★ যদি কেউ আমাকে ব্যক্তিগত ভাবে কষ্ট দেয়, তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়ে, কিন্তু যারা আল্লাহ ও রাসূলের বিরুদ্ধে কথা বলে, ইসলাম বিদ্বেষী (মুসলিম, অমুসলিম, ফাসেক) তাদের প্রতি মনে ক্ষোভ থাকে তাহলে কি সবাইকে ক্ষমা করে দেয়ার ব্যাপারটা আদায় হবে না? আমি যদি আল্লাহর কাছে ক্ষমাশীল বান্দা হতে চাই, তাহলে তাদের প্রতিও কি আমার ক্ষমাশীল হতে হবে? নাকি শুধু ব্যক্তিগত কষ্টদানকারীর প্রতি ক্ষমাশীল হলেই চলবে?

২. রুকাইয়া (রা) এর ইন্তেকালের  সময় ফাতিমা (রা) কান্না করলে তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন "অন্তর আর চোখ দিয়ে যে শোক প্রকাশ করা হয়, তা আল্লাহর পক্ষ থেকে এবং হাত ও জিহ্বা দিয়ে যে শোক প্রকাশ করা হয়, তা শয়তান থেকে।" এই ঘটনা কি সঠিক?
★ এখানে হাত ও জিহ্বার শোক দ্বারা কি বোঝানো হয়েছে?

৩.     গাছের পাতা, ফুল বা ডাল ছেঁড়ার ব্যাপারে ইসলামের বিধান কি? সেটা নিজের গাছ হোক, অন্যের কিংবা রাস্তার। অকারণে ছিঁড়লে কিংবা বইয়ের ছবি তোলার জন্য ছিড়লে গুনাহ হবে কি? কখন ছেড়া বৈধ হবে?

৪. ছোট নাবালেগ বাচ্চাদের দুষ্টামি, উল্টাপাল্টা কাজ নিয়ে তাদের সামনে বা অনুপস্থিতিতে কারো সাথে হাসাহাসি করলে গীবত বা উপহাসের পর্যায়ে পড়বে কি? এতে কি গুনাহ হবে?

জাযাকুমুল্লাহ খইর।
closed

1 Answer

0 votes
by (589,140 points)
selected by
 
Best answer
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
আপনি যে হাদীসের কথা উল্লেখ করেছেন, সেই হাদীসকে ইমাম আহমদ রাহ মুসনাদে আহমদে ১২৭২০ নং হাদীস হিসেবে বর্ণনা করেন। 
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ عَنِ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ رضي الله عنه قَالَ : كُنَّا جُلُوسًا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ : ( يَطْلُعُ عَلَيْكُمْ الْآنَ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ ) فَطَلَعَ رَجُلٌ مِنْ الْأَنْصَارِ تَنْطِفُ لِحْيَتُهُ مِنْ وُضُوئِهِ قَدْ تَعَلَّقَ نَعْلَيْهِ فِي يَدِهِ الشِّمَالِ ، فَلَمَّا كَانَ الْغَدُ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِثْلَ ذَلِكَ ، فَطَلَعَ ذَلِكَ الرَّجُلُ مِثْلَ الْمَرَّةِ الْأُولَى ، فَلَمَّا كَانَ الْيَوْمُ الثَّالِثُ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِثْلَ مَقَالَتِهِ أَيْضًا فَطَلَعَ ذَلِكَ الرَّجُلُ عَلَى مِثْلِ حَالِهِ الْأُولَى ، فَلَمَّا قَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَبِعَهُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ فَقَالَ : إِنِّي لَاحَيْتُ أَبِي فَأَقْسَمْتُ أَنْ لَا أَدْخُلَ عَلَيْهِ ثَلَاثًا ، فَإِنْ رَأَيْتَ أَنْ تُؤْوِيَنِي إِلَيْكَ حَتَّى تَمْضِيَ فَعَلْتَ . قَالَ نَعَمْ قَالَ أَنَسٌ : وَكَانَ عَبْدُ اللَّهِ يُحَدِّثُ أَنَّهُ بَاتَ مَعَهُ تِلْكَ اللَّيَالِي الثَّلَاثَ فَلَمْ يَرَهُ يَقُومُ مِنْ اللَّيْلِ شَيْئًا ، غَيْرَ أَنَّهُ إِذَا تَعَارَّ وَتَقَلَّبَ عَلَى فِرَاشِهِ ذَكَرَ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ وَكَبَّرَ حَتَّى يَقُومَ لِصَلَاةِ الْفَجْرِ . قَالَ عَبْدُ اللَّهِ : غَيْرَ أَنِّي لَمْ أَسْمَعْهُ يَقُولُ إِلَّا خَيْرًا . فَلَمَّا مَضَتْ الثَّلَاثُ لَيَالٍ وَكِدْتُ أَنْ أَحْتَقِرَ عَمَلَهُ قُلْتُ : يَا عَبْدَ اللَّهِ إِنِّي لَمْ يَكُنْ بَيْنِي وَبَيْنَ أَبِي غَضَبٌ وَلَا هَجْرٌ ثَمَّ ، وَلَكِنْ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ لَكَ ثَلَاثَ مِرَارٍ : ( يَطْلُعُ عَلَيْكُمْ الْآنَ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ ) فَطَلَعْتَ أَنْتَ الثَّلَاثَ مِرَارٍ ، فَأَرَدْتُ أَنْ آوِيَ إِلَيْكَ لِأَنْظُرَ مَا عَمَلُكَ فَأَقْتَدِيَ بِهِ ، فَلَمْ أَرَكَ تَعْمَلُ كَثِيرَ عَمَلٍ ، فَمَا الَّذِي بَلَغَ بِكَ مَا قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ؟ فَقَالَ مَا هُوَ إِلَّا مَا رَأَيْتَ ، قَالَ : فَلَمَّا وَلَّيْتُ دَعَانِي فَقَالَ : مَا هُوَ إِلَّا مَا رَأَيْتَ ؛ غَيْرَ أَنِّي لَا أَجِدُ فِي نَفْسِي لِأَحَدٍ مِنْ الْمُسْلِمِينَ غِشًّا وَلَا أَحْسُدُ أَحَدًا عَلَى خَيْرٍ أَعْطَاهُ اللَّهُ إِيَّاهُ . فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ : هَذِهِ الَّتِي بَلَغَتْ بِكَ ، وَهِيَ الَّتِي لَا نُطِيقُ .
وهكذا رواه عبد الرزاق في "المصنف" (20559) وابن المبارك في "الزهد" (694) والنسائي في "الكبرى" (10699) وعبد بن حميد في "مسنده" (1157) والضياء في "المختارة" (2619) والبيهقي في "الشعب" (6605) وابن السني في "عمل اليوم والليلة" (754) والسمعاني في "أدب الإملاء" (ص 122) وابن عبد البر في "التمهيد" (6/122) كلهم من طريق معمر عن الزهري عن أنس به .

উক্ত হাদীসে যে ক্ষমার কথা আলোচনা করা হয়েছে, সেখানে নিজের ব্যক্তিগত বিষয়ে কারো সাথে হিংসা বিদ্ধেষ না রাখার কথা বলা হয়েছে। চায় মুসলামানের সাথে হোক বা কাফিরের সাথে হোক। কেননা ব্যক্তিগত হিংসা বিদ্ধেষ মুসলিম অমুসলিম কারো সাথে জায়েয হবে না। বরং সর্বদা নাজায়েয হিসেবে পরিগণিত হবে। কারো সাথে মহব্বত বা কারো সাথে শত্রুতা শুধুমাত্র আল্লাহর জন্যই হওয়া চাই। 

ব্যক্তিগত হিংসা বিদ্ধেষ ব্যতীত যদি কারো সাথে ইসলামের স্বার্থে হিংসা বিদ্ধেষ রাখা হয়, তাহলে তা উক্ত হাদীসের উদ্দেশ্যের আওতাধীন হবে না। 

(২) জ্বী, ঠিক। এখানে হাতও জিহ্বা দ্বারা কান্না না করার অর্থ হচ্ছে বিলাপ করা যাকে আরবীতে নওহা বলা হয়, জিহ্বা দ্বারা এবং হাত দ্বারা বিলাপ করে কান্না করা নাজায়েয । 

(৩) বিনা প্রয়োজনে গাছের পাতা ছিড়া যাবে না। কেননা গাছের পাতা আল্লাহর যিকির করে থাকে। হ্যা, প্রয়োজন হলে গাছের পাতা ছিড়া যাবে। 

(৪)   ছোট নাবালেগ বাচ্চাদের দুষ্টামি, উল্টাপাল্টা কাজ নিয়ে তাদের সামনে বা অনুপস্থিতিতে কারো সাথে হাসাহাসি করলে গীবত বা উপহাস হবে না। কেননা ঐ বাচ্ছাকে লোক সমাজে খারাপ বানানোর উদ্দেশ্য থাকেনা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (589,140 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...