কুফরী সম্পর্কে প্রশ্ন

Question

আসসালামুলাইকুম।

ঘটনা ১- চার/পাঁচ বছর আগে আমার বড় ভাগনীকে(বয়স ৯) কেউ যাদু করে বা জিন আছর করে।আমরা প্রথমে না বুঝে ডাক্তার দেখাই এবং অনেক হুজুর থেকে ওষুধ করালেও ভালো হয়নি।পরে,আমরা খাগড়াছড়ি গিয়ে একটা হুজুর কে দেখাই। তিনি বলেন  শয়তান গুলা রক্তের সাথে মিশে গেছে এবং তিনি পানীয় কিছু ঔষুধ ও তাবিজ দেন।এবং কিছু দিন পরে আল্লাহর রহমতে আমার ভাগনী ভালো হয়।
উল্লেখ, আমি তখন সেভাবে জানতাম না তিনি কুফরী করেন কি করেন না।

ঘটনা ২-গত এক বছর আমার বোনের বাসায় কিছু জিন সমস্যা করলেও গত দুই মাস সেটা বেড়ে যায়।আমার বোন ও ছোট ভাগনী(বয়স ৬)ঘুমালে ঘুমানোর মধ্যে সমস্যা করে আর শয়তান গুলা বাসায় প্রস্রাব করে দেয়।তিনি কিছু হুজুর দেখালেও সমস্যার সমাধান হয়নি। যার ফলে আমরা গত কিছু দিন আগে ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি যাই ওই হুজুরের কাছে।যেহেতু গতবার আমরা একটা উপকার পেয়েছি।উনি আমাদের কে জানান আমার বোন ও ছোট ভাগনীর কে কেউ যাদু করছে।পরে আমি উনাকে জিজ্ঞেস করি আপনি কি কোরআন-হাদীস দ্বারা চিকিৎসা করেন নাকি?তিনি বললেন কোরআন-হাদিস দিয়ে সব চিকিৎসা হয়না।তিনি যেটা যেভাবে দরকার সেটা সেভাবে চিকিৎসা করান।কুফরী বা যাদুর চিকিৎসা কুফরী দিয়েই করতে হয়।তখন আমার মনের মধ্যে খটকা লাগলো।আমি উনাকে জিজ্ঞেস করলাম এটাতে আমাদের গুনাহ হবে না?তিনি বললেন, না। কুফরী দিয়ে ক্ষতি করলে গুনাহ হবে।চিকিৎসা করলে গুনাহ হবে না।তারপরও আমি আমার পরিবারকে এটা থেকে বিরত থাকতে বলছি।কিন্তু, তারা গতবার উপকার পেয়েছে তাই তারা চিকিৎসা করাবে বলতেছে।আর হুজুর কিভাবে চিকিৎসা করায় সেটা আমাদের ভাবার দরকার নাই।

প্রশ্ন১: কুফরী দিয়ে কুফরীর চিকিৎসা কি করানো যায়?আর করানো গেলে সেটা গুনাহ হবে না? উনি যে বললেন, "কোরআন/ হাদীস থেকে কুফরী বা যাদু-টোনা জাতীয় সব চিকিৎসা করানো যায় না"এটি কতটুকু সত্য?কোরআন/হাদীসে কি কুফরী বা যাদুর সবধরনের চিকিৎসা নেই? এটি বিশ্বাস করলে কি ঈমান থাকবে?

প্রশ্ন২: কুফরী করে কারো ক্ষতি করলে তখন গুনাহ হবে কিন্তু চিকিৎসা করালে গুনাহ হবে না।এটি কতটুকু সত্য?
প্রশ্ন৩: কেউ যদি কোরআন/হাদীস দিয়ে চিকিৎসা করে সমাধান না পায়।সেক্ষেএে কি সাময়িক কুফরী দিয়ে চিকিৎসা করাতে পারবে?

প্রশ্ন৪:কুফরী দিয়ে চিকিৎসা করলে কি শুধু হুজুরেরই গোনাহ হবে? নাকি যারা করিয়েছে তাদের ও গোনাহ হবে?

প্রশ্ন৫:আমি কুফরীকে অপছন্দ করি এবং এইসবে জড়াতে চাই না।এখন আমার পরিবারকে বিষয়টা কিভাবে বোঝাতে পারি?আমার পরিবারের পুরুষরা বিদেশ থাকায় ফ্যামেলীর কাজ গুলা আমাকে করতে হয়।এক্ষেএে খাগড়াছড়ি থেকে ঔষুধ বা হুজুরকে ঢাকায় নিয়ে আসতে হলে আমাকেই গিয়ে নিয়ে আসতে হবে।এক্ষেএে, উনাকে নিয়ে আসলে আমার গোনাহ হবে কিনা?আমি পরিবারকে বলছি আমি এসব পারবোনা করতে।কিন্তু ,তারা গভীরভাবে এত কিছু ঠিকমত জানে না ও বোঝে না।এক্ষেএে পরিবারের সাথে আমার আচরন কেমন হওয়া উচিত?আমি কি হুজুরকে খাগড়ছড়ি থেকে ঢাকায় বাসায় নিয়ে আসতে সাহায্য করবো?

Answer 1

ওয়া আলাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। 

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ-

(১)কুরআন মানব জাতীর জন্য শেফা স্বরূপ।সুতরাং কুরআন দ্বারা যে কোনো ধরণের রোগের চিকিৎসা করানো যাবে।কুরআন সকল প্রকার রোগের চিকিৎসা স্বরূপ। উনার বক্তব্য  "কোরআন/ হাদীস থেকে কুফরী বা যাদু-টোনা জাতীয় সব চিকিৎসা করানো যায় না" কথাটা সঠিক নয়। বরং জিবরাঈল আঃ রাসূল সাঃ কে জাদুর চিকিৎসা কুরআন দ্বারা শিখিয়েছেন। 

(২) কুফরী করে কারো ক্ষতি করলে তখন গুনাহ হবে কিন্তু চিকিৎসা করালে গুনাহ হবে না। এ বক্তব্যও সঠিক নয়। 

(৩)কেউ যদি কোরআন/হাদীস দিয়ে চিকিৎসা করে সমাধান না পেলে। সেক্ষেত্রে সাময়িকভাবে কুফরী দিয়েও চিকিৎসা করা যাবে না। 

(৪)  কুফরী দিয়ে চিকিৎসা করলে শুধু হুজুরেরই যে, গোনাহ হবে, তা নয়, বরং যারা করিয়েছে তাদের ও গোনাহ হবে।

(৫) উক্ত কাজে কোনো প্রকার সহায়তা করা আপনার জন্য জায়েয হবে না। 

Comments

সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।