বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
উত্তর
প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থমস্তিষ্ক সম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, যে ১০ যিলহজ্ব ফজর থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজন-অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব।
টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা, অলঙ্কার, বর্তমানে বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজন আসে না এমন জমি, প্রয়োজন অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সকল আসবাবপত্র কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।
আর নিসাব হল স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি, রূপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি। টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্ত্তর ক্ষেত্রে নিসাব হল সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া। আর সোনা বা রূপা কিংবা টাকা-পয়সা এগুলোর কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নেসাব পরিমাণ না থাকে, কিন্তু প্রয়োজন অতিরিক্ত একাধিক বস্ত্ত মিলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হয়ে যায় তাহলেও তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। যেমন কারো নিকট কিছু স্বর্ণ ও কিছু টাকা আছে, যা সর্বমোট সাড়ে বায়ান্ন তোলা চাঁদির মূল্য সমান হয় তাহলে তার উপরও কুরবানী ওয়াজিব।
সুতরাং ১০ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ এর মধ্যে যদি ৫২.৫ ভরি রুপার সমমূল্য (বর্তমানে প্রায় 45 হাজার টাকা) আপনার মালিকানায় থাকে তাহলেই আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে। যাকাতের মত এক্ষেত্রে নিসাব পরিমাণ সম্পদ এক বছর অতিক্রম হওয়া শর্ত নয় বরং উপরোক্ত তিন দিনের মধ্যে নিসাব পরিমাণ মালের মালিক হলেই কুরবানি ওয়াজিব হয়ে যাবে। (আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৫৫, ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪০৫)
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-
فصل لربك وانحر
'অতএব আপনি আপনার রবব-এর উদ্দেশ্যে নামায পড়ুন এবং কুরবানী আদায় করুন।' (সূরা কাউসার : ২)
সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি কুরবানী করে না তার ব্যাপারে হাদীস শরীফে কঠোর ধমকি এসেছে,
عن أبي هريرة قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : من وجد سعة لأن يضحي فلم يضح فلا يقربن مصلانا
হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যার কুরবানীর সামর্থ্য আছে তবুও সে কুরবানী করল না সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে।’ (মুসনাদে আহমদ ২/৩২১; মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস : ৭৬৩৯; আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব ২/১৫৫)
আল্লাহ তাআলা ভালো জানেন।
উত্তর প্রদান
মুফতি মুহাম্মাদ মাহবুবুল হাসান
ফাতওয়া বিভাগ, IOM