আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
389 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (4 points)

আসসালামু আলাইকুম 

আরবি ভাষায় الله শব্দটি ব্যবহৃত হয় ইসলামপূর্ব যুগ থেকে। যেমনঃ আরব ইহুদি,খ্রিস্টান ও পৌত্তালিকরা The Supreme Deity (মহান সত্ত্বা বা প্রধান দেবতা) কে বোঝাতো الله শব্দ দিয়ে।  আমার প্রশ্ন হলঃ' الله 'শব্দটা কি নামবাচক বিশেষ্য (Proper Noun) নাকি গুণবাচক  বিশেষ্য ? তাছাড়া আমি শুনেছি الله শব্দটা ভাঙলেال+اله পাওয়া যায়। এবিষয়ে বিস্তারিত জানানোর অনুরোধ রইল। 

জাযাকাল্লাহ খইর। 

1 Answer

0 votes
by (589,140 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
অনলাইন ভিত্তিক গ্রহণযোগ্য আরবী অভিধান almaany.com এ আল্লাহ শব্দের ব্যখ্যাকে এভাবে তুলে ধরা হয়েছে,
الله :علم على الذَّات العليَّة الواجبة الوجود، الجامعة لصفات الألوهيّة، ولذا لا يجوز أن يتسمَّى به أحد، وسائر الأسماء قد يتسمَّى بها غيرُه، وهو أوّل أسمائه سبحانه وأعظمها،
আল্লাহ শব্দ মহান স্বত্বা ওয়াজিবুল উজুদ এর নাম, যে নাম একজন খোদার বা মা’বুদের সমস্ত সিফাতকে শরীক রাখে। এজন্য এ নাম দ্বারা আল্লাহ ব্যতীত ভিন্ন কারো নাম রাখা জায়েয নয়। তবে এছাড়া আল্লাহর অন্যান্য নাম দ্বারা মাঝেমধ্যে অন্যর নাম রাখা যায়, আল্লাহ শব্দ-ই আল্লাহ তা’আলার সর্ব-প্রথম ও সর্ব উৎকৃষ্ট নাম। 

https://www.ifatwa.info/511 নং ফাতাওয়ায় আমরা ইতিপূর্বে বলেছি যে, 
ইসলামের পূর্বে আল্লাহ শব্দ দ্বারা মুশরিকরাও তাদের মা'বুদকে বুঝাত ও উদ্দেশ্য নিত যদিও তারা এর সাথে আরো অনেককে শরীক করতো,ইবনে হিশাম "আসসিরাতুন নাবাবীয়্যাহ ১/৯১ "নামক কিতাবে বলেনঃ
ﻳﻘﻮﻝ ﺍﺑﻦ ﻫﺸﺎﻡ ﻓﻲ ( ﺍﻟﺴﻴﺮﺓ ﺍﻟﻨﺒﻮﻳﺔ ﺝ 1 ﺹ 91 ) " ﻓﻜﺎﻧﺖ ﻛﻨﺎﻧﺔ ﻭﻗﺮﻳﺶ ﺇﺫﺍ ﺃﻫﻠﻮﺍ ﻗﺎﻟﻮﺍ : " ﻟَﺒَّﻴْﻚ ﺍﻟﻠﻬﻢ ﻟﺒﻴﻚ ﻟﺒﻴﻚ ﻻ ﺷﺮﻳﻚ ﻟﻚ "
অর্থ্যাৎ-কুরাইশরা যখন হজ্বের তালবিয়্যাহ পাঠ করতো তখন তারা বলতঃলাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক.....
দেখুন ইসলামের পূর্বে মুশরিকরা আল্লাহ শব্দ দ্বারা তারা তাদের মা'বুদকে উদ্দেশ্য নিত, পরবর্তিতে ইসলাম আল্লাহ শব্দকে বিসর্জন দেয়নি, তবে ইসলাম মুশরিকানা সমস্ত সিফাত বা বৈশিষ্ট্যাবলীকে বিসর্জন দিয়ে আল্লাহ শব্দের শিরিকমুক্ত ব্যখ্যা প্রদান করেছে।ঠিক তেমনিভাবে ইহুদী-খৃষ্টানরাও তাদের মা'বুদকে বুঝাতে আল্লাহ শব্দ ব্যবহার করত,তাদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেনঃ
ـ ﺇِﻥَّ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍ ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻫَﺎﺩُﻭﺍ ﻭَﺍﻟﻨَّﺼَﺎﺭَﻯ ﻭَﺍﻟﺼَّﺎﺑِﺌِﻴﻦَ ﻣَﻦْ ﺁﻣَﻦ
َ))) ﺑِﺎﻟﻠَّﻪ(ِ ((
ﻭَﺍﻟْﻴَﻮْﻡِ ﺍﻵﺧِﺮِ ﻭَﻋَﻤِﻞَ ﺻَﺎﻟِﺤًﺎ ﻓَﻠَﻬُﻢْ ﺃَﺟْﺮُﻫُﻢْ ﻋِﻨْﺪَ ﺭَﺑِّﻬِﻢْ ﻭَﻻ ﺧَﻮْﻑٌ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢْ ﻭَﻻ ﻫُﻢْ ﻳَﺤْﺰَﻧُﻮﻥَ "
নিঃসন্দেহে যারা মুসলমান হয়েছে এবং যারা ইহুদী, নাসারা ও সাবেঈন, (তাদের মধ্য থেকে) যারা ঈমান এনেছে "আল্লাহর" প্রতি ও কিয়ামত দিবসের প্রতি এবং সৎকাজ করেছে, তাদের জন্য রয়েছে তার সওয়াব তাদের পালনকর্তার কাছে। আর তাদের কোনই ভয়-ভীতি নেই, তারা দুঃখিতও হবে না।সূরা বাক্বারা-৬২
উক্ত আয়াতে বলা হচ্ছে ইহুদী নাসারাদের মধ্যে যারা সেই সময়ে আল্লাহর উপর ঈমান এনেছে তারা জান্নাতী।
তাই খোদা শব্দকে আল্লাহ শব্দর অনুবাদ হিসেবে ব্যবহার করতে কোনো প্রকার বিধি-নিষেধ নেই।
আল্লাহ সেই সমস্ত মহা-মনিষীদের সমস্ত চেষ্টাকে কবুল করুক।আমীন।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আল্লাহ শব্দ নাম বাচক বিশেষ্য। তবে ইসলাম পূর্বযুগে এর সাথে কিছু শিরকী বিশেষ্য যোগ ছিল, কিন্তু ইসলাম পরবর্তীযুগে এই নামকে শিরকী বিশেষণ থেকে পবিত্র করা হয়। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...