আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
252 views
in সালাত(Prayer) by (25 points)

আসসালামু আলাইকুম

[নির্দিষ্ট মাজহাব মানা নিয়ে আমার কিছু বিভ্রান্তি আছে (যদিও এখন হানাফি মাজহাব মানছি),তাই এগুলো ক্লিয়ার করছি]

১) (তাকলিদে শাখাসি নিয়ে আমার বিভ্রান্তি আছে) কুরআনে আছে আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুলের আনুগত্য করতে , তারপর উলিল আমর(তবে নিঃশর্ত আনুগত্য নয়), আর তাদের মধ্যে মতভেদ দেখা দিলে আল্লাহ্‌ ও আল্লাহর রাসুলের কাছে ফিরে যেতে । এখন যদি আপনারা বলেন যে মুকাল্লিদের তাকলিদ করা ফরজ/ওয়াজিব তাহলে তো সে মতভেদ দেখে দিলে আল্লাহ্‌ ও আল্লাহর রাসুলের কাছে ফিরে যাচ্ছে না ।

যেমন ধরুন :- দেওয়ানবাগি পীরের মুকাল্লিদকে যদি আপনি দাওয়াত দেন,শিরকি কাজ থেকে রক্ষা করতে চান এবং বুঝিয়ে বলেন,তারপর সে উত্তরে বলে আমি মুকাল্লিদ আমার উপর তাকলিদ ফরজ তাই আমি আমার পীরের তাকলিদ করছি (তার কাছে তো তার পীর সবচেয়ে সঠিক) ,তাহলে তো সে সত্য পাবেনা । এমনভাবে কাফেররা যদি তাদের ধর্মগুরুদের অন্ধতাকলিদ করে...

আমার প্রশ্ন মাসালার ক্ষেত্রেও তো ইমামরা অনিচ্ছাকৃত ভুল করতে পারেন , তারা তো ১টি নেকি পাবেন ,কিন্তু আমাদের কি হবে যদি আমরা তা অন্ধভাবে অনুসরন করে যাই ?

[ দেওয়ানবাগি পীরের সাথে ইমামদের তুলনা দেয়া জুলুম , তবে আমি তুলনা দেইনি । তুলনা দিয়েছি তাক্লিদের সাথে । কারণ সবাই সবার ইমামকে সঠিক মনে করে (ভাল মনে করে বলেই তাকে অন্যদের থেকে বেশি প্রাধান্য দেয় )]

২) এর আগে আমি আসরের ওয়াক্ত নিয়ে প্রশ্ন করেছিলাম । ছায়া সমান নাকি দ্বিগুণ । আপনি দ্বিগুণের পক্ষে যে হাদিস দিয়েছেন সেখানে সরাসরি বলা নেই(আর সেটা আছে সেটাও সব মুহাদ্দিসের মতে সহিহ না , আবার এই মত শুধু ইমাম আবু হানিফার ,বাকি ৩ মাজহাবের ইমামের মত এক তবে হানাফি মাজহাব থেকে ভিন্ন) , ব্যাখ্যা করে বলেছেন । তবে হাদিস পরে মনে হল এই হাদিসের ব্যাখ্যা হয়তো আপনারা এভাবে করেছে তবে সবাই এটা করবে না । কিন্তু ছায়া সমান হওয়ার স্পষ্ট হাদিস যেখানে আছে , জিবরীল আ যা নবীজিকে সা শিখিয়ে গেছেন* তা জানার পরও কি এই স্পষ্ট হাদিসের উপর আমল করবনা ? ( যেখা বুঝা যায় ওয়াক্ত শুরু কখন আর শেষ কখন )

*

গ্রন্থঃ সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)

অধ্যায়ঃ / সালাত (كتاب الصلاة)

হাদিস নম্বরঃ ৩৯৩

 

باب فِي الْمَوَاقِيتِ حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ سُفْيَانَ، حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ فُلَانِ بْنِ أَبِي رَبِيعَةَ، - قَالَ أَبُو دَاوُدَ هُوَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ الْحَارِثِ بْنِ عَيَّاشِ بْنِ أَبِي رَبِيعَةَ - عَنْ حَكِيمِ بْنِ حَكِيمٍ، عَنْ نَافِعِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم " أَمَّنِي جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ عِنْدَ الْبَيْتِ مَرَّتَيْنِ فَصَلَّى بِيَ الظُّهْرَ حِينَ زَالَتِ الشَّمْسُ وَكَانَتْ قَدْرَ الشِّرَاكِ وَصَلَّى بِيَ الْعَصْرَ حِينَ كَانَ ظِلُّهُ مِثْلَهُ وَصَلَّى بِيَ - يَعْنِي الْمَغْرِبَ - حِينَ أَفْطَرَ الصَّائِمُ وَصَلَّى بِيَ الْعِشَاءَ حِينَ غَابَ الشَّفَقُ وَصَلَّى بِيَ الْفَجْرَ حِينَ حَرُمَ الطَّعَامُ وَالشَّرَابُ عَلَى الصَّائِمِ فَلَمَّا كَانَ الْغَدُ صَلَّى بِيَ الظُّهْرَ حِينَ كَانَ ظِلُّهُ مِثْلَهُ وَصَلَّى بِيَ الْعَصْرَ حِينَ كَانَ ظِلُّهُ مِثْلَيْهِ وَصَلَّى بِيَ الْمَغْرِبَ حِينَ أَفْطَرَ الصَّائِمُ وَصَلَّى بِيَ الْعِشَاءَ إِلَى ثُلُثِ اللَّيْلِ وَصَلَّى بِيَ الْفَجْرَ فَأَسْفَرَ ثُمَّ الْتَفَتَ إِلَىَّ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ هَذَا وَقْتُ الأَنْبِيَاءِ مِنْ قَبْلِكَ وَالْوَقْتُ مَا بَيْنَ هَذَيْنِ الْوَقْتَيْنِ " . - حسن صحيح 

 

. সলাতের ওয়াক্তসমূহের বর্ণনা 

৩৯৩। ইবনুআব্বাস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বাইতুল্লাহর নিকট জিবরীল (আঃ) দুবার আমার সলাতে ইমামতি করেছেন। (প্রথমবার) সূর্য (পশ্চিম আকাশে) ঢলে যাওয়ার পর আমাকে নিয়ে তিনি যুহর সলাত আদায় করলেন। তখন (পূর্ব দিকে) জুতার ফিতার সমান ছায়া দেখা দিয়েছিল। অতঃপর তিনি আমাকে নিয়েআসরের সলাত আদায় করলেন, যখন (প্রত্যেক বস্তুর) ছায়া তার সমান হয়। এরপর আমাকে নিয়ে তিনি মাগরিবের সলাত আদায় করলেন, যখন সিয়াম পালনকারী ইফতার করে থাকে। এরপর তিনি আমাকে নিয়েইশার সলাত আদায় করলেন, যখন শাফাক্ব (লাল শুভ্র রং) অন্তর্হিত হয় এবং ফজরের সলাত আদায় করলেন, যখন সিয়াম পালনকারীর জন্য পানাহার হারাম হয়ে যায়।

 

(দ্বিতীয়বারে) পরের দিন তিনি আমাকে নিয়ে যুহরের সলাত আদায় করলেন, (প্রত্যেক বস্তুর) ছায়া যখন সমান হলো। তিনি আমাকে নিয়েআসর সলাত আদায় করলেন, যখন ছায়া তার দ্বিগুণ হলো। তিনি আমাকে নিয়ে মাগরিবের সলাত আদায় করলেন, যখন সিয়াম পালনকারীর ইফতারের সময় হয়। তিনি আমাকে নিয়েইশা সলাত আদায় করলেন রাতের তৃতীয়াংশে এবং ফজর সলাত আদায় করলেন ভোরের আলো ছড়িয়ে যাওয়ার পর। অতঃপর জিবরীল (আঃ) আমার দিকে ফিরে বললেন, হে মুহাম্মাদ! এটাই হচ্ছে আপনার পূর্ববর্তী নাবীগণের সলাতের ওয়াক্ত এবং সলাতের ওয়াক্তসমূহ এই দুসময়ের মাঝখানেই নিহিত।[1]

 

হাসান সহীহ।

.

এছারা এই https://www.ifatwa.info/705 প্রশ্নের কমেন্টে এরও হাদিস দেয়া আছে ।

৩) রাফায়েল ইয়াদাইনের ক্ষেত্রেও সেইম । যদি হাশরের ময়দানে আল্লাহ্‌ও বলেন- তোমার কাছে অনেক হাদিস ছিল রাফায়েল ইয়াদাইনের কিন্তু তুমি ইমামের মতকে হাদিস থেকে বেশি প্রাধান্য দিয়েছ ।তাহলে আমি কি জবাব দিব ?

আমার জানা মতে হানাফি মাজহাবে মুতাওয়াতির হাদিস অন্য হাদিস থেকে বেশি প্রাধান্য দেয় , তাহলে এই ক্ষেত্রে ভিন্ন কেন ?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)তাকলীদের তাখসীর যে অর্থ রয়েছে, তা সেটা নয়, যা আপনি বুঝেছেন, বরং তার ভিন্ন অর্থ রয়েছে।বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1936

(২)হানাফি মাযহাবে আসরের ওয়াক্ত নির্ণয়ে দুই কওল তথা এক মিছিল ও দুই মিছিল উভয়ের উপর ফাতাওয়া রয়েছে। এই দুই ফাতাওয়ার মধ্যে অবশ্যই যে কোনো একটিকে মানা যাবে। হ্যা উত্তম হল, দুই মিছিলের উপর আ’মল করা। তবে কেউ এক মিছিল অনুযায়ী আসরের নামায পড়ে নিলে তার নামাযও আদায় হয়ে যাবে। কোন হাদীসের ব্যখ্যা কেমন হবে, তার জন্য আপনাকে শরয়ী কিছূ জ্ঞান থাকতে হবে। আর এই জ্ঞান থাকার নামই হল, মুজতাহিদ ফিল মাযহাব। মুজতাহিদ ফিল মাযহাব এর যোগ্যতার অনুসারী কারো জন্য তখন ইমামের মত মানা ওয়াজিব নয়, বরং তখন নিজ অভিজ্ঞতার আলোকে আ’মল করতে হবে। আপনি যদি নিজ অভিজ্ঞতার আলোকে কিছু বুঝতে না পারেন, তখন হাদীস বুঝার স্বার্থে আপনাকে ভিন্ন কারো তাকলীদ করতে হবে। অর্থাৎ অমুক ঐ হাদীসের যে ব্যখ্যা করেছেন, সেটাকে আমি মানলাম ও গ্রহণ করলাম। এমন হলে আপনি তো কোনো একজনের তাকলীদ করলেন। 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
নিরাপদ এটাই যে, মুজতাহিদ ফিল মাযহাব নয়, এমন কারো জন্য সর্বসম্মত গ্রহণযোগ্য চার মাযহাবের যে কোনো একটি গ্রহণ করে নেয়া। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1936

(৩)অন্যদিকে যদি আল্লাহ আপনাকে জিজ্ঞাসা করেন যে, সাত স্থান ব্যতীত রফে ইয়াদাইন না করতে যে আমার রাসূল আদেশ দিয়েছিলেন, এই হাদিসকে অমান্য তুমি কেন করলে?? তখন আপনি কি জবাব দেবেন?? বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/253


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...