আসসালামু আলাইকুম
[নির্দিষ্ট মাজহাব মানা নিয়ে আমার কিছু বিভ্রান্তি আছে (যদিও এখন হানাফি মাজহাব মানছি),তাই এগুলো ক্লিয়ার করছি]
১) (তাকলিদে শাখাসি নিয়ে আমার বিভ্রান্তি আছে) কুরআনে আছে আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুলের আনুগত্য করতে , তারপর উলিল আমর(তবে নিঃশর্ত আনুগত্য নয়), আর তাদের মধ্যে মতভেদ দেখা দিলে আল্লাহ্ ও আল্লাহর রাসুলের কাছে ফিরে যেতে । এখন যদি আপনারা বলেন যে মুকাল্লিদের তাকলিদ করা ফরজ/ওয়াজিব তাহলে তো সে মতভেদ দেখে দিলে আল্লাহ্ ও আল্লাহর রাসুলের কাছে ফিরে যাচ্ছে না ।
যেমন ধরুন :- দেওয়ানবাগি পীরের মুকাল্লিদকে যদি আপনি দাওয়াত দেন,শিরকি কাজ থেকে রক্ষা করতে চান এবং বুঝিয়ে বলেন,তারপর সে উত্তরে বলে আমি মুকাল্লিদ আমার উপর তাকলিদ ফরজ তাই আমি আমার পীরের তাকলিদ করছি (তার কাছে তো তার পীর সবচেয়ে সঠিক) ,তাহলে তো সে সত্য পাবেনা । এমনভাবে কাফেররা যদি তাদের ধর্মগুরুদের অন্ধতাকলিদ করে...
আমার প্রশ্ন মাসালার ক্ষেত্রেও তো ইমামরা অনিচ্ছাকৃত ভুল করতে পারেন , তারা তো ১টি নেকি পাবেন ,কিন্তু আমাদের কি হবে যদি আমরা তা অন্ধভাবে অনুসরন করে যাই ?
[ দেওয়ানবাগি পীরের সাথে ইমামদের তুলনা দেয়া জুলুম , তবে আমি তুলনা দেইনি । তুলনা দিয়েছি তাক্লিদের সাথে । কারণ সবাই সবার ইমামকে সঠিক মনে করে (ভাল মনে করে বলেই তাকে অন্যদের থেকে বেশি প্রাধান্য দেয় )]
২) এর আগে আমি আসরের ওয়াক্ত নিয়ে প্রশ্ন করেছিলাম । ছায়া সমান নাকি দ্বিগুণ । আপনি দ্বিগুণের পক্ষে যে হাদিস দিয়েছেন সেখানে সরাসরি বলা নেই(আর সেটা আছে সেটাও সব মুহাদ্দিসের মতে সহিহ না , আবার এই মত শুধু ইমাম আবু হানিফার ,বাকি ৩ মাজহাবের ইমামের মত এক তবে হানাফি মাজহাব থেকে ভিন্ন) , ব্যাখ্যা করে বলেছেন । তবে হাদিস পরে মনে হল এই হাদিসের ব্যাখ্যা হয়তো আপনারা এভাবে করেছে তবে সবাই এটা করবে না । কিন্তু ছায়া সমান হওয়ার স্পষ্ট হাদিস যেখানে আছে , জিবরীল আ যা নবীজিকে সা শিখিয়ে গেছেন* তা জানার পরও কি এই স্পষ্ট হাদিসের উপর আমল করবনা ? ( যেখা বুঝা যায় ওয়াক্ত শুরু কখন আর শেষ কখন )
*
গ্রন্থঃ সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
অধ্যায়ঃ ২/ সালাত (كتاب الصلاة)
হাদিস নম্বরঃ ৩৯৩
باب فِي الْمَوَاقِيتِ حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ سُفْيَانَ، حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ فُلَانِ بْنِ أَبِي رَبِيعَةَ، - قَالَ أَبُو دَاوُدَ هُوَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ الْحَارِثِ بْنِ عَيَّاشِ بْنِ أَبِي رَبِيعَةَ - عَنْ حَكِيمِ بْنِ حَكِيمٍ، عَنْ نَافِعِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم " أَمَّنِي جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ عِنْدَ الْبَيْتِ مَرَّتَيْنِ فَصَلَّى بِيَ الظُّهْرَ حِينَ زَالَتِ الشَّمْسُ وَكَانَتْ قَدْرَ الشِّرَاكِ وَصَلَّى بِيَ الْعَصْرَ حِينَ كَانَ ظِلُّهُ مِثْلَهُ وَصَلَّى بِيَ - يَعْنِي الْمَغْرِبَ - حِينَ أَفْطَرَ الصَّائِمُ وَصَلَّى بِيَ الْعِشَاءَ حِينَ غَابَ الشَّفَقُ وَصَلَّى بِيَ الْفَجْرَ حِينَ حَرُمَ الطَّعَامُ وَالشَّرَابُ عَلَى الصَّائِمِ فَلَمَّا كَانَ الْغَدُ صَلَّى بِيَ الظُّهْرَ حِينَ كَانَ ظِلُّهُ مِثْلَهُ وَصَلَّى بِيَ الْعَصْرَ حِينَ كَانَ ظِلُّهُ مِثْلَيْهِ وَصَلَّى بِيَ الْمَغْرِبَ حِينَ أَفْطَرَ الصَّائِمُ وَصَلَّى بِيَ الْعِشَاءَ إِلَى ثُلُثِ اللَّيْلِ وَصَلَّى بِيَ الْفَجْرَ فَأَسْفَرَ ثُمَّ الْتَفَتَ إِلَىَّ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ هَذَا وَقْتُ الأَنْبِيَاءِ مِنْ قَبْلِكَ وَالْوَقْتُ مَا بَيْنَ هَذَيْنِ الْوَقْتَيْنِ " . - حسن صحيح
২. সলাতের ওয়াক্তসমূহের বর্ণনা
৩৯৩। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বাইতুল্লাহর নিকট জিবরীল (আঃ) দু’বার আমার সলাতে ইমামতি করেছেন। (প্রথমবার) সূর্য (পশ্চিম আকাশে) ঢলে যাওয়ার পর আমাকে নিয়ে তিনি যুহর সলাত আদায় করলেন। তখন (পূর্ব দিকে) জুতার ফিতার সমান ছায়া দেখা দিয়েছিল। অতঃপর তিনি আমাকে নিয়ে ‘আসরের সলাত আদায় করলেন, যখন (প্রত্যেক বস্তুর) ছায়া তার সমান হয়। এরপর আমাকে নিয়ে তিনি মাগরিবের সলাত আদায় করলেন, যখন সিয়াম পালনকারী ইফতার করে থাকে। এরপর তিনি আমাকে নিয়ে ‘ইশার সলাত আদায় করলেন, যখন শাফাক্ব (লাল শুভ্র রং) অন্তর্হিত হয় এবং ফজরের সলাত আদায় করলেন, যখন সিয়াম পালনকারীর জন্য পানাহার হারাম হয়ে যায়।
(দ্বিতীয়বারে) পরের দিন তিনি আমাকে নিয়ে যুহরের সলাত আদায় করলেন, (প্রত্যেক বস্তুর) ছায়া যখন সমান হলো। তিনি আমাকে নিয়ে ‘আসর সলাত আদায় করলেন, যখন ছায়া তার দ্বিগুণ হলো। তিনি আমাকে নিয়ে মাগরিবের সলাত আদায় করলেন, যখন সিয়াম পালনকারীর ইফতারের সময় হয়। তিনি আমাকে নিয়ে ‘ইশা সলাত আদায় করলেন রাতের তৃতীয়াংশে এবং ফজর সলাত আদায় করলেন ভোরের আলো ছড়িয়ে যাওয়ার পর। অতঃপর জিবরীল (আঃ) আমার দিকে ফিরে বললেন, হে মুহাম্মাদ! এটাই হচ্ছে আপনার পূর্ববর্তী নাবীগণের সলাতের ওয়াক্ত এবং সলাতের ওয়াক্তসমূহ এই দু’ সময়ের মাঝখানেই নিহিত।[1]
হাসান সহীহ।
.
এছারা এই https://www.ifatwa.info/705 প্রশ্নের কমেন্টে এরও হাদিস দেয়া আছে ।
৩) রাফায়েল ইয়াদাইনের ক্ষেত্রেও সেইম । যদি হাশরের ময়দানে আল্লাহ্ও বলেন- তোমার কাছে অনেক হাদিস ছিল রাফায়েল ইয়াদাইনের কিন্তু তুমি ইমামের মতকে হাদিস থেকে বেশি প্রাধান্য দিয়েছ ।তাহলে আমি কি জবাব দিব ?
আমার জানা মতে হানাফি মাজহাবে মুতাওয়াতির হাদিস অন্য হাদিস থেকে বেশি প্রাধান্য দেয় , তাহলে এই ক্ষেত্রে ভিন্ন কেন ?