আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
413 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (12 points)
আসসালামু আলাইকুম।
১/ কানের ফুটো থেকে যে ময়লা বের হয় তা তরল হোক বা শুকনা,  উভয়টাই কি নাপাক?

২/ বৌদ্ধরা তাদের পূজা উপলক্ষে প্রাসাদের জন্য খইয়ের নাড়ুঁ বানানোর আয়োজন করে। সেগুলো বানানোর পরে মন্দিরে নিয়ে গিয়ে তাদের দেবতার নামে উৎসর্গ করে সেগুলোকে পূজার প্রাসাদ হিসেবে খায়।
 প্রশ্ন হচ্ছে- নাড়ুঁ বানানোর আগে যে খই গুড়োঁ করা হয়, সেগুলো মন্দিরে নিয়ে গিয়ে উৎসর্গ করার আগে কোন মুসলিমের বাড়িতে বানিয়ে খাওয়ার জন্য পাঠালে, এসব খাওয়া জায়েজ হবে কি?

৩/ বিধর্মীদের পুকুরের পানির মাছ মুসলিমের ঘরে পাঠালে সে মাছ খাওয়া কি মুসলিমের জন্য জায়েজ হবে?
এখানে উল্লেখিত- বলা হয় যে, তাদের ইনকাম হারাম।  তাই তাদের কেনা ও চাষ করা মাছ খাওয়া যাবে না।
৪/ বিধর্মীরা মুসলিমদের চেয়ে বেশি পরিষ্কার- এ ধরনের আক্বীদা পোষণ  করলে কারোর ইমান থাকবে কি?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১) https://www.ifatwa.info/16182 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, 
কান দিয়ে যদি দুর্গন্ধ যুক্ত পানি নির্গত হয়, তাহলে তা নাপাক। এবং এদ্ধারা অজু নষ্ট হয়ে যাবে। (ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-৫/৬৬)
তবে যদি কান দিয়ে দুর্গন্ধযুক্ত কোনো পানি বের না হয়, তাহলে তা নাপাক নয়, এবং এদ্ধারা অজুও নষ্ট হবে না। 
 لَا يَنْقُضُ (لَوْ خَرَجَ مِنْ أُذُنِهِ) وَنَحْوِهَا كَعَيْنِهِ وَثَدْيِهِ (قَيْحٌ) وَنَحْوُهُ كَصَدِيدٍ وَمَاءِ سُرَّةٍ وَعَيْنٍ (لَا بِوَجَعٍ) وَإِنْ خَرَجَ (بِهِ) أَيْ بِوَجَعٍ (نَقَضَ) لِأَنَّهُ دَلِيلُ الْجُرْحِ
«حاشية ابن عابدين = رد المحتار ط الحلبي» (1/ 147)
وفي ردالمحتار تحت(قَوْلُهُ: وَصَدِيدٍ) فِي الْمُغْرِبِ: صَدِيدُ الْجُرْحِ مَاؤُهُ الرَّقِيقُ الْمُخْتَلِطُ بِالدَّمِ (قَوْلُهُ: وَعَيْنٍ) أَيْ وَمَاءِ عَيْنٍ: وَهُوَ الدَّمْعُ وَقْتَ الرَّمَدِ. وَفِي بَعْضِ النُّسَخِ وَغَيْرِهِ بَدَلُ وَعَيْنٍ: أَيْ غَيْرِ مَاءِ السُّرَّةِ كَمَاءِ نَفِطَةٍ وَجُرْحٍ (قَوْلُهُ: لَا بِوَجَعٍ) تَقْيِيدٌ لِعَدَمِ النَّقْضِ بِخُرُوجِ ذَلِكَ، وَعَدَمِ النَّقْضِ هُوَ مَا مَشَى عَلَيْهِ الدُّرَرُ وَالْجَوْهَرَةُ وَالزَّيْلَعِيُّ مَعْزِيًّا لِلْحَلْوَانِيِّ.
قَالَ فِي الْبَحْرِ: وَفِيهِ نَظَرٌ، بَلْ الظَّاهِرُ إذَا كَانَ الْخَارِجُ قَيْحًا أَوْ صَدِيدًا لَنَقَضَ، سَوَاءٌ كَانَ مَعَ وَجَعٍ أَوْ بِدُونِهِ لِأَنَّهُمَا لَا يَخْرُجَانِ إلَّا عَنْ عِلَّةٍ، نَعَمْ هَذَا التَّفْصِيلُ حَسَنٌ فِيمَا إذَا كَانَ الْخَارِجُ مَاءً لَيْسَ غَيْرُ. اهـ. وَأَقَرَّهُ فِي الشُّرُنْبُلَالِيَّةِ، وَأَيَّدَهُ بِعِبَارَةِ الْفَتْحِ الْجُرْحُ وَالنَّفِطَةُ وَمَاءُ الثَّدْيِ وَالسُّرَّةِ وَالْأُذُنِ إذَا كَانَ لِعِلَّةٍ سَوَاءٌ عَلَى الْأَصَحِّ اهـ
সুতরাং যদি ব্যথার মাধ্যমে কান থেকে কিছু বের হয়, এবং দুর্গন্ধ যুক্ত হয়, তাহলে তা নাপাক, তাই গোসলের পরে যখন কানে গোসলের কিছু পানি লেগে থাকে, তখন কানের ওই তরল পদার্থও অল্প পরিমাণে গোসলের পানির সাথে মিশ্রিত হয়ে থাকলে তোয়াল দ্বারা মুছতে হবে।  তোয়ালে দিয়ে ওই পানি মুছলে তোয়ালে সেই তোয়াতে এক দিরহাম থেকে বেশী পরিমাণে লেগে তাকেও আবার ধুয়ে তারপর  ব্যবহার করতে হবে

(২) https://www.ifatwa.info/1382 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, 
বিজাতীয় উৎসবে তাদের কারো কাছ থেকে মুসলমানদের জন্য হাদিয়া গ্রহণ সম্পর্কে ইমাম ইবনে তাইমিয়াহ বলেন,
ﻭﺃﻣﺎ ﻗﺒﻮﻟﻪ ﺍﻟﻬﺪﻳﺔ ﻣﻨﻬﻢ ﻳﻮﻡ ﻋﻴﺪﻫﻢ، ﻓﻘﺪ ﻗﺪﻣﻨﺎ ﻋﻦ ﻋﻠﻲ ﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﻃﺎﻟﺐ - ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ - ﺃﻧﻪ ﺃﺗﻲ ﺑﻬﺪﻳﺔ " ﻳﻮﻡ ﻧﻴﺮﻭﺯ " ﻓﻘﺒﻠﻬﺎ .ﻭﻋﻦ ﻋﺎﺋﺸﺔ - ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﺎ - ﺃﻧﻬﺎ ﻗﺎﻟﺖ : " ﺃﻣﺎ ﻣﺎ ﺫﺑﺢ ﻟﺬﻟﻚ ﺍﻟﻴﻮﻡ، ﻓﻼ ﺗﺄﻛﻠﻮﺍ، ﻭﻟﻜﻦ ﻛﻠﻮﺍ ﻣﻦ ﺃﺷﺠﺎﺭﻫﻢ ."ﻭﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﺑﺮﺯﺓ ﺃﻧﻪ ﻛﺎﻥ ﻳﻬﺪﻱ ﺇﻟﻴﻪ ﻣﺠﻮﺱ ﻓﻲ " ﻧﻴﺮﻭﺯﻫﻢ " ﻓﻴﻘﻮﻝ ﻷﻫﻠﻪ : ﻣﺎ ﻛﺎﻥ ﻣﻦ ﻓﺎﻛﻬﺔ ﻓﻜﻠﻮﻩ، ﻭﻣﺎ ﻛﺎﻥ ﻣﻦ ﻏﻴﺮ ﺫﻟﻚ ﻓﺮﺩﻭﻩ " ﻓﻬﺬﺍ ﻛﻠﻪ ﻳﺪﻝ ﻋﻠﻰ ﺃﻧﻪ ﻻ ﺗﺄﺛﻴﺮ ﻟﻠﻌﻴﺪ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﻨﻊ ﻣﻦ ﻗﺒﻮﻝ ﻫﺪﻳﺘﻬﻢ، ﺑﻞ ﺣﻜﻤﻬﺎ ﻓﻲ ﺍﻟﻌﻴﺪ ﻭﻏﻴﺮﻩ ﺳﻮﺍﺀ؛ ﻷﻧﻪ ﻟﻴﺲ ﻓﻲ ﺫﻟﻚ ﺇﻋﺎﻧﺔ ﻋﻠﻰ ﺷﻌﺎﺋﺮ ﻛﻔﺮﻫﻢ،
[ﺍﻟﻤﻨﻬﺞ ﺍﻟﻘﻮﻳﻢ ﻓﻲ ﺍﺧﺘﺼﺎﺭ ﺍﻗﺘﻀﺎﺀ ﺍﻟﺼﺮﺍﻁﺍﻟﻤﺴﺘﻘﻴﻢ-١/١٢٨
ﻓﺼﻞ: ﺣﻜﻢ ﻗﺒﻮﻝ ﺍﻟﻤﺴﻠﻢ ﺍﻟﻬﺪﻳﺔ ﻣﻦ ﺍﻟﻜﻔﺎﺭ ﻳﻮﻡ ﻋﻴﺪﻫﻢ ﻭﺇﻳﺮﺍﺩ ﺍﻟﻨﺼﻮﺹ ﻋﻠﻰ ﺟﻮﺍﺯﻩ]
কাফিরদের কাছ থেকে তাদের উৎসব উপলক্ষ্যে হাদিয়া গ্রহণ সম্পর্কে আমরা ইতিপূর্বে হযরত আলি রাযি.এর হাদিস বর্ণনা করেছি যে, উনার কাছে নাইরুয দিনে হাদিয়া আসলে তিনি তা কবুল করে নেন।এবং হযরত আয়েশা রাযি থেকেও বর্ণিত রয়েছে,তিনি বলেনঃযে জন্তু সেই উৎসবের নামে যবেহ করা হয়েছে তা তোমরা খেয়ো না।তবে তাদের ফলমূলাদি খেতে পারো।হযরত আবু বারযাহ রাযি. থেকে বর্ণিত রয়েছে যে,নাইরুয দিনে কোনো এক অগ্নিপূজক তাকে কিছু হাদিয়া দিয়েছিলো, তখন তিনি তার পরিবারবর্গকে বলেছিলেন,হাদিয়া যদি ফলমূলাদি থেকে হয় তাহলে তোমরা খেতে পারো।আর যদি তা অন্যকিছু হয় তাহলে তা তোমরা ফিরিয়ে দাও।এ সমস্ত রেওয়াত প্রমাণ করে যে,কাফিরদের কাছ থেকে হাদিয়া গ্রহণ তাদের উৎসব সমূহ বাধা প্রদাণ করবে না।বরং যেকোনো সময় তাদের কাছ থেকে হাদিয়া গ্রহণ করা যাবে।কেননা তখন তা কাফিরদের ধর্মীয় কোনো বিষয়ে সাহায্য করা হচ্ছে না।(আল-মানহাজুল কাওয়ীম ফি ইখতেছারে ইক্বতেযায়িস সিরাতিল মুস্তাক্বিম-১/১২৮)

(৩) মুসলিম হোক বা অমুসলিম হোক, তাদের ইনকাম হারাম হলে তাদের পাঠানো হাদিয়া গ্রহণ করা কখনো জায়েয হবে না। 

(৪) এরকম আকিদা রাখলে ঈমান চলে যাবে। তবে কোনো নির্দিষ্ট মুসলমান এবং নির্দিষ্ট কাফির সম্পর্কে এভাবে বললে, তার ঈমানে কোনো সমস্যা হবে না। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (12 points)
হুজুর আমি বলিনি যে, ব্যাথার দ্বারা কান থেকে কিছু বের হয়েছে! বরং জানতে চেয়েছি, কানের গর্ত যেটা আছে, যেখান দিয়ে পানি ঢুকলে রোযার মাসআলার মধ্যে পড়ে, সে গর্ত থেকে বের হওয়া কোন তরল ময়লা বা শুকনো ময়লা নাপাক কি না...
by (12 points)
২ নং প্রশ্নের উত্তর ক্লিয়ারলি পাই নি হুজুর!

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...