বিসমিহি তা'আলা
জবাবঃ-
ঘটনাচক্রে আপনার প্রশ্ন নাম্বার ১৯২৪ হয়েছে। আমাদের ওয়েবসাইট থেকে অটোমেটিক ভাবে এ প্রশ্ন নাম্বার আসে।যাইহোক প্রশ্ন নাম্বারটা আমাদেরক স্বরণ করিয়ে দিচ্ছে,মুসলমানদের সর্বশেষ খেলাফত ব্যবস্থার নিঃশেষ হওয়ার সালকে। যা তুর্কি ভিত্তিক "খেলাফতে উসমানি" নামে প্রতিষ্টিত ছিলো।চেঙ্গিস খানের বাগদাদ হামলার পর "খেলাফতে আব্বাসি" এর ভিত দুর্বল হওয়ার পরই আরতুগ্রুল গাজীর ছেলে উসমান "খেলাফতে উসমানি" প্রতিষ্টিত করেন।যা ১৯২৪ ইংরেজীতে পশ্চিমাদের ষড়যন্ত্রে নিঃশেষ হয়ে যায়।
বর্তমানে খলিফা ভিত্তিক রাষ্ট্র পরিচালনার সম্ভাব্য কয়েকটি পদ্ধতি হতে পারে।যথাঃ-
(ক)
পরাশক্তি কাফিরদের সাথে মোকাবেলা করা বা তাদেরকে পরাস্ত করার মত শক্তি নিয়ে এবং মুসলমানদের মধ্যে কেউ বায়আত গ্রহণ না করলে তার উপর অবরোধ আপরোপ সহ যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার সামর্থ্য থাকাবস্থায় কুরআন হাদীসের আলোকে রাষ্ট্র পরিচালনার ঘোষনা দিয়ে কেউ যদি নিজেকে খলিফা ঘোষনা দেয়,এবং অধিকাংশ মুসলিম রাষ্ট্র সমর্থন দেয় বা কৌশলে সমর্থন আদায় করে নেয়া হয়,তাহলে তখনই তিনি আমীর হিসেবে প্রতিষ্টিত হবেন।
(খ)
সমস্ত মুসলিম রাষ্ট্র বা অধিকাংশ মুসলিম রাষ্ট্র মিলে কাউকে খলিফা নির্ধারণ করা।এটা অসম্ভাব্য একটা বিষয়।অতীতে এমনটা হয়নি।কেননা সবাই নিজেকে স্বাধীন এবং স্বনির্ভর ভাবতে চায়।স্বেচ্ছায় কেউ কারো অধীনতা স্বীকার করতে কখনো রাজি হয়নি এবং হবেও না।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
খেলাফত প্রতিষ্টা এত সহজ নয়।ইতিহাস পড়লে দেখা যায়,কতটুকু ত্যাগ এবং কষ্টের বিনিময় একেকটা সাম্রাজ্য সৃষ্টি হয়েছিলো।কখনো কখনো নিজ আপনজনকে পর্যন্ত হত্যা করে মানুষ তাদের সাম্রাজ্যকে টিকিয়ে রেখেছিলো।
মুসলিম রাষ্ট্র সমূহের মধ্যে সবচেয়ে বেশী শক্তিশালী যে দেশ, সে দেশ কুটনৈতিকভাবে সবাইকে নিজের আয়ত্বে নিয়ে আসাটাও আজ দূরহ ব্যাপার। কেননা আজ সবাই কাফির পরাশক্তিদের হাতের পুতুল।
হয়তো একদিন আবার খেলাফত পদ্ধতি আসবে।আমাদের প্রজন্ম সেই খেলাফতকে দেখবে।আল্লাহ কবুল করুক। (আমীন)
গণতান্ত্রিক ভাবে খলিফা নির্ধারণের কোনো পদ্ধতি নেই।হ্যা এমনটা হতে পারে,গণতান্ত্রিকভাবে প্রথমে খলিফা নির্ধারণ করে পরবর্তীতে কুরআন-হাদীস ভিত্তিক সংবিধান রচনা করে রাষ্ট্র পরিচালনা করা।
ইরানের মত একজন কে সর্বোচ্ছ ধর্মীয় নেতা রেখে রাষ্ট্র পরিচালনা করা।সর্বোচ্ছ নেতা বলতে মূলত ইনিই খলিফার পদে অধিষ্ঠিত হবেন।উনার আসনে কোনো নির্বাচন হবে না,যতক্ষণ না উনি বেঁচে থাকবেন।তবে শরীয়ত বিরোধী কাজে লিপ্ত হলে অবশ্যই তিনি বরখাস্তের যোগ্য হবেন।যা আহলে সূরা ঠিক করবে।
ইরানের মত যদি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আদর্শে আদর্শিত কোনো রাষ্ট্র সর্বোচ্ছ নেতার পদ সৃষ্টি করতে পারে,এবং এই দেশ পরাশক্তি হতে পারে,তাহলে অবশ্যই তখন খেলাফত ভিত্তিক রাষ্টর স্বপ্ন দেখা যাবে।আল্লাহ কবুল করুক।আমীন।
আল্লাহ-ই ভালো জানেন।
উত্তর লিখনে
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ, Iom.
পরিচালক
ইসলামিক রিচার্স কাউন্সিল বাংলাদেশ