জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
পৃথক বিছানা সংক্রান্ত হাদীস শরীফে এসেছেঃ
হযরত আমর বিন শুয়াইব তার সুত্রে বর্ণনা করেন,
ﻋَﻦْ ﻋَﻤْﺮِﻭ ﺑْﻦِ ﺷُﻌَﻴْﺐٍ ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ ﻋَﻦْ ﺟَﺪِّﻩِ ﻗَﺎﻝَ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ( ﻣُﺮُﻭﺍ ﺃَﻭْﻟَﺎﺩَﻛُﻢْ ﺑِﺎﻟﺼَّﻠَﺎﺓِ ﻭَﻫُﻢْ ﺃَﺑْﻨَﺎﺀُ ﺳَﺒْﻊِ ﺳِﻨِﻴﻦَ ، ﻭَﺍﺿْﺮِﺑُﻮﻫُﻢْ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ ﻭَﻫُﻢْ ﺃَﺑْﻨَﺎﺀُ ﻋَﺸْﺮٍ ، ﻭَﻓَﺮِّﻗُﻮﺍ ﺑَﻴْﻨَﻬُﻢْ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻤَﻀَﺎﺟِﻊِ ) .
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, তোমরা তোমাদের সন্তানাদিকে নামাযের আদেশ দাও যখন তারা সপ্ত বর্ষে উপনীত হয়।নামায না পড়ার ধরুণ তাদেরকে প্রহার করো যখন তারা দশম বৎসরে উপনীত হয়।এবং সাথে সাথে তাদের শয়নস্থল কে পৃথক করে দাও।(সুনানু আবি-দাউদ-৪১৮)
আল্লামা আলাউদ্দীন হাসক্বফী রাহ. দুর্রুল মুখতার-(৬/৩৮২)এ লিখেনঃ-
(ولا يجوز للرجل مضاجعة الرجل وإن كان كل واحد منهما في جانب من الفراش) قال - عليه الصلاة والسلام - «لا يفضي الرجل إلى الرجل في ثوب واحد ولا تفضي المرأة إلى المرأة في الثوب الواحد» وإذا بلغ الصبي أو الصبية عشر سنين يجب التفريق بينهما بين أخيه وأخته وأمه وأبيه في المضجع لقوله - عليه الصلاة والسلام - «وفرقوا بينهم في المضاجع وهم أبناء عشر» وفي النتف إذا بلغوا ستا كذا في المجتبى،
দু'জন পুরুষের মধ্যে শয়নস্থল এক হওয়া জায়েয হবে না(একি তোষকের নিচে)।যদিও তাদের উভয়ের অবস্থান বিছানার উভয় পার্শ্বে হোক না কেন।রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,এক তোষকের ভিতর এক পুরুষ অন্য পুরুষের সাথে শয়ন করতে পারবে না।এবং এক মহিলা অন্য মহিলার সাথেও একই তোষকের ভিতর শয়ন করতে পারবে না।যখন বালক-বালিকা দশ বৎসরে পৌছে যায়, তখন আপন ভাই-বোন,ছেলে-মা,মেয়ে-পিতার মধ্যকার শয়নস্থল কে পৃথক করে দিতে হবে।কেননা রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,সন্তান দশ বৎসরে উপনীত হয়ে গেলে তাদেরকে পৃথক শয়নস্থলের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।ফেকহী কিতাব 'আন-নুতাফ' এ বর্ণিত রয়েছে যে, সন্তান ছয় বৎসরে উপনীত হয়ে গেলে তাদের জন্য পৃথক শয়নস্থলের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।(মুজতাবা)
উক্ত ইবারতের ব্যখ্যা করতে যেয়ে মুহাম্মদ আমীন ইবনে উমর ইবনে আব্দুল আজীজ আবেদীন(ইবনে আবেদীন) শামী রাহ লিখেনঃ
(قوله مضاجعة الرجل) أي في ثوب واحد لا حاجز بينهما، وهو المفهوم من الحديث الآتي، وبه فسر الأتقاني المكامعة على خلاف ما مر عن الهداية، وهل المراد أن يلتفا في ثوب واحد أو يكون أحدهما في ثوب دون الآخر والظاهر الأول، يؤيده ما نقله عن مجمع البحار أي متجردين، وإن كان بينهما حائل، فيكره تنزيها اهـ تأمل
এক পুরুষের সাথে অপর পুরুষের একত্রে এক বিছানায় ঘুমানো নাজায়েয তখনই হবে যখন উভয় একই তোষকের ভিতর কোনো প্রকার পর্দা ব্যতীত শয়ন করবে।এ বিষয়টাই অন্য একটি হাদীস থেকে বুঝা যাচ্ছে। হ্যা যদি সমলিঙ্গের মধ্যে কাপড় ইত্যাদির দ্বারা প্রতিবন্ধকতা থাকে,তাহলে এমতাবস্থায় একই বিছানায় দু'জন পুরুষের শয়ন করা মাকরুহে তানযিহি হবে।
বিছানা পৃথক হওয়ার অর্থ এই নয় যে, প্রত্যেক সন্তানের জন্য ভিন্ন ভিন্ন রুমের ব্যবস্থা করে দিতে হবে; বরং একই রুমে ভিন্ন খাট, চকি বা ভিন্ন বিছানার ব্যবস্থা করলেও চলবে। আর যদি তাদের জন্য পৃথক পৃথক বিছানার ব্যবস্থা করা সম্ভব না হয় বরং সকলকে এক বিছানাতেই রাত্রিযাপন করতে হয় সেক্ষেত্রে এ বয়সের সন্তানদের মাঝে কোল বালিশ বা এ ধরনের কোনো কিছু দিয়ে হলেও আড়াল রাখা আবশ্যক। আর মেয়েদের বিছানা বাবা ও ছেলেদের থেকে সম্পূর্ণ পৃথক হওয়া জরুরি। এক্ষেত্রে শুধু কোল বালিশ রাখা যথেষ্ট নয়।
★মিরকাতুল মাফাতিহ গ্রন্থে আছেঃ
(وَفَرِّقُوا) : أَمْرٌ مِنَ التَّفْرِيقِ (بَيْنَهُمْ) : أَيْ: بَيْنَ الْبَنِينَ وَالْبَنَاتِ عَلَى مَا هُوَ الظَّاهِرُ، وَيُؤَيِّدُهُ مَا قَالَهُ بَعْضُ الْعُلَمَاءِ، وَيَجُوزُ لِلرَّجُلَيْنِ أَوِ الْمَرْأَتَيْنِ أَنْ يَنَامَا فِي مَضْجَعٍ وَاحِدٍ ; بِشَرْطِ أَنْ تَكُونَ عَوْرَتُهُمَا مَسْتُورَةً بِحَيْثُ يَأْمَنَانِ الْتِمَاسَ الْمُحَرَّمِ. وَقَالَ ابْنُ حَجَرٍ: بِهَذَا الْحَدِيثِ أَخَذَ أَئِمَّتُنَا فَقَالُوا: يَجِبُ أَنْ يُفَرَّقَ بَيْنَ الْإِخْوَةِ وَالْأَخَوَاتِ فَلَا يَجُوزُ حِينَئِذٍ تَمْكِينُ ابْنَيْنِ مِنَ الِاجْتِمَاعِ فِي مَضْجَعٍ وَاحِدٍ، (مرقاة المفاتيح، كتاب الصلاة، الفصل الثانى-2/257، رقم الحديث-572
সারমর্মঃ
দুইজন পুরুষ,বা দুইজন মহিলার একই বিছানায় ঘুমানোর ক্ষেত্রে শর্ত হলো তাদের সতর যেনো পুরোপুরি ঢাকা থাকে,এই পদ্ধতিতে যে হারাম স্থান (সেসব স্থান স্পর্শ করা একই লিঙ্গের অন্যের জন্য হারাম) স্পর্শ করা থেকে সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকে।
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে দু'জন মহিলার মাঝে বালিশ/কোলবালিশ রেখে একই লেপ ব্যবহার করে শোয়া যাবে।
তবে এক্ষেত্রে শর্ত হলো তাদের সতর যেনো পুরোপুরি ঢাকা থাকে,এই পদ্ধতিতে যে হারাম স্থান (সেসব স্থান স্পর্শ করা অন্য মহিলার জন্য হারাম) স্পর্শ করা থেকে সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকে।
যদি এমন নিরাপদ অবস্থা না হয়,তাহলে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরত নাজায়েজ হবে।
অন্যথায় জায়েজ হবে।