।।বিধর্মীদের সালাম, সম্মান এবং অন্যান্য।।

Question

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু, দয়া করে সব প্রশ্নের উত্তর দেন।
১. এক ফাতওয়াতে পড়েছি, অমুসলিমদের সম্মানসূচক সালাম দেয়া কুফরি। কিন্তু ব্যাপারটি আগে জানতাম না বিধায় হিন্দু যারা বয়সে বড় তাদের সালাম দিতাম। এখন সালাম না দিলে তারা বেয়াদবি মনে করতে পারে। তবুও তাদের সালাম না দেয়ার চেষ্টা করি।  কখনো বাধ্য হয়ে দিয়ে ফেললে কুফরি হবে?
২. একই ফাতওয়া তেই পড়েছি অমুসলিমদের সম্মান দেখিয়ে উস্তাদ বলা যাবে না। কিন্তু অমুসলিম শিক্ষকদের ত স্যার আর শিক্ষিকাদের ম্যাডাম বলতে হয় এতে কি সম্মান দেয়ায় কুফরি হবে?  তাহলে কি বলব?

৩. কলেজে যে বিষয় গুলো পড়ায় তাই আবার বিভিন্ন কোচিং এ পড়ানো হয়। এখন কেউ কলেজে অমনোযোগী থাকল পরে কোচিং এ সেটা পড়বে ভেবে। এর ফলে কলেজে যে বেতন দিচ্ছে সেটা কি অপচয় এর মধ্যে পড়বে? অথবা কলেজেও মনযোগ দিয়ে পড়ে আবার কোচিং ও করে এতে কি কোন অপচয় হচ্ছে? এইভাবে শিক্ষা নিলে সমস্যা আছে কি?

৪. বিধর্মীদের সাথে অন্তরংগতা নিষেধ। তবুও অমুসলিমদের বন্ধু বানালে কি কুফরি হবে না গুনাহ হবে?
৫.হুরমতে মুসাহারাত হয়েছে না হয়নি সন্দেহ থাকলে কোন সিদ্ধান্ত প্রযোজ্য?
৬. https://ifatwa.info/15173/ এই ফাতওয়ার ১ম প্রশ্ন

সাপেক্ষে বলছি, অসীম বলতে যা বুঝানো হয়েছে - যেমনঃ অসীম দূরত্ব মানে, অনেক দূর কত দূর সেটা মাপা যাচ্ছে না শুধু বোঝা যায় অনেক দূর। একই ভাবে অসীম সময় ইত্যাদি বলা যায়। যেকোনো সংখ্যা কে ০ দিয়ে ভাগ করলেই অসীম মান পাওয়া যায়। এটাতে নাজায়েজ কিছু আছে কি না?

Answer 1

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ-

(১) কোনো অমুসলিমকে সালাম দেয়া যাবে না। হ্যা বাধ্য হলে বা কাফিরের নিকট কোনো হাজত থাকলে ঐ কাফিরকে সালাম দেয়া যাবে। 

https://www.ifatwa.info/6520 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, 

আল্লামা হাসক্বফী রাহ বলেনঃ 

قال العلامة الحصكفي في الدر المختار  -ﻭﻳﺴﻠﻢ) اﻟﻤﺴﻠﻢ (ﻋﻠﻰ ﺃﻫﻞ اﻟﺬﻣﺔ) ﻟﻮ ﻟﻪ ﺣﺎﺟﺔ ﺇﻟﻴﻪ ﻭﺇﻻ ﻛﺮﻩ ﻫﻮ اﻟﺼﺤﻴﺢ ﻛﻤﺎ ﻛﺮﻩ ﻟﻠﻤﺴﻠﻢ ﻣﺼﺎﻓﺤﺔ اﻟﺬﻣﻲ ﻛﺬا ﻓﻲ ﻧﺴﺦ اﻟﺸﺎﺭﺡ ﻭﺃﻛﺜﺮ اﻟﻤﺘﻮﻥ ﺑﻠﻔﻆ ﻭﻳﺴﻠﻢ ﻓﺄﻭﻟﺘﻬﺎ ﻫﻜﺬا ﻭﻟﻜﻦ ﺑﻌﺾ ﻧﺴﺦ اﻟﻤﺘﻦ. ﻭﻻ ﻳﺴﻠﻢ ﻭﻫﻮ اﻷﺣﺴﻦ اﻷﺳﻠﻢ ﻓﺎﻓﻬﻢ

মুসলমানের বিশেষ কোনো প্রয়োজন থাকলে সে অবশ্য কোনো অমুসলিমকে আগ বাড়িয়ে সালাম প্রদাণ করতে পারবে নতুবা মাকরুহ হবে।যেমন একজন মুসলমানের জন্য অমুসলিমের সাথে মুসাফাহা করা মাকরুহ। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/6520

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

আপনি যদি বাধ্য হয়ে কোনো কাফিরকে সালাম দেন, তাহলে কোনো সমস্য হবে না। কোনো অমুসলিমকে সালাম না দিলে সে আপনাকে বে-আদাব মনে করবে, এজন্য আপনি তাকে সালাম দিতে পারবেন না। হ্যা আপনি তাকে "আস্সালামু আ'লা মান ইত্তাবা'ল হুদা" বলতে পারবেন। 

(২) অমুসলিমকে সম্মাণ প্রদর্শন করা নিষেধ । উস্তাদ যেহেতু ইসলামি পরিভাষা তাই এই শব্দ তাদের শানে ব্যবহার করা যাবে না। তবে স্যার ম্যাডাম তাদের শানে বলা যেতে পারে যদি সবাই তাদেরকে এই শব্দ দ্বারা সম্বোধন করে থাকে। 

(৩) কোচিংয়ে পড়বে ভেবে কলেজে অমনযোগী থাকা কখনো উচিৎ হবে না। বরং মূল শিক্ষা কলেজের ক্লাসেই দেয়া হয়ে থাকে। সুতরাং কলেজের ক্লাসেই মনযোগী হতে হবে। কলেজের ক্লাসে মনযোগী হওয়ার পরও আরো নতুন কিছু শিখার নিয়তে বা পাঠ সম্পর্কে আরো ভালো করে ধারণা নিতে অবশ্যই কোচিং করা যাবে। এটার অনুমোদন অবশ্যই রয়েছে। হ্যা, কলেজের ক্লাসে মনযোগী হয়ে পাঠ শিক্ষা করার পর আবার কোচিং করা কখনো উচিৎ হবে না, যদি কোচিং দ্বারা নতুন কিছু শিখা না যায়। 

(৪) অমুসলিমকে আন্তরিক বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না। 

(৫) হুরমত সাব্যস্ত হয়নি বলেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। 

(৬) আমাদের দৃষ্টিতে এতে নাজায়েযের কিছুই দেখা যাচ্ছে না।