আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+2 votes
669 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (101 points)
reshown by
আসসালামুআলাইকুম,
আমার কিছু প্রশ্ন আছে-
নামাজ:
(১)নামাজের নিষিদ্ধ সময়ে কোনো প্রকার নামাজ পড়া জায়েজ আছে কি?যেমন:কাযা বা নফল।
(২)কাযা নামাজ পড়ার সময় নিষিদ্ধ সময় শুরু হলে কি নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে? যোহরের সময় শুরু হওয়ার আনুমানিক ২-৩ মিনিট পূর্বে আমার একটা কাযা নামাজ পড়া শেষ হয়।নামাজটা কি সহিহ হয়েছে?
(৩) আর আমার জানামতে মাগরিবের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার ২৪ মিনিট পূর্বে নিষিদ্ধ সময় শুরু হয় আর ওইদিনের আছরের নামাজ না পড়লে ওই সময়ের মধ্যে হলেও পড়ে নিতে হবে।এক্ষেত্রে কি নামাজ দেরি করার শরীয়াহসম্মত কারন থাকতে হবে নাকি ইচ্ছাকৃত ভাবে দেরিতে পড়লেও নামাজ হবে?নামাজ বিলম্ব করার শরীয়াহসম্মত কারন কি কি?

জায়েজ-নাজায়েজ:
আমি শুনছি যে দ্ব্যর্থবোধক কথা নাকি মিথ্যার অন্তর্ভুক্ত না।দ্ব্যর্থবোধক কথার সংজ্ঞা কি শরীয়াহ দৃষ্টিকোণ থেকে? আর দ্ব্যর্থবোধক কথা বলা কি পাপ? মনে করেন, কোনো জিনিস কেনার আমার একাধিক নিয়ত আছে কিন্তু কেউ নিয়ত জিজ্ঞাসা করায় আমি  একটা নিয়ত উল্লেখ করলাম কিন্তু এটাও বলি নাই যে সে নিয়ত ব্যতীত আমার অন্য নিয়ত নেই। তাহলে তা কি মিথ্যা হিসেবে গণ্য হবে? নাকি দ্ব্যর্থবোধক কথা হিসেবে গণ্য হবে?

হুরমত:
হুরমত সাব্যস্ত হওয়ার জন্য কি লিঙ্গ পুরোপুরি দাঁড়ানো প্রয়োজন নাকি আংশিক দাঁড়ালে হুরমত সাব্যস্ত হবে ?

পবিত্রতা:
(৪)মশা বা মাছির রক্ত তো পাক। তো এই রক্ত কি প্রকৃতিগতভাবে পাক? অর্থাৎ এই রক্ত যদি পানির সংস্পর্শে এসে এক দিরহামের বেশিও হয় তাহলেও কি এই রক্ত পাক?
(৫) শরীয়াহসম্মতভাবে জবেহ করা হালাল পশুর প্রবাহিত রক্ত ব্যতীত বাকি রক্ত তো পাক । ফ্রিজ থেকে বরফ হওয়া মাংস বের করার পর তা পানিতে ভেজাতে হয় বা ধুয়ে নিতে হয় তখন তো পানির সাথে রক্তও প্রবাহিত হয়। তো এই পানি কি নাপাক? অর্থাৎ প্রবাহিত রক্তের ন্যায় সেই রক্ত নাপাক নাকি প্রকৃতিগতভাবে এই রক্ত পাক তাই পানিতে সেই রক্ত মিশেল পানিও পাক??
(৬)বীর্য লাগা কাপড় ট্যাপের পানির নিচে ধুই এবং নাপাকি দূর হওয়ার প্রবল ধারনা হওয়ার পর তা ভালোভাবে চেপে ফেলি।কিন্তু এরপরও ভেজা বীর্যের গন্ধ থেকে যায়।কাপড় কি পাক হয়েছে?
৭)ফ্লোর পবিত্র করার বিধান কি? আমাদের বাসায় ফ্লোরে নাপাকি পড়ে কিন্তু সেই নাপাকিকে একবার ভেজা মপ দিয়ে মুছে সেই মপ আবার পানিতে ভিজিয়ে আমার বাসার একজন সদস্য মুছে দেয়।এভাবে কি ফ্লোর পাক হয়েছে?আর ওই মপ কি নাপাক হয়ে গেছে?ওই মপ নিয়ে যাওয়ার সময় ফোটা ফোটা পানি পড়তে থাকে,সে পানি কি নাপাক?আমার বাড়ির লোকজন পবিত্রতা বিষয়ে যথেষ্ট অসচেতন।এখন এভাবে যদি ওই ফ্লোর পাক না হয় তাহলে তো পুরো বাড়ির ফ্লোর নাপাক হয়ে  যাবে।কেননা অনেক সময় সামান্য ভেজা পা নিয়ে ফ্লোরে হাঁটা হয় আবার সে ভেজা পা নিয়ে বিছানা তে বসা হয়।এভাবে নাপাকি নিয়ে নানা সমস্যা হয় আমার পরিবারের কারনে।তাহলে নামাজ আদায় করবো কীভাবে আর পবিত্র থাকবো কীভাবে?এক্ষেত্রে কি আমি মা'যুর হিসেবে গণ্য হব?

এতগুলো প্রশ্ন করার জন্য দু:খিত।আসলে অনলাইনে আমার জানামতে আপনাদের সাইটটি অনেক বেশি নির্ভরযোগ্য ও সচল তাই মাসলা গুলো এখানেই সব জিজ্ঞাসা করি। আল্লাহ আপনাদের উত্তম প্রতিদান দান করুন ।জাযাকাল্লাহ
by (59 points)
+1
একবার ভেজা মপ দিয়ে নাপাক মেঝে মুছে দেওয়ার পর সেই মপ পানিতে ভেজালে সেই পানি নাপাক হবে কী?(কোনো তথ্য বা শব্দ Sarker11 এর করা প্রশ্ন হতে নিয়েছি)
by (0 points)
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর আমারো জানা খুব প্রয়োজন!!!
by (12 points)
বাড়ির ভিতর ফ্লোরে পড়ার জন্য আলাদা সেন্ডেল ব্যবহার করতে পারেন সবসময়।  
by (590,550 points)
+1
আপনার সাথে কথা বলতে চাই, যদি আপনি পুরুষ হন। 
by (101 points)
Assalamualaikum hujur 
Ji kotha bolte paren kintu number ki ekhane dibo??? Apnar profile er WhatsApp group e ami add asi..r ami purush...

1 Answer

0 votes
by (590,550 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
নামাজ:
(১) তিন সময়ে ফরয-নফল তথা সকল প্রকার নামায পড়া মাকরুহে তাহরিমী।যথা-(১)সূর্যোদয়ের সময়(২)সূর্যাস্তের সময় (৩)সূর্য ঠিক মধ্যখানে অবস্থানের সময়।আর পাঁচ সময়ে শুধুমাত্র নফল নামায পড়া মাকরুহ।উপরোক্ত তিন সময়।(৪)সুবহে সাদিকের পর থেকে নিয়ে সূর্যোদয় পর্যন্ত।অর্থাৎ ফজরের নামাযের আগে ও পরে (৫)আছরের নামাযের পরে।(শেষোক্ত দুই সময়ে ফরয নামায পড়া মাকরুহ নয়)সুতরাং এই পাঁচ সময়ে যেকোনো প্রকার নফল নামায,চায় তাহিয়্যাতুল ওজু হোক বা তাহিয়্যাতুল মসজিদ হোক, সবই মাকরুহ।প্রথম তিন প্রকারে মাকরুহে তাহরিমীর বিধান রয়েছে।আর শেষ দুই প্রকারে প্রকাশ্যে কোথাও পাইনি।তবে যতটুকু সম্ভব মনে হচ্ছে, মাকরুহে তানযিহি-ই হবে।(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)
 
(২) তিনটি নিষিদ্ধ সময়ে কাযা নামায পড়া যাবে না। এছাড়া যে কোনো মুহুর্তে কাযা নামায পড়া যাবে। জোহরের নামাযের অনেক পূর্বে নিষিদ্ধ সময় তথা দুপুর শুরু হয়, এবং তা সর্বোচ্ছ ৭ মিনিট স্থায়ী থাকে, তাই আপনি যেহেতু জোহরের সময়ের কিছুক্ষণ পূর্বে নামায পড়েছেন, তাই আপনার নামায হয়ে যাবে। 
(৩) সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত আছরের নামায পড়া যাবে। ইচ্ছাকৃত দেড়ী করে নামায পড়া জায়েয হবে না। হ্যা, কেউ পড়লে তা অবশ্যই আদায় হবে। যে সমস্ত কাজ নামায পড়তে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে, সেগুলোই মূলত নামায দেড়ী করার কারণ সমূহের একটি। 

জায়েজ-নাজায়েজ:
ভালো নিয়তে দ্ব্যর্থবোধক কথা বলা জায়েয। আপনি বলবেন একটা শ্রুতা শুনবে একটা এবং আপনি উদ্দেশ্য নিবেন অন্যটা। 

হুরমত:
লিঙ্গ আংশিক দাড়ালেও হুরমত প্রমাণিত হয়ে যাবে। 

পবিত্রতা:
(১) মশা মাছি যদি কোনো প্রাণীর রক্তকে আহরণ না করে তাহলে তার ভিতরে কোনো রক্ত হবে না। 
(২) এই রক্তও নাপাক। 
(৩) জ্বী, কাপড় পাক হবে। 
(৪)

বিজ্ঞ আলেমে দ্বীন বিশিষ্ট ফকিহ আল্লামা সারখাসী রাহ বলেনঃ 
ثم النجاسة على نوعين: مرئية وغير مرئية، ثم المرئية لا بد من إزالة العين بالغسل، وبقاء الأثر بعد زوال العين لا يضر هكذا «قال رسول الله - صلى الله عليه وسلم - في دم الحيض حتيه ثم اقرصيه ثم اغسليه ولا يضرك بقاء الأثر» ولأن المرأة إذا خضبت يدها بالحناء النجس ثم غسلته تجوز صلاتها ولا يضرها بقاء أثر الحناء، وكان الفقيه أبو جعفر - رحمه الله تعالى - يقول بعد زوال عين النجاسة يغسل مرتين؛ لأنه التحق بنجاسة غير مرئية غسلت مرة فأما النجاسة التي هي غير مرئية فإنها تغسل ثلاثا لقوله - صلى الله عليه وسلم - «إذا استيقظ أحدكم من نومه فلا يغمس يده في الإناء حتى يغسلها ثلاثا فإنه لا يدري أين باتت يده» فلما أمر بالغسل ثلاثا في النجاسة الموهومة ففي النجاسة المحققة أولى وهذا مذهبنا 
তরজমাঃ-
নাজাসত দু-প্রকার (১)দৃশ্যমান নাজাসত (২)অদৃশ্যমান নাজাসত
★অদৃশ্যমান নাজাসত যদি কাপড় বা শরীরে লাগে তাহলে তাকে অবশ্যই দূর করতে হবে।মূল নাজাসত দূর হওয়ার পর তার আছর অবশিষ্ট থাকলে কোনো সমস্যা নেই।এভাবেই রাসূলুল্লাহ থেকে বর্ণিত হয়েছে।
রাসূলুল্লাহ সাঃ হায়েযের রক্ত সম্পর্কে বলেনঃ
"কিছু দ্বারা রক্তকে তুলে দাও,অতঃপর আঙ্গুল দ্বারা ঘষাঘষি করো  তারপর তাকে দৌত করো।তারপরও যদি তাতে আছর থাকে তাহলে কোনোপ্রকার সমস্যা হবে না।
কেননা যখন কোনো মহিলা অপবিত্র হান্না দ্বারা নিজ হাতকে রঙ্গাবে এবং তৎপরবর্তী হাতকে দুয়ে নিবে,তাহলে এমতাবস্থায় তার নামায বিশুদ্ধ হয়ে যাবে।হাতে খেযাবের রঙ্গের আছর তাতে কোনোপ্রকার ক্ষতি করবে না।
এবং ফকিহ আবু জাফর রাহ বলেনঃ
মূল নাজাসত দূর হওয়ার পর দু'বার দুয়ে নিবে কেননা এমতাবস্থায় তা অদৃশ্য নাজাসতের সামঞ্জস্য হয়ে যাচ্ছে।এজন্য আরও একবার দুয়ে নেয়া হবে।

আর অদৃশ্যমান নাজাসত কে তিনবার দৌত করতে হবে।কেননা নবীজী সাঃ বলেনঃ
যখন কেউ ঘুম থেকে জাগ্রত হবে সে যেন পাত্রে হাত না দেয়, যতক্ষণ না সে হাতকে তিনবার দৌত করবে।কেননা সে জানে না তার হাত কোথায় রাত্রিযাপন করেছে।সুতরাং যখন ধারণাকৃত নাজাসকে তিনবার দৌত করার কথা বলা হয়েছে তাই বাস্তবিক নাজাসকে অবশ্যই তিনবার দৌত করবে।এটাই আমাদের মাযহাব।
মাবসুত-সারখাসী১/৯৩

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন!
যদি নাজাসত অদৃশ্যমান হয়, তাহলে মপ দ্বারা তিনবার ধৌত করতে হবে। আর দৃশ্যমান হলে নাজাসতের আসর দূর করে নিলেই ফ্লোর পবিত্র হয়ে যাবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (590,550 points)
সংশোধন ও সংযোজন করা হয়েছে। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...