হোস্টেলে, মেসে,রুমে জামা'আত করলে যদিও জামা'আতের সাথে নামাজ আদায়ের ছওয়াব পাওয়া যাবে।
তবে বিনা ওযরে মসজিদে জামা'আতে শরিক না হয়ে এইভাবে ঘরে জামা'আতের অভ্যাস গড়ে তোলা জায়েজ নেই।
হাদীস শরীফে বিনা ওযরে মসজিদে এসে জামা'আত ছেড়ে দেওয়ার উপর কঠিন হুমকি এসেছে।
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ أَبِي جَنَابٍ، عَنْ مَغْرَاءٍ الْعَبْدِيِّ، عَنْ عَدِيِّ بْنِ ثَابِتٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ سَمِعَ الْمُنَادِيَ فَلَمْ يَمْنَعْهُ مِنَ اتِّبَاعِهِ عُذْرٌ " . قَالُوا وَمَا الْعُذْرُ قَالَ خَوْفٌ أَوْ مَرَضٌ " لَمْ تُقْبَلْ مِنْهُ الصَّلَاةُ الَّتِي صَلَّى
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি মুয়াযযিনের আযান শুনা সত্ত্বেও কোনরূপ ওজর ছাড়া (বিনা কারণে) জামা‘আতে সলাত আদায়ে বিরত থাকে তার অন্যত্র (একাকী) সলাত কবুল হবে না। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, ওজর কি? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ভয়-ভীতি অথবা অসুস্থতা।
আবূ দাঊদ ৫৫১, আল জামি‘ ৫৬৩৪, দারাকুত্বনী ১৫৫৭।
বায়হাক্বী ‘সুনানুল কুবরা’ (৩/৭৫), হাকিম (১/পৃঃ ২৪৫), দারাকুতনী (১/পৃঃ ৪২১),
وسئل الحلواني عمن یجمع بأہلہ أحیاناً، ہل ینال ثواب الجماعۃ؟ فقال لا، ویکون بدعۃ ومکروہاً بلا عذر۔ (فتح القدیر ۱؍۳۴۵)
সারমর্মঃ
হালওয়ানি রহঃ কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো যে কেহ তার পরিবার নিয়ে মাঝে মাঝেই ঘরে জামা'আত করে,সে কি জামা'আতের ছওয়াব পাবে?
তিনি বলেছিলেনঃ না, এটি বিদ'আত ও মাকরুহ হবে।
واختلف العلماء في إقامتہا في البیت، والأصح أنہا کإقامتہا في المسجد إلا في الأفضلیۃ۔ (شامي ۲؍۲۹۰ زکریا)
সারমর্মঃ
ঘরে জামা'আতের সাথে নামাজ পড়ার ব্যাপারে উলামায়ে কেরামদের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে।
ছহীহ মত হলো এটি মসজিদে জামা'আতের ন্যায়।
তবে উত্তম হলো মসজিদেই নামাজ আদায় করা।
فإذا ترکہا الکل مرۃ بلا عذر، أثموا، فتأمل۔ (شامي ۱؍۵۵۲ کراچي، ۲؍۲۸۸ زکریا)
সারমর্মঃ
কেহ যদি বিনা ওযরে প্রত্যেকবার মসজিদের জামা'আত তরক করে,তাহলে সে গুনাহগার হবে।
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
কখনো ওযর বশত ঘরে,মেসে,হোস্টেলে জামা'আত করা যাবে,কোনো সমস্যা নেই।
তবে এটিকে অভ্যাসে পরিণত করা যাবেনা।
বিনা ওযরে এমনটি করা যাবেনা।
,
মসজিদে নামাজ আদায়ের গুরুত্ব অনেক বেশি, তাই আমাদের মসজিদেই নামাজ পড়া উচিত।
মহান আল্লাহ তায়ালা সুরা বাকারার ৪৩ নং আয়াতে ইরশাদ করেনঃ
وَ اَقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ وَ اٰتُوا الزَّکٰوۃَ وَ ارۡکَعُوۡا مَعَ الرّٰکِعِیۡنَ ﴿۴۳﴾
আর তোমরা সালাত প্রতিষ্ঠা কর ও যাকাত দাও এবং রুকূ’কারীদের সাথে রুকূ কর।
এর মর্ম এই যে, সালাত আদায়কারীগণের সাথে সালাত আদায় কর। অর্থাৎ “রুকূ’কারীদের সাথে” শব্দদ্বয়ের দ্বারা জামা'আতের সাথে সালাত আদায়ের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ بَرَّادٍ الأَشْعَرِيُّ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ بُرَيْدٍ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ أَعْظَمَ النَّاسِ أَجْرًا فِي الصَّلاَةِ أَبْعَدُهُمْ إِلَيْهَا مَمْشًى فَأَبْعَدُهُمْ وَالَّذِي يَنْتَظِرُ الصَّلاَةَ حَتَّى يُصَلِّيَهَا مَعَ الإِمَامِ أَعْظَمُ أَجْرًا مِنَ الَّذِي يُصَلِّيهَا ثُمَّ يَنَامُ " . وَفِي رِوَايَةِ أَبِي كُرَيْبٍ " حَتَّى يُصَلِّيَهَا مَعَ الإِمَامِ فِي جَمَاعَةٍ " .
আবদুল্লাহ ইবনু বাররাদ আল আশ'আরী ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) ..... আবূ মূসা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যার হাঁটার পথ (অর্থাৎ- ঘর) মসজিদ থেকে বেশী দূরে সে সলাতের অধিক সাওয়াব লাভের হাকদার। আর যে ব্যক্তি সলাতের জন্য অপেক্ষা করে ইমামের সাথে (জামা'আতে) সলাত আদায় করে সে ঐ ব্যক্তির চেয়ে বেশী সাওয়াবের হাকদার যে একাকী সলাত আদায় করে ঘুমিয়ে পড়ে।
আবূ কুরায়ব-এর বর্ণনাতে "জামা'আতে ইমামের সাথে সলাত আদায় করে" কথাটি উল্লেখ করা হয়েছে। (মুসলিম শরীফ ১৩৯৯.ইসলামী ফাউন্ডেশন ১৩৮৫, ইসলামীক সেন্টার ১৩৯৭)
حَدَّثَنِي إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، أَخْبَرَنَا زَكَرِيَّاءُ بْنُ عَدِيٍّ، أَخْبَرَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، - يَعْنِي ابْنَ عَمْرٍو - عَنْ زَيْدِ بْنِ أَبِي أُنَيْسَةَ، عَنْ عَدِيِّ بْنِ ثَابِتٍ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ الأَشْجَعِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ تَطَهَّرَ فِي بَيْتِهِ ثُمَّ مَشَى إِلَى بَيْتٍ مِنْ بُيُوتِ اللَّهِ لِيَقْضِيَ فَرِيضَةً مِنْ فَرَائِضِ اللَّهِ كَانَتْ خَطْوَتَاهُ إِحْدَاهُمَا تَحُطُّ خَطِيئَةً وَالأُخْرَى تَرْفَعُ دَرَجَةً " .
ইসহাক ইবনু মানসূর (রহঃ) ..... আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি বাড়ী থেকে পাক-পবিত্র হয়ে (ওযু করে) তারপর কোন ফারয (ফরয) সলাত আদায় করার জন্য হেঁটে আল্লাহর কোন ঘরে (মাসজিদে) যায় তার প্রতিটি পদক্ষেপের একটি পাপ ঝরে পড়ে এবং অপরটিতে মর্যাদা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। (মুসলিম শরীফ ১৪০৭.ইসলামী ফাউন্ডেশন ১৩৯৩, ইসলামীক সেন্টার ১৪০৫)
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ قَالَ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ قَالَ أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُطَرِّفٍ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَنْ غَدَا إِلَى الْمَسْجِدِ وَرَاحَ أَعَدَّ اللهُ لَهُ نُزُلَهُ مِنَ الْجَنَّةِ كُلَّمَا غَدَا أَوْ رَاحَ.
আবূ হুরাইরাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সকালে বা সন্ধ্যায় যতবার মসজিদে যায়, আল্লাহ্ তা‘আলা তার জন্য জান্নাতে ততবার মেহমানদারীর ব্যবস্থা করে রাখেন। (মুসলিম ৫/৫১, হাঃ ৬৬৯, আহমাদ ১০৬১৩) (বুখারী ৬৬২.আধুনিক প্রকাশনীঃ ৬২২, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৬২৯)