আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
706 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (2 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম, জানি প্রশ্ন অনেক বড় হয়েছে, তবুও অনুরোধ কষ্ট করে উত্তর দিলে খুবই উপকৃত হবো আমি সহ অনেকেই। বিষটি হালাল/ হারাম বিষয়ে খুবই পেরেসানিতে আছি!
১।অগ্রিম মূল্য পরিশোধ করে  আমি একটা মোবাইল অর্ডার দিছি, কিন্তু বাজারে না থাকায় সে আমার টাকা ফেরত দিবে বলে আমাকে জানায়  কিন্তু আমি নতুন করে আগের টাকার সাথে আরো কিছু টাকা দিয়ে অন্য কোন মোবাইল  নেওয়ার জন্য চুক্তি করেছি,  এখানে আগের চুক্তিটি বাতিল করে নতুন চুক্তি করেছি? কেননা বাইয়ে সালাম অনুযায়ী এক পণ্যের বিপরীতে অন্য পণ্য বা বেশী টাকা নেওয়া যাবেনা,  এটা জায়েজ হবে?
২।  ডাবল টাকা ভাউচার,  যেখানে ২০ হাজার টাকার ভাউচার ১০ হাজার টাকায় কিনে অর্ধেক দামে পণ্য ক্রয়ের সুযোগ দেওয়া হয়ে থাকে,  ১৫/২০ দিন পর থেকে। এটার মেয়াদ কখনো শেষ হয়না, আমি যখন  ইচ্ছা কেনাকাটা করতে পারব, আমার ক্ষতির কোন সম্ভাবনা নেয় এখানে, কিন্তুু   টাকা নেওয়া যাবেনা সুধুমাত্র পণ্যই কেনা যাবে তাদের স্টকে থাকা নির্দিষ্ট পণ্য সেটা মোবাইল, বাইক অথবা ফ্রিজ বা টিভি ইত্যাদি। নানা ধরনের পণ্য তারা নানা ধরনের ডিসকাউন্টে বিক্রি করে যেটা সব অর্ধেক দামে তারা দিতে পারেনা যার কারণে অর্ধেক ডিসকাউন্টের পণ্য গুলা সহজ ভাবে ক্রয়ের জন্য হয়তোবা ভাউচার সিস্টেম করেছে?  পণ্যের অর্জিনাল  দামই  দেওয়া  থাকে নগদ দিয়ে ক্রয় করলে ১০ হাজার টাকা ই পড়বে কিন্তু ভাউচার কেনা থাকলে ৫ হাজার পড়বে। তবে ডেলিভারি সময়  বেশী হবে ডিসকাউন্টে ক্রয় করলে।
এভাবে ২০ হাজার টাকার ভাউচার কিনে অর্ধেক দামে শপিং করা যাবে?
৩। আমি অগ্রিম মূল্যে একটি ইকমার্স থেকে বাইক অর্ডার দিছি, তারা আমাকে শোরুম থেকে  বাইক নিতে পাঠায়,  সেখানে শোরুম বাইকটি আমার নামে লিখিতভাবে বরাদ্দ দিয়ে রসিদ তৈরি করে। এখন আমার ক্রয় করা  বাইকটি শোরুমেই রয়েছে,  আমি চাইলে রশিদটি জমা দিয়ে বাইক সাথে নিয়ে বাড়িতে আসতে পারি অথবা ইচ্ছা করলে শোরুমের কাছে বিক্রি ও করতে পারে?  এভাবে বিক্রি করা কি জায়েজ আছে?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/1536 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, 
মাজমা'উল আনহুর(২/১০৩) কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
(وَلَا) يَجُوزُ لِرَبِّ السَّلَمِ (شِرَاءُ شَيْءٍ مِنْ الْمُسْلَمِ إلَيْهِ بِرَأْسِ الْمَالِ بَعْدَ التَّقَابُلِ) فِي عَقْدِ السَّلَمِ الصَّحِيحِ بَعْدَ وُقُوعِهِ (قَبْلَ قَبْضِهِ) بِحُكْمِ الْإِقَالَةِ اسْتِحْسَانًا لِقَوْلِهِ - عَلَيْهِ السَّلَامُ - «لَا تَأْخُذْ إلَّا سَلَمَك أَوْ رَأْسَ مَالِكِ» أَيْ لَا تَأْخُذْ إلَّا مَا أَسْلَمْتَ فِيهِ حَالَ قِيَامِ الْعَقْدِ أَوْ رَأْسَ مَالِكِ بَعْدَ الِانْفِسَاخِ فَتَرَكْنَا الْقِيَاسَ عَمَلًا بِهِ لِأَنَّ النَّبِيَّ - عَلَيْهِ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ - جَعَلَ حَقَّ رَبِّ السَّلَمِ أَخْذَ الْمُسْلَمِ فِيهِ قَبْلَ الْإِقَالَةِ، وَأَخْذَ رَأْسِ الْمَالِ بَعْدَهَا، ثُمَّ لَا يَجُوزُ الِاسْتِبْدَالُ قَبْلَ الْإِقَالَةِ بِالْمُسْلَمِ فِيهِ لِئَلَّا يَصِيرَ قَابِضًا حَقَّ غَيْرِهِ فَكَذَا بَعْدَهَا بِرَأْسِ الْمَالِ.
সালাম আকদ অনুষ্টিত হওয়ার পর উক্ত সালামের হস্তান্তরিত মূল্য দ্বারা রাব্বুল মাল ভিন্ন কিছূ সেই ব্যক্তি থেকেও ক্রয় করতে পারবে না, যার সাথে সালাম অনুষ্টিত হয়েছে। কেননা রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন, হয়তো তুমি তোমার সালাম আকদের মালকে ক্রয় করো অথবা মূল্যকে গ্রহণ করো। অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাঃ এর কথার অর্থ হল, সালাম আকদ বাকী থাকাবস্থায় তুমি ঐ পণ্য ব্যতিত অন্য কিছু গ্রহণ করতে পারবেনা। আর সালাম আকদকে বাতিল করা অবস্থায় তুমি মূল্যকে গ্রহণ করতে পারবে। সালাম আকদে উল্লেখিত পণ্য মূল্যকে বদলানো যাবে না। 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
কোনো ই-কমার্চ সাইট থেকে একটি নির্দিষ্ট পণ্য ক্রয় করার পর যদি তারা পণ্য না দিয়ে রিফান্ড দিতে চায়, সেই রিফান্ডে আপনার দেয়া টাকা থেকে অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ করা জায়েয হবে না। আপনি এই অজুহাতেও নিতে পারবেন না, যে আপনি মার্কেট থেকে ঐ মডেলের একটি বাইক ক্রয় করে নিবেন। বরং আপনি হয়তো আপনার পরিশোধকৃত টাকা নিবেন নয়তো আপনি চুক্তিকৃত পণ্য গ্রহণ করবেন। 

সুতরাং হয়তো আপনি তাদের নিকট থেকে উক্ত বাইক গ্রহণ করবেন, অথবা আপনি পরিশোধকৃত টাকা গ্রহণ করবেন। 


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
(১)প্রশ্নের বিবরণ মতে ফিকহের মূলনীতির আলোকে উক্ত ক্রয় বিক্রয় জায়েয হবে।
(২)যেহেতু ভাউচার কার্ডের সময়সীমা উল্লেখ থাকে,এবং ভাউচার ক্রয় করার পর আর টাকাকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা যায় না,তাই এটা সুদ ও জুয়ার অন্তর্ভুক্ত হয়ে হারাম হবে।
রিবা বা সূদ কাকে বলে?
বর্ণিত রয়েছে  এ ব্যপারে উলামায়ে কেরামগণ একমত যে, প্রত্যেক ঐ ঋণ যা মুনাফাকে টেনে নিয়ে আসবে তাই রিবা বা সুদ হিসেবে পরিগণিত হবে।
যেমন
ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺃَﺑُﻮ ﺑَﻜْﺮٍ ﻗَﺎﻝَ : ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺣَﻔْﺺٌ، ﻋَﻦْ ﺃَﺷْﻌَﺚَ، ﻋَﻦِ ﺍﻟْﺤَﻜَﻢِ، ﻋَﻦْ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴﻢَ، ﻗَﺎﻝَ : « ﻛُﻞُّ ﻗَﺮْﺽٍ ﺟَﺮَّ ﻣَﻨْﻔَﻌَﺔً، ﻓَﻬُﻮَ ﺭِﺑًﺎ » ﻣﺼﻨﻒ ﺍﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﺷﻴﺒﺔ 
তরজমাঃ-প্রত্যেক ঐ ঋণ যা মুনাফাকে টেনে নিয়ে আসবে তাই রিবা বা সুদ। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বাহ-২০৬৯০)

মুনাফার শর্তে ঋণ দিলে তা রিবার অন্তর্ভুক্ত।তবে শর্ত ব্যতীত যদি ঋণদার ঋণ পরিশোধের সময় কিছুটা বেশী দিয়ে দিলে তা রিবার অন্তর্ভুক্ত হবে না।বরং তা বৈধ-ই হবে। জানুন-https://www.ifatwa.info/4267
 
(৩)জ্বী,আপনি যেহেতু রশিদ গ্রহণ করে নিয়েছেন,তাই এ বাইক আপনার হস্তগত হয়ে গেছে,সুতরাং এখন আপনি উক্ত বাইক ভিন্ন কারো কাছে বা শোরুম মালিকের কাছে বিক্রি করতে পারবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (597,330 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে। 
by (2 points)
আমরা রিচার্জ কার্ড বা মিনিট কার্ড বা ইন্টারনেট কার্ড কিনে থাকি সেটাও তো আর টাকাতে ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়,  এ সকল কার্ডেরও নির্দিষ্ট কিছু মেয়াদ থাকে যার ভেতর ব্যবহার করতে না পারলে কার্ডের টাকা,  মিনিট বা ইন্টারনেট শূণ্য হয়ে যায়?  এক্ষেত্রে বিধান কি হবে? এটা কি হালাল হবে? 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...