আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
130 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (65 points)
edited by
১.মেয়েদের একই সাথে বহু বিবাহ কি জায়েজ?যদি জায়েজ না হয় তবে সেই মেয়ে কি করবে যেহেতু মেয়েদের ঘরেই থাকা ফরজ এবং মেয়েরা নির্ভরশীল তার দায়ভার কে নেবে?মেয়ে যদি এতিম হয় এবং আত্মীয়স্বজঃন তেমন খোজ খবর বা গুরুত্ব দেয় না তবে সেই মেয়ের স্বামী মারা গেলে কোথায় জাবে?আর এই জামানায় মেয়েদের চাকরি মানেই পর্দাসম্ভব না কারন মুখ খোলাই লাগে। তখন একটা মেয়ে কি করবে?ইসলাম এক্ষেত্রে কি সাজেশন দেয়?

২.সালাতের মধ্যে  সেজদাহ তে জাওয়ার পর ওজু নষ্ট হয়ে গেলে কি করনীয়?

৩.নামাজের মধ্যে সন্দেহ হলো ওজু ভেঙেছে কিনা কিন্তু নামাজ ছারলো না। নামাজ শেষেে জানলো নামাজে ওজু ভেঙেছিলো তাহলে কি নামাজ পুনরায় পড়তে হবে?

৪.টেবিলে খাবার খেলে গুনাহ হবে?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
edited by
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
পুরুষদের জন্য শর্ত সাপেক্ষে একাধিক (সর্বোচ্চ চারজন) বিবাহ করা জায়েজ আছে।

মহান আল্লাহ তায়ালা সুরা নিসার ০৩ নং আয়াতে ইরশাদ করেনঃ 

وَ اِنۡ خِفۡتُمۡ اَلَّا تُقۡسِطُوۡا فِی الۡیَتٰمٰی فَانۡکِحُوۡا مَا طَابَ لَکُمۡ مِّنَ النِّسَآءِ مَثۡنٰی وَ ثُلٰثَ وَ رُبٰعَ ۚ فَاِنۡ خِفۡتُمۡ اَلَّا تَعۡدِلُوۡا فَوَاحِدَۃً اَوۡ مَا مَلَکَتۡ اَیۡمَانُکُمۡ ؕ ذٰلِکَ اَدۡنٰۤی اَلَّا تَعُوۡلُوۡا ؕ﴿۳﴾ 

আর যদি তোমরা আশংকা কর যে, ইয়াতীম মেয়েদের প্রতি সুবিচার করতে পারবে না, তবে বিয়ে করবে নারীদের মধ্যে যাকে তোমাদের ভাল লাগে, দুই, তিন বা চার; আর যদি আশংকা কর যে সুবিচার করতে পারবে না তবে একজনকেই বা তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসীকেই গ্রহণ কর। এতে পক্ষপাতিত্ব না করার সম্ভাবনা বেশী

পবিত্র কুরআনে চারজন স্ত্রীর কথা বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং সাথে সাথে এও বলে দেয়া হয়েছে যে, যদি তোমরা তাদের মধ্যে সমতা বিধান তথা ন্যায় বিচার করতে না পার, তাহলে এক স্ত্রীর উপরই নির্ভর কর। এতে বোঝা যাচ্ছে যে, একাধিক বিয়ে ঠিক তখনই বৈধ হতে পারে, যখন শরীআত মোতাবেক সবার সাথে সমান আচরণ করা হবে; তাদের সবার অধিকার সমভাবে সংরক্ষণ করা হবে।

 এ ব্যাপারে অপারগ হলে এক স্ত্রীর উপরই নির্ভর করতে হবে এবং এটাই ইসলামের নির্দেশ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একাধিক স্ত্রীর বেলায় সবার সাথে পরিপূর্ণ সমতার ব্যবহার করার ব্যাপারে বিশেষ তাকিদ দিয়েছেন এবং যারা এর খেলাফ করবে, তাদের জন্য কঠিন শাস্তির খবর দিয়েছেন। নিজের ব্যবহারিক জীবনেও তিনি এ ব্যাপারে সর্বোত্তম আদর্শ স্থাপন করে দেখিয়েছেন। এমনকি তিনি এমন বিষয়েও সমতাপূর্ণ আদর্শ স্থাপন করেছেন যে ক্ষেত্রে এর প্রয়োজন ছিল না। 

এক হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেনঃ যে ব্যক্তির দুই স্ত্রী রয়েছে, সে যদি এদের মধ্যে ব্যবহারের ক্ষেত্রে পূর্ণ সমতা ও ইনসাফ করতে না পারে, তবে কিয়ামতের ময়দানে সে এমনভাবে উঠবে যে, তার শরীরের এক পার্শ্ব অবশ হয়ে থাকবে। [আবু দাউদঃ ২১৩৩, তিরমিযীঃ ১১৪১, ইবন মাজাহঃ ১৯৬৯, আহমাদঃ ২/৪৭১]

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন,    

শরীয়তের বিধান মতে  নারীর জন্য এক সাথে একাধিক স্বামী গ্রহণ নাজায়েয। 
কোনো ভাবেই এটি জায়েজ নয়।
হ্যাঁ যদি আগের স্বামীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়,তাহলে ইদ্দতকাল পালনের পর অন্যত্রে বিবাহ বসতে পারবে।
এতে কোনো সমস্যা নেই। 

নারীর জন্য এক সাথে একাধিক স্বামী গ্রহণ নাজায়েয। 

আল্লাহ তাআলা নারীকে গর্ভ ধারণের জন্য সৃষ্টি করেছেন। পুরুষ গর্ভধারণ করে না। সুতরাং কোন নারী যদি (একাধিক পুরুষের সহবাসের পর) গর্ভধারণ করে তাহলে সন্তানের পিতৃ পরিচয় জানা যাবে না। এতে করে বংশধারায় এলোমেলো লেগে যাবে।
,
এছাড়াও ইসলামী স্কলারগন বলেছেন যে আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে সাব্যস্ত হয়েছে, এইডসের মত দুরারোগ্য ব্যাধিগুলোর প্রধান কারণ হচ্ছে- কোন নারীর একাধিক পুরুষের সাথে মিলিত হওয়া। নারীর গর্ভাশয়ে বহু রকমের বীর্য একত্রিত হওয়ার ফলে এ ধরনের দুরারোগ্য রোগের কারণ ঘটে। 

এ কারণেই তো আল্লাহ তাআলা তালাক প্রাপ্ত নারী বা যে নারীর স্বামী মারা গিয়েছে তার উপর ইদ্দত পালন করা ফরজ করেছেন। যাতে করে কিছুকাল এভাবে (সঙ্গমহীন) থাকার মাধ্যমে তার গর্ভাশয় ও এর আশপাশের স্থানগুলো আগের স্বামীর বীর্য ও সঙ্গমের আলামত থেকে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হয়ে যায়।

সুরা তালাক এর ০৪ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

وَ الّٰٓیِٴۡ یَئِسۡنَ مِنَ الۡمَحِیۡضِ مِنۡ نِّسَآئِکُمۡ اِنِ ارۡتَبۡتُمۡ فَعِدَّتُہُنَّ ثَلٰثَۃُ اَشۡہُرٍ ۙ وَّ الّٰٓیِٴۡ لَمۡ یَحِضۡنَ ؕ وَ اُولَاتُ الۡاَحۡمَالِ اَجَلُہُنَّ اَنۡ یَّضَعۡنَ حَمۡلَہُنَّ ؕ وَ مَنۡ یَّتَّقِ اللّٰہَ یَجۡعَلۡ لَّہٗ مِنۡ اَمۡرِہٖ یُسۡرًا ﴿۴﴾ 

তোমাদের যে সব স্ত্রী আর ঋতুবতী হওয়ার আশা নেই। তাদের ইদ্দত সম্পর্কে তোমরা সন্দেহ করলে তাদের ইদ্দতকাল হবে তিন মাস এবং যারা এখনো ঋতুর বয়সে পৌঁছেনি তাদেরও; আর গর্ভবতী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব পর্যন্ত। আর যে আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করে আল্লাহ্ তার জন্য তার কাজকে সহজ করে দেন।

وَ الۡمُطَلَّقٰتُ یَتَرَبَّصۡنَ بِاَنۡفُسِہِنَّ ثَلٰثَۃَ قُرُوۡٓءٍ ؕ وَ لَا یَحِلُّ لَہُنَّ اَنۡ یَّکۡتُمۡنَ مَا خَلَقَ اللّٰہُ فِیۡۤ اَرۡحَامِہِنَّ اِنۡ کُنَّ یُؤۡمِنَّ بِاللّٰہِ وَ الۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ ؕ وَ بُعُوۡلَتُہُنَّ اَحَقُّ بِرَدِّہِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ اِنۡ اَرَادُوۡۤا اِصۡلَاحًا ؕ وَ لَہُنَّ مِثۡلُ الَّذِیۡ عَلَیۡہِنَّ بِالۡمَعۡرُوۡفِ ۪ وَ لِلرِّجَالِ عَلَیۡہِنَّ دَرَجَۃٌ ؕ وَ اللّٰہُ عَزِیۡزٌ حَکِیۡمٌ ﴿۲۲۸﴾

আর তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীগণ তিন রজঃস্রাব কাল প্রতীক্ষায় থাকবে। আর তারা আল্লাহ ও আখেরাতের উপর ঈমান রাখলে তাদের গর্ভাশয়ে আল্লাহ্ যা সৃষ্টি করেছেন তা গোপন রাখা তাদের পক্ষে হালাল নয়। আর যদি তারা আপোষ-নিষ্পত্তি করতে চায় তবে এতে তাদের পুনঃ গ্রহণে তাদের স্বামীরা বেশী হকদার। আর নারীদের তেমনি ন্যায়সংগত অধিকার আছে যেমন আছে তাদের উপর পুরুষদের; আর নারীদের উপর পুরুষদের মর্যাদা আছে। আর আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
(সুরা বাকারা ২২৮)
,
★★প্রশ্নে উল্লেখিত ইয়াতিম নারীর স্বামী মারা গেলে সে তার সন্তানের কাছে যাবে।
পর্দা মেনে চাকুরী/ বিভিন্ন হালাল ইনকাম সম্ভব,সেগুলো করতে পারবে।
ইদ্দত পালনের পর অন্যত্রে বিবাহ বসতে পারে। 
 
(০২)
সাথে সাথে অযু করার জন্য নামাজ ছেড়ে দিয়ে চলে আসবে।
,
কাহারো কথাবার্তা না বলে এবং নামাজ ভঙ্গকারী কোনো কাজ না করে নামাজে এসে যোগ দিবে।
এক্ষেত্রে সেই সেজদাহ থেকেই যোগ দিতে পারবে।
,
হ্যাঁ  যদি অযু করা বা আসা যাওয়ার পথে কথাবার্তা ইত্যাদি নামাজ ভঙ্গকারী কোনো কাজ করে,তাহলে পুনরায় শুরু থেকে নামাজ আদায় করতে হবে।

আরো জানুনঃ
,
(০৩)
হ্যাঁ নামাজ পুনরায় আদায় করতে হবে। 
,
(০৪)
না,এতে গুনাহ হবেনা।        


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...