আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
550 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (20 points)
আসসালামু 'আলাইকুম, তালাক প্রসঙ্গে কিছু জানার ছিল।
১) সরীহ এবং কিনায়া তালাকের কোন কোন ক্ষেত্রে তালাকে বাইন হবে তা জানতে চাই।
২) স্বামী তালাক দিয়েছে একবার (কিনায়া)। এরপর স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার সময় সে বুঝবে কীভাবে যে তা বাইন ছিল নাকি রাজঈ?
৩) আরেকটি ব্যাপার হলো তালাকে হাসান এবং আহসানে পার্থক্যটা বোধগম্য নয়। বুঝিয়ে বললে ভালো হত।

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/2579 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছিলাম যে, নির্ভরযোগ্য ফাতাওয়া গ্রন্থ ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে উল্লেখ করা হয় যে,
তালাক তিন প্রকার।(ক)আহসান(বেশ ভালো)(খ)হাসান(ভালো)(গ)বিদআত

অতপর হাসান তালাকের ব্যখ্যায় বলা হয়,
والحسن أن يطلقها واحدة في طهر لم يجامعها فيه ثم في طهر آخر أخرى ثم في طهر آخر أخرى كذا في محيط السرخسي
তালাকে হাসান হলো, সহবাস মুক্ত তুহুরে (তুহুর হল, স্ত্রী মাসিক অবস্থা মুক্ত পবিত্রতম সময়)তালাক প্রদান করা।অতঃপর দ্বিতীয় সহবাস মুক্ত তুহুরে দ্বিতীয় তালাক দেয়া।অতঃপর তৃতীয় সহবাস মমুক্ত তুহুরে তৃতীয় তালাক প্রদান করা।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৪৮)

প্রথম ও দ্বিতীয় তালাকের পর রাজআত করা যায়।তথা ইদ্দতের ভিতর স্বামী তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে।এরজন্য কোনো আনুষ্টানিকতার প্রয়োজন নেই।
রাজআতের পদ্ধতি সম্পর্কে ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় উল্লেখ করা হয়,
الرجعة إبقاء النكاح على ما كان ما دامت في العدة كذا في التبيين وهي على ضربين: سني وبدعي (فالسني) أن يراجعها بالقول ويشهد على رجعتها شاهدين ويعلمها بذلك فإذا راجعها بالقول نحو أن يقول لها: راجعتك أو راجعت امرأتي ولم يشهد على ذلك أو أشهد ولم يعلمها بذلك فهو بدعي مخالف للسنة والرجعة صحيحة وإن راجعها بالفعل مثل أن يطأها أو يقبلها بشهوة أو ينظر إلى فرجها بشهوة فإنه يصير مراجعا عندنا إلا أنه يكره له ذلك ويستحب أن يراجعها بعد ذلك بالإشهاد كذا في الجوهرة النيرة.
রাজআত হল,ইদ্দতের ভিতরে বিয়েকে টিকিয়ে রাখা,স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা।রাজআত দুই প্রকার
(ক)সুন্নাহ সম্মত- এর ব্যখ্যা হল, কথার মাধ্যমে রাজআত করা হবে।এবং রাজআত করার সময় দুইজন সাক্ষীকে উপস্থিত রাখা হবে।এবং তাদেরকে রাজাতের বিষয় সম্পর্কে অবগত করা হবে।যখন কথার মাধ্যমে রাজআত করা হবে,তখন স্বামী বলবে-আমি তোমাকে ফিরিয়ে নিলাম,বা বলবে,আমি আমার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিলাম।
(খ)যদি দুজন সাক্ষীর অনুপস্থিতিতে বা উপস্থিত তবে তাদেরকে অবগত না করে কেউ রাজআত করে নেয়,তাহলে এটা রাজাত হবে।তবে বিদআত হবে।

যদি কেউ কথার পরিবর্তে কাজের মাধ্যমে রাজআত করে নেয়।যেমন স্বামী তার ঐ স্ত্রীর সাথে সহবাসে লিপ্ত হয়ে গেল,বা তাকে চুমু দিয়ে দিল,বা তার লজ্জাস্থানের দিকে কামভাব নিয়ে থাকিয়ে রইলো,তাহলে এমতাবস্থায়ও রাজআত হয়ে যাবে।তবে হানাফি মাযহাব মত এমনটা করা মাকরুহ।
মুস্তাহাব হল,তালাক পরবর্তী দুইজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে রাজ'আত করা।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া ১/৪৬৮)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১) সমস্ত কিনায়া তালাক দ্বারাই বায়েন তালাক পতিত হয়। আর সরিহ তালাকের সাথে শক্ত কোনো গুণ উল্লেখ করলে বায়েন তালাক পতিত হয়। যেমন স্বামী বলল আমি তোমাকে বায়েন তালাক দিচ্ছি বা বায়েনের মত শক্ত তালাক দিচ্ছি। যদি সরিহ তালাকের তালাকের শক্ত কোনো গুনাগুনকে উল্লেখ করা হয় না, তাহলে বায়েন তালাক পতিত হবে না। 

(২) স্বামী তার স্ত্রীকে বায়েন তালাক দেওয়ার পর আর সে তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে পারবে না। বরং সে নতুন বিয়ে করেই তাকেই ফিরিয়ে আনতে হবে। 

(৩)
তালাকে হাসান এবং তালাকে আহসানের মধ্যে পার্থক্য-
 (أَمَّا) الطَّلَاقُ السُّنِّيُّ فِي الْعَدَدِ وَالْوَقْتِ فَنَوْعَانِ حَسَنٌ وَأَحْسَنُ فَالْأَحْسَنُ أَنْ يُطَلِّقَ امْرَأَتَهُ وَاحِدَةً رَجْعِيَّةً فِي طُهْرٍ لَمْ يُجَامِعْهَا فِيهِ ثُمَّ يَتْرُكُهَا حَتَّى تَنْقَضِيَ عِدَّتُهَا أَوْ كَانَتْ حَامِلًا قَدْ اسْتَبَانَ حَمْلُهَا وَالْحَسَنُ أَنْ يُطَلِّقَهَا وَاحِدَةً فِي طُهْرٍ لَمْ يُجَامِعْهَا فِيهِ ثُمَّ فِي طُهْرٍ آخَرَ أُخْرَى ثُمَّ فِي طُهْرٍ آخَرَ أُخْرَى كَذَا فِي مُحِيطِ السَّرَخْسِيِّ
«الفتاوى الهندية» (1/ 348)
তালাকে আহসান হল, সহবাস মুক্ত তুহুরে (তুহুর হল, স্ত্রী মাসিক অবস্থা মুক্ত পবিত্রতম সময়)তালাক প্রদান করা।অতঃপর আর কোনো তালাক প্রদান না করা। যে পর্যন্ত না ঐ স্ত্রীর ইদ্দত খতম হয়ে যায়, এবং গর্ভবর্তী থাকলে তার গর্ভ ভুমিষ্ট হয়ে যায়। তালাকে হাসান হলো, সহবাস মুক্ত তুহুরে (তুহুর হল, স্ত্রী মাসিক অবস্থা মুক্ত পবিত্রতম সময়)তালাক প্রদান করা।অতঃপর দ্বিতীয় সহবাস মুক্ত তুহুরে দ্বিতীয় তালাক দেয়া।অতঃপর তৃতীয় সহবাস মুক্ত তুহুরে তৃতীয় তালাক প্রদান করা।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৪৮)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...